বিজ্ঞাপন

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় প্রাধান্য পেল যেসব বিষয়

January 10, 2023 | 11:33 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সোমবার (৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে আফ্রিকা মহাদেশ সফরে যাওয়ার পথে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রা বিরতি করেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং। আনুমানিক রাত ২টার পরে এই যাত্রাবিরতিতে বিমানবন্দরে তাকে সঙ্গ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ৫২ মিনিটের এই যাত্রাবিরতিতে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়ার পরে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় উঠে আসে নানা বিষয়। এর মাঝে চীনের সহযোগিতায় বাস্তবায়িত প্রকল্প, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক ফোরামে একসঙ্গে কাজ করাসহ বিভিন্ন বিষয় স্থান পায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইথিওপিয়াসহ আফ্রিকার পাঁচ দেশ সফরে যাচ্ছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সফরে বেইজিং থেকে আফ্রিকা যাওয়ার পথে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজ ঢাকায় যাত্রাবিরতি করে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পদ্মাসেতুসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ঠিকাদার হিসাবে চীনের সহযোগিতা, বিশেষ করে পদ্মাসেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পে চীনের সহায়তার বিষয়টি আলোচনায় স্থান পেয়েছে বলে জানান মোমেন।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। সুখের বিষয় যে, চীন আমাদের উন্নয়নের মহাসড়কে সম্পৃক্ত থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলোতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি, সেগুলোও তাকে বললাম।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘চীনা ঋণচুক্তির অর্থছাড়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় অর্থ সহায়তার বেশ কিছু চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু সবগুলো এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আমাদের। জবাবে আমি তাকে নিয়মিত সফরে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা হয়েছে কি না?- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘উনি বলেছেন মিয়ানমারে কিছু সমস্যা আছে। তাদের মধ্যে বেশ অসুবিধা আছে, সেই জন্য দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তবে তিনিও আশাবাদী।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, জিনিসটা যদি তাড়াতাড়ি সমাধান না হয় তাহলে তারা উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকতে পারে। তারা রাষ্ট্রহীন মানুষ, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সেজন্য তারা উগ্রপন্থা ও সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে যেতে পারে। তাতে এই পুরো অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত হবে। সে জন্য আপনারা বিশেষ উদ্যোগ নেন। যাতে এই সমস্যাটার তাড়াতাড়ি সমাধান হয়। অন্ততপক্ষে প্রক্রিয়া শুরু হয়। তিনি তাতে হ্যাঁ বলেছেন।’

সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের বাংলাদেশ ভ্রমণ বিষয়ে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছি। তার মানে এখানে অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে; ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা আছে। কেউ এগুলো হাতছাড়া করতে চায় না।’

সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এক চায়নায় বিশ্বাস করি। এটা আমাদের মূলনীতি, আমরা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলি। আমাদের সবাইকে নিয়েই চলতে হয়, আমরা টাইম টু টাইম তাদের সাপোর্ট চাইব।’

চীনের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরার কথা জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘ঘাটতি কমাতে ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গেজেটটা হয়নি বলে আামাদের ব্যবসায়ীরা এখনো সেই সুবিধা নিতে পারছেন না। আমি বলেছি, তারা ওই ঘোষণাটা (গেজেট) করে দিলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে।’

বিজ্ঞাপন

অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। তবে সেই পাল্লা চীনের দিকে অনেক বেশি ঝুঁকে আছে।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন