বিজ্ঞাপন

শতভাগ নিশ্চিত পদ্মাসেতু দিয়ে রেল চলবে: রেলমন্ত্রী

May 6, 2018 | 12:49 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : পদ্মাসেতু দিয়ে রেল চলাচলের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক।

রোববার ( ৬ মে) দুপুরে রেল ভবনের কনফারেন্স হলে পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ সংক্রান্ত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এখন পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগের বিষয়টিতে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।’

বিজ্ঞাপন

‘পদ্মাসেতু যেমন কল্পনা নয় বাস্তব, তেমনি এই সেতু দিয়ে রেল চলবে এটিও বাস্তব’ বলেন মন্ত্রী।

উদ্বোধনের দিন থেকেই পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলবে বলে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম দিন ট্রেন চলবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা-পাচুরিয়া-রাজবাড়ী হয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করবে।’

তিনি বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ প্রকল্প হলো পদ্মা সেতু পদ্মা রেল প্রকল্প। এর আগে রেলপথে এতবড় প্রকল্প ছিল না। যেখানে অনেক বড় বড় অ্যালিভেটেড সেতু নির্মাণ করা হবে। এমনকি কেরানীগঞ্জ স্টেশনও অ্যালিভেটেড করা হবে। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগের ফলে নতুন চারটি জেলা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। জেলাগুলো হলো- মুন্সিগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল। রেলপথ চালু হলে এসব জেলাসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সকল মানুষের উন্নয়ন হবে।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, ‘এ পথে খুব দ্রুত রেলপথের কাজ শুরু করা হবে। নতুন করে ১৪টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। ৬টি স্টেশন নবায়ন করা হবে। এ পথে চলাচলের জন্য ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হবে।’

মাওয়া-ভাঙ্গা রেলপথের কাজ শেষ করা হবে আগে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ একই সাথে কাজ চলবে ঢাকা-মাওয়া রেলপথের। তবে ঢাকা থেকে যশোর রেলপথ নির্মাণকাজ চার বছরে শেষ হবে। ভবিষ্যতে বরিশাল ও পায়রা বন্দরকে রেলপথে যুক্ত করা হবে। ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে মংলা সমুদ্র বন্দরকে এর আওতায় আনা হবে। এজন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি ২০ ভাগ অধিগ্রহণের কাজ অচিরেই শেষ হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘২১৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ কাজের জন্য চীন ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা দেবে। কাজ করবে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান। কাজ শেষ হলে ঢাকা থেকে সরাসরি গোপালগঞ্জে ট্রেন চলবে।’

এক প্রশ্নোত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘২ শতাংশ সুদে ২০ বছর মেয়াদি ঋণ দেবে চায়না। কিছু প্রক্রিয়া শেষ করে খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে রেল মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২৭ এপ্রিল। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে এ চুক্তি সম্পন্ন হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা মোট ব্যয় ধরা হয়েছে। এ চুক্তির মধ্যদিয়ে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা।

চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ঋণের শর্ত গুলো হচ্ছে, পুরো ঋণটিই হবে প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট। এ ঋণের ক্ষেত্রে চীন দেবে ৮৫ শতাংশ অর্থ আর বাংলাদেশ সরকারকে দিতে হবে ১৫ শতাংশ অর্থ। এ ঋণে সুদের হার হবে ২ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ হবে ৬ বছরের রেয়াতকালসহ ২০ বছর। ব্যবস্থাপনা ফি থাকবে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ হারে। প্রতিশ্রুতি ফি দিতে হবে শূন্য দশমিক ২৫শতাংশ হারে। সেই সঙ্গে চুক্তি কার্যকর হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যেই ব্যবস্থাপনা ফি বাবদ ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার ৮৪৩ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার দিতে হবে চীনা এক্সিম ব্যাংককে।

২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংর বাংলাদেশ সফরের সময়ই পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে অর্থায়নে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। তবে নানা কারণে পরবর্তীতে অর্থায়ন নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

আরও পড়ুন

পদ্মায় রেল সংযোগে ঋণচুক্তি সই, চীন দিচ্ছে ২৫ হাজার কোটি টাকা
পদ্মাসেতুর ৫৯, মেট্রোরেলের ১৫ ও রূপপুরের ৯৬ শতাংশ অগ্রগতি

 

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন