বিজ্ঞাপন

নিজের সমালোচনা আগে করুন— যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের

March 21, 2023 | 3:55 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদের ভিতরের চিত্র দেখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সমালোচনা যারা করে করুক। তবে অন্যের সমালোচনা করার আগে তারা নিজেদের সমালোচনাটা আগে করুন। সেটাই হবে যথার্থ।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে বংশালের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্কুল মাঠে আয়োজিত ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ডের ইউনিটে এই সম্মেলন হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করাসহ নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং বিচার ব্যবস্থার ওপর মানুষের অনাস্থা রয়েছে বলে ‘বাংলাদেশের ২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হঠাৎ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একটা প্রতিবেদন দেখলাম। গত নির্বাচন নাকি অবাধ হয়নি, সুষ্ঠও হয়নি। বিরোধী দলের কর্মসূচিতে নাকি আমরা বাধা দেই? নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব? আমি একটা কথা বলতে চাই। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উদ্দেশে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীর কোন দেশে গণতন্ত্র সম্পূর্ণ ক্রটিমুক্ত। আমরাও এখনও পারফেক্ট নই। আমাদের এখানে সম্পূর্ণ ক্রটি মুক্তি আমরা নই। কিন্ত যেটাকে আপনারা ক্রটিমুক্ত বলেন, সেটা যদি হতো ২০১৮’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ কি জিতত? এই সত্যাটা স্বীকার করুন।’

বিজ্ঞাপন

গণতন্ত্রের ক্রটি দেশে দেশে আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘যারা অভিযোগ করেছেন তাদের দেশেও গণতন্ত্র ক্রটিমুক্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইনকামবেন্ট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করেননি। এই কথা কি ভুলে যান? অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার আগে নিজের ঘরের খবরটা বলুন।’ এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ক্যাপিটাল হিলে দাঙ্গা বাঁধিয়ে পাঁচ জনের মৃত্যুর বিষয়টিও উদহারণ হিসেবে তুলে ধরেন।

 

কোন দেশে গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত— জানতে চান ওবায়দুল কাদের

 

বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ; স্পিকার নির্বাচন করতে ১৫ বার ভোট করতে হয়েছে। আপনারা গুম-খুন হত্যার কথা বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার কথা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিমাসে তিন চারটি ম্যাস শ্যুটিং হয়, গান অ্যাটাক হয়। কত শিশু, কত মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। এটা কি আপনাদের গণতন্ত্রের উপর শ্যুটিং নয়? এটা কি আপনাদের গণতন্ত্রের উপর আঘাত নয়? এটা কি আপনারা বন্ধ কররতে পেরেছেন? অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদের ভিতরের চিত্রটাও দেখুন। যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র কেমন আছে?’

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বলে ভোট চুরি হয়েছে। ভোট চুরি হয়ে গেছে। ভোট চুরির অপবাদ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী স্বয়ং দিয়েছেন, এখনও দিয়ে যাচ্ছেন। সেগুলো আগে থামানোর আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা তো বলছি না আমরা পারফেক্ট। আমরা ক্রটিমুক্ত করছি, ক্রমান্বয়ে রিফর্ম করেছি। আইন করেছি নির্বাচন কমিশনের। এর আগে কখনও আইন ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সাব-অর্ডিনেক্ট অফিস ছিল নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচন কমিশনকে শেখ হাসিনা আজ আইন করে স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমাদের চেষ্টা আছে। গণতন্ত্র, আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য ক্রমাগত আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এতোগুলো শান্তি সমাবেশ। আমাদের কোন মিটিং থেকে মিছিল থেকে আমরা কি বিএনপিকে বাধা দিয়েছি? একটা উদাহরণ আছে? তাহলে এই অবান্তর অভিযোগ কেন আমাদের বিরুদ্ধে দেওয়া হচ্ছে? এ অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। বিএনপির এখন কোন কাজ নেই। লবিস্ট নিয়োগ করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আজকে বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিয়ে নালিশ করাচ্ছে। এটাই হচ্ছে তাদের কাজ।’

বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশনারের বাসায় দাওয়াতে আমরাও গেছি। আমরা সাংবাদিক নিয়ে যাই নাই। আমরা প্রচার করতে যাইনি। হাইকমিশনার সৌজন্য দাওয়াত দিয়েছে আমরা গেছি নীরবে। কেউ জানেও না। তিনি দাওয়াত দিয়েছেন বন্ধু দেশের হাইকমিশনার হিসাবে। সেটাকে নিয়ে এতো প্রচার, সাংবাদিকদের খবর দিয়েছে, রেডি ছিল সব।’

বিদেশিদের কথায় বাংলাদেশের জনগণ ভোট দেবে না। বাংলাদেশের জনগণ বাংলাদেশে তাদের জন্য যারা আছে, তাদের ভাগ্য উন্নয়নে যারা কাজ করছেন তাদের পক্ষে তারা রায় দিবে। বিদেশি কারও কথায় বাংলাদেশের মানুষ কাউকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে না। বিএনপি যেন এই কথাটা বেমালুম ভুলে না যায়— বিএনপির উদ্দেশে বলেন ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দীন রানার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজাসহ যুবলীগ নেতারা।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন