বিজ্ঞাপন

‘সুবিধাভোগী কম হওয়ায় এসএসসি পরীক্ষা বাতিল নয়’

May 3, 2018 | 5:56 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পাওয়া ‘সুবিধাভোগী’ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় পরীক্ষা বাতিল বা পুনরায় গ্রহণের বিপক্ষে মত দিয়েছে এ বিষয়ে গঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি।

বৃহস্পতিবার (৩ মে) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের সামনে কমিটির সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ তুলে ধরেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় ওই কমিটি।

তদন্ত কমিটি তাদের পর্যবেক্ষণে বলছে, প্রশ্নপত্র পাওয়া ‘সুবিধাভোগীর সংখ্যা’ কম হওয়ায় পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া যৌক্তিক হবে না। সব বা বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পায়নি। শুধু ক্লোজ গ্রুপে অল্প কিছুসংখ্যক পরিক্ষার্থী প্রশ্ন পেয়েছে পরীক্ষা শুরুর ২০ মিনিট বা তার কাছাকাছি সময় আগে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নগুলোর সুবিধাভোগী মাত্র ৫ হাজার। তাদের জন্য ২০ লাখ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা পুনরায় নেওয়া সমীচীন হবে না।’

বিজ্ঞাপন

কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উন্মুক্ত স্থানে কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। ১৭টি বিষয়ের মধ্যে ১২টি বিষয়ে শুধু নৈর্ব্যক্তিক অংশের ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, যা ছিল ৩০ নম্বরের। কোনো সৃজনশীল অংশের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। এসব প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কেবল  ফেসবুকের ক্লোজ গ্রুপের মাধ্যমে।

কমিটির পর্যবেক্ষণে আরও উঠে এসেছে, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা বেশিরভাগ প্রশ্ন ছিলো ভুয়া বা টেম্পারিং করে আপলোড করা। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে সব পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ বাধ্যতামূলক ছিল। ফলে যারা প্রশ্ন পেয়েছে, তারা উত্তর তৈরির জন্য সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় পেয়ে থাকতে পারে। এত স্বল্প সময়ের মধ্যে ৩০টি নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা সহজ নয়। ফলে তাদের সামগ্রিক ফলাফলে এটি খুব বেশি প্রভাব রাখতে পারে না।

বিজ্ঞাপন

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রশ্ন পাওয়া শিক্ষার্থীদের (সুবিধাভোগী) চিহ্নিত করাসহ চারটি সুপারিশ করেছে এই কমিটি। চিহ্নিত করার পর অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের ফল বাতিলসহ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।

সুপারিশে ব্যাপকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস না হওয়ার বিষয়ে আরও ব্যখ্যা দিয়ে বলা হয়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উন্মুক্তভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কয়েকটি ক্লোজ গ্রুপেই কেবল প্রশ্ন শেয়ারের ঘটনা ঘটেছে। যদিও হাতেগোনা কয়েকটি গ্রুপের ফাঁস করা প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল ছিল, যেখান থেকে কিছু প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে কমন পড়েছে। এই প্রশ্নপত্র পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই সামান্য (প্রায় ০.২৫ শতাংশ)। এই অল্প কিছু পরীক্ষার্থীর জন্য গোটা পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়াটা বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য ভোগান্তির কারণ হবে। এ কারণে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক হবে না। পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো তথ্য না থাকায় এই পরীক্ষাও বাতিলের প্রশ্ন নেই।

তদন্ত কমিটি বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনের তথ্য যাচাই করার পরামর্শও দিয়েছে। বলা হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৩০০ টাকা থেকে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করে সন্দেহজনক লেনদেনকারীদের মোবাইল নম্বরগুলো চিহ্নিত করতে হবে, তাদের পেশা যাচাই করতে হবে। এভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অর্থ লেনদেনকারী সবাইকে চিহ্নিত করা যাবে বলেও সুপারিশে বলা হয়।

সারাবাংলা/ এইচএ/এমআইএস

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

উন্মুক্তভাবে কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি : শিক্ষামন্ত্রী

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন