বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে বিতর্ক অনাকাঙ্ক্ষিত: সিইসি

February 15, 2023 | 3:38 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালৈ বলেছেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে যদি এই ধরণের অবান্তর বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়। সেটা হবে অনাকাঙ্ক্ষিত।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের চূড়ান্ত একটি রায়ে বলে দিয়েছে যে, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ঠিক তেমনি একজন অবসরপ্রাপ্ত দুদকের কমিশনার রাষ্ট্রপতি পদে কোনোভাবেই অবৈধ নয়। সেই দিক থেকে এই প্রশ্নে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বিভিন্ন ধরণের মতামত দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিটা অনাবশ্যক বা সমিচিত হবে না বলে আমি মনে করি।’

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, রাষ্টপতি নির্বাচিত হয়েছেন পরোক্ষভাবে পুরো দেশবাসীর পক্ষে, প্রত্যক্ষভাবে জাতীয় সংসদের সদস্যদের দ্বারা। যেহেতু একজন মাত্র প্রার্থী ছিলেন এবং তার দু’টি মনোনয়নপত্র ছিল। আমি সেটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখেছি এবং প্রচলিত যে আইন কানুন সংবিধান সবকিছু বিবেচনা করে দেখেছি। তার (মো. সাহাবুদ্দিন) এই পদে নির্বাচিত হতে কোনো ধরনের অযোগ্যতা নেই। আমি-আপনাদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে যদি এই ধরণের অবান্তর বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়। সেটা হবে অনাকাঙ্ক্ষিত।

বিজ্ঞাপন

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘গত ১২ তারিখে আমরা রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। সংসদের দুইজন মাননীয় সংসদ সদস্য প্রস্তাবক এবং সমর্থন করেছেন। রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ওটাতে সম্মত হয়ে তার স্টেটম্যান্ট দিয়েছেন। নিয়ম, সংবিধান, সহায়ক আইন এবং সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী আমাদেরকে এই নির্বাচনটি পরিচালনা করতে হয়। আমরা তফসিল করেছিলাম। তফসিল অনুযায়ী, ১২ তারিখে মনোনয়ন পেয়েছি। বাছাইয়ের জন্য নির্ধারিত ছিল। বাছাইয়ের কাজটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তথা নির্বাচনী কর্তা একক এবং অবিভাজ্য। এটা কমিশনের কোনো দায়িত্ব ছিল না। দায় দায়িত্ব, ভুলভ্রান্তি সবকিছুর দায়ভার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এককভাবে নিতে হবে।

সেই জন্যই যেহেতু বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপর অর্পিত একটি একক ও অবিভাজ্য দায়িত্ব অর্পিত ছিল। তাই আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাম নির্বাচনী কর্তা হিসেবে কিছু কিছু উত্থাপিত বিষয়ে বিভ্রান্তি নিরসনেরর সুবিধার্থে কিছু বক্তব্য উপস্থাপন আবশ্যক মনে করছি।’

সিইসি বলেন, ‘একটি প্রশ্ন উঠেছে যে, প্রার্থীর সাংবিধানিক বা আইনগত অযোগ্যতা রয়েছে। এটা সত্য যে দুদক আইনে ৯ ধারায় বলা হয়েছে যে, কর্মাবসানের পর কোনো কমিশনার প্রজাতন্ত্রের লাভজনক কোনো পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। এটা আছে। এটার আলোকে বিষয়টি বিবেচ্য। এতে করে অনেকে বলতে চেয়েছেন যে, রাষ্ট্রপতির পদটি একটি লাভজনক পদ।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচনী কর্তা হিসেবে ওই রায়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলাম। কারণ পরীক্ষা করার সময় যেটাকে বাছাই বলে সেটা কিন্তু একটা দায়সারা গোছের দায়িত্ব নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে, প্রার্থী যাই বলুক কমিশনারেরও দায়িত্ব আছে বাছাই করে দেখা যে, প্রার্থীর কোনো সাংবিধানিক বা আইনগত অযোগ্যতা রয়েছে কি-না।

আমরা দেখলাম প্রথমত স্পষ্টত কোনো আইনগত অযোগ্যতা নেই। এই কারণে, ৯ ধারায় (দুদক আইনের) বলেছে, কোনো লাভজনক পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। আমরা কিন্তু এখান থেকে প্রার্থীকে নিয়োগ দান করিনি। প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দান করেননি। প্রধান বিচারপতিও নিয়োগ দান করেননি। কেউ নিয়োগ দান করেননি এবং কেউ নিয়োগ দান করতে পারেন না। উনি নির্বাচিত হয়েছেন। আইন তাকে নির্বাচিত করেছে প্রচলিত প্রথা অনুসরণ করে।’

নির্বাচন এবং নিয়োগের মধ্যে যে পার্থক্য সেটা বুঝতে হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘ওনাকে লাভজনক পদে বসানো হয়েছে বা হতে যাচ্ছে, এটাকে আলোচনায় না এনে নির্বাচন এবং নিয়োগের পার্থক্যটা আমাদের বুঝতে হবে। তাকে যদি এখান থেকে নিয়োগ দান করা হতো। তাহলে সেটি অবশ্যই অবৈধ হতো। কারণ নিয়োগ দানের কর্তৃপক্ষ বা কর্তৃত্ব আমাদের নেই, কারোই নেই। যেমন আমাদের জাতীয় সংসদের সদস্যরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন না। তারা নির্বাচিত হন। সেটাই তাদের নিয়োগের সমতুল্য।’

তিনি বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদ সাহেব যখন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এই বিষয়ে রিট মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, সাহাবুদ্দীন আহমেদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পূর্ণ বৈধ। এতে কোনো অবৈধতা হয়নি। আর আলোচনায় তিনি বলেছেন, পদটি অফিস অব প্রফিট হলেও এটা অফিস অব প্রফিট ইন দ্যা সার্ভিস অব দ্যা রিপাবলিক নয়। সেখানে বিভাজন করে দেখানো হয়েছে যে, অফিস অব প্রফিট অব দ্যা ইনি দ্যা রিপাবলিক আর কোন গুলো কনস্টিটিউশনাল পদ আলাদা করে দেখা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘বিচারপতি সাহাবুদ্দীন নির্বাচিত হয়েছিলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত হননি।’

সাংবিধানিক পদে তো আপনারাও, অবসরে যাওয়ার পর আপনাদের কি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতে বাধা থাকছে? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আপনি আমাকে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে দেখেন, তখন আমি দেখবো সেটা গ্রহণ করতে পারবো কি পারবো না। আমি ওই পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবো না। আমাদের ক্ষেত্রেও বলা হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশনার যারা আছেন তাদের ক্ষেত্রে শুধু একটা অপসন আছে যে উনারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ লাভ করতে পারবেন। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কর্মাবসানের পর তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে পুনঃনিয়োগ লাভে অযোগ্য হবেন।’

সারাবাংলা/জিএস/ইআ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন