বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে কানাডা

May 6, 2018 | 5:00 pm

।। এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বাস্তুচ্যুত ও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে কানাডা সরকার। ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ৪৫তম পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এই কথা জানিয়েছেন। একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে কানাডা সরকার আশ্রয় দেবে এই তথ্য জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, ‘একবার ভেবে দেখুন, নির্যাতিত এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মতো যদি আমাদের ভাই-বোন এবং আত্মীয়দের অবস্থা হতো, তবে আমরা কী করতাম। আমরা কি তাদের আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে ব্যাকুল হতাম না! রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও কানাডা সরকারের মনোভাব এমনই।’

সংকট সমাধানে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয়ে শেষ হল ওআইসি সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট এমন একটা ইস্যু, যার সমাধানে বিশ্বের সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।’

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডসহ অন্যরা

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোড়ালো করতে এবং মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতেই ওআইসি’র সম্মেলনে তিনি উপস্থিত হয়েছেন এই তথ্য জানিয়ে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্যাতিত এই জনগোষ্ঠী সুবিচার প্রত্যাশা করে। আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে, না হলে পৃথিবীতে আরো নারকীয় তাণ্ডব ঘটবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত পরিস্কার যে একদল জনগোষ্ঠী তাদের নিজেদের আবাসে ফিরে যেতে চায়। অথচ তাদের ফিরতে দেয়া হচ্ছে না। এভাবে চলতে পারে না।’

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে কানাডা সরকার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, ‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কীভাবে বিচারের আওতায় আনা যায়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। মিয়ানমার সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতেও আমরা কাজ করছি।’

মিয়ানমারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনবে ওআইসি

ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড জানান, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত বব রে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে তিন বার কক্সবাজারের একাধিক শিবির পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে এই সঙ্কট সমাধানে ১৭টি বিষয়ে প্রস্তাব করেছেন। এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে কাজ চলছে, অচিরেই তার প্রতিফলন দেখা যাবে।

মিয়ানমার বিষয়ক কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রে তার প্রস্তাব সম্পর্কে কানাডার একটি রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কানাডার এখন উচিত হবে মানবিক আর্থিক সহায়তা এবং এই খাতের উন্নয়ন ব্যয় বন্ধ করে দেয়া। বরং যারা (নির্যাতিত রোহিঙ্গা) স্বেচ্ছায় কানাডাতে আশ্রয় প্রার্থনা করবে, তাদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়া।’

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে বলেন, ‘কানাডা সরকার মিয়ানমারের বিশেষ দূত বব রে’র প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। বব রায়ের প্রস্তাবগুলো কানাডা সরকার কিভাবে বাস্তবায়ন করবে, তা শিগগিরই জানানো হবে।’

গত বছরের আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতন শুরু হলে সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বর্তমানে কক্সবাজারসহ দেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন