বিজ্ঞাপন

সংবাদমাধ্যমের আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে স্বচ্ছতা: গবেষণা

March 28, 2023 | 11:42 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সংবাদমাধ্যমের আয় বাড়াতে সহায়তা করবে স্বচ্ছতা। কারণ, ভবিষ্যতে বিজ্ঞাপনদাতারা যেসব অনলাইন সংবাদমাধ্যম স্বচ্ছতার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবে তাদের বিজ্ঞাপন দেবে বেশি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ‘অপতথ্য ঝুঁকি মূল্যায়ন: বাংলাদেশের অনলাইন সংবাদ বাজার’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। গ্লোবাল ডিসইনফরমেশন ইনডেক্স (জিডিআই) ও ডিজিটালি রাইট লিমিটেডের (ডিআরএল) উদ্যোগে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটি হয়।

অনুষ্ঠানে সারাবাংলা ডট নেটসহ দেশের ৩৩টি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ৭০০টি আধেয় বা কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে তৈরি করা গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে ডিজিটালি রাইট।

এতে জানানো হয়, বাংলাদেশের অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো অপতথ্য ছড়ানোয় মাঝারি মাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্পাদকীয় মানদণ্ডে তারা ভালো করলেও আধেয় ও পরিচালন মানদণ্ডের দিক দিয়ে তারা দুর্বল। অপতথ্য ছড়াতে থাকলে এক সময় পাঠক ওই গণমাধ্যমের ওপর আস্থা হারাবেন। এতে আয় কমে যাবে। মানুষ বিশ্বাস করবে না।

বিজ্ঞাপন

নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করা অলাভজনক সংস্থা জিডিআইয়ের সঙ্গে মিলে গবেষণাটি করেছে ডিজিটালি রাইট। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

দেশের দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ, অনলাইন পোর্টাল ও টেলিভিশন চ্যানেলের অনলাইন মাধ্যম এই গবেষণার আওতায় এসেছে। সংবাদ ও পরিচালনপদ্ধতি, অপতথ্যের ঝুঁকি এবং আধেয়র মান গবেষণার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনের ফলাফল তুলে ধরেন ডিজিটালি রাইটের প্রতিষ্ঠাতা মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘অপতথ্য ছড়ানোর ঝুঁকির ক্ষেত্রে সম্পাদকীয় সক্ষমতার দিক দিয়ে ভালো অবস্থানে আছে সংবাদমাধ্যমগুলো। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্ত গড় নম্বর ১০০ এর মধ্যে ৮৬। তবে পরিচালনগত স্বচ্ছতায় নম্বর ২৯। সব মিলিয়ে গড় নম্বর দাঁড়িয়েছে ৫৮, যা জিডিআই গবেষণা পদ্ধতিতে মাঝারি মাত্রার ঝুঁকি বলে বিবেচিত হয়।’

বিজ্ঞাপন

গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, ৩৩টির মধ্যে ১৬টি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রে অপতথ্যের ঝুঁকি ছিল উঁচুমাত্রার এবং বাকিগুলো মাঝারি মাত্রার। কোনো সংবাদমাধ্যমই খুব ভালো করেনি। আবার কোনোটি খুব খারাপ করেনি। সংবাদমাধ্যমগুলো পক্ষপাতমুক্ত, নিরপেক্ষ ও নির্ভুল সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে ভালো করেছে।

কিন্তু ২৮টি মাধ্যমের কোনো ধরনের সঠিকতার নীতি (অ্যাকুরেসি পলিসি) পাওয়া যায়নি। বেশির ভাগ মাধ্যমের ওয়েবসাইটে প্রকাশনা পরবর্তী সংশোধন, মন্তব্য সম্পাদনা, তথ্য যাচাই ও উৎসের ব্যবহারসংক্রান্ত সম্পাদকীয় নীতিমালা পাওয়া যায়নি। বিনিয়োগ ও মালিকানা কাঠামো সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য প্রকাশেও সংবাদমাধ্যমগুলো কম নম্বর পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় গবেষণায়।

গবেষণার সুপারিশ অংশে বলা হয়, জার্নালিজম ট্রাস্ট ইনিশিয়েটিভের মানদণ্ডে সাংবাদিকতার যে উত্তম চর্চার কথা বলা হয়েছে, তা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলো গ্রহণ করতে পারে।

গবেষকেরা জানান, অপতথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশসহ ২৫টি দেশে গবেষণা করেছে জিডিআই। এই গবেষণা আরও কিছু দেশে করা হবে। পরে তা দেওয়া হবে বৈশ্বিক বড় বিজ্ঞাপনদাতাদের, যাতে তারা অপতথ্য ছড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এড়িয়ে স্বচ্ছতার মানদণ্ডে ভালো করা সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে পারে।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে গ্লোবাল ডিসইনফরমেশন ইনডেক্সের গবেষণাপ্রধান তালিয়া হেগার্টি বলেন, ‘আমি আশা করি, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো অপতথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি কমাতে এবং নিজেদের স্বচ্ছ রাখতে আরও কাজ করবে। কারণ, স্বচ্ছতা আয় বাড়াবে এবং মানসম্মত সাংবাদিকতা নিশ্চিত করবে।’

অনুষ্ঠানের প্যানেল আলোচক প্রথম আলো অনলাইন (ইংরেজি) বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির বলেন, ‘কোনো সাংবাদিক যখন প্রথম যোগ দেন, তখন তাকে সম্পাদকীয় নীতি সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। সেই নীতি মেনেও চলতে হবে।’

ঢাকায় বার্তা সংস্থা এএফপির ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম বলেন, ‘অপতথ্য ছড়াতে থাকলে এক সময় পাঠক ওই গণমাধ্যমের ওপর আস্থা হারাবেন। এতে আয় কমে যাবে। মানুষ বিশ্বাস করবে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদ ও ছবির উৎস হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই ‘ইন্টারনেট’কে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সুনির্দিষ্ট সূত্র উল্লেখ করা হয় না। ইন্টারনেট কখনো সূত্র হতে পারে না। ইন্টারনেটের কোন সূত্র থেকে তথ্য ও ছবি নেওয়া হয়েছে, সেটি উল্লেখ করতে হবে।’

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন