প্রথম আলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চায় ঢাবি শিক্ষক সমিতি

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপতৎপরতার’ অভিযোগ এনে দৈনিক প্রথম আলো সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতি দাবি করে, দৈনিক প্রথম আলো ‘রাষ্ট্রকে অকার্যকর’ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) বিকেলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ সব তথ্য জানানো হয়।

গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে দৈনিক প্রথম আলোসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই শিক্ষক নেতা।

বিবৃতিতে প্রথম আলোর প্রতিবেদনটিকে সংবাদপত্রের নীতিমালা পরিপন্থী বলে দাবি করেন এই দুই শিক্ষক নেতা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘প্রতিবেদনটিতে একজন শিশুর ছবির নিচে ক্যাপশনের পরিবর্তে একজন দিনমজুরের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। যে বক্তব্যের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাপশনে একজন দিনমজুরের বক্তব্য হিসেবে মন্তব্য প্রকাশ করা হলেও ছবিতে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দেখা যায়নি। অন্য একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ওই শিশুকে তার দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে প্রলুব্ধ করে ছবিটি তোলা হয়েছিল।’

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর সংবাদ যখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হচ্ছে, তখনই প্রথম আলো সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সংকট মোকাবিলা করে যে মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সংবাদ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, সেই মুহূর্তে দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনা মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিপন্ন করার উদ্দেশে বাসন্তী নামের একজনকে জাল পরিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। উক্ত বাসন্তীকাণ্ড যে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সাজানো হয়েছিল তা পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ওই সংবাদপত্র এর আগে ২০০৭ সালে সামরিক স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে দেশকে রাজনীতিশূন্য করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল।

আইনগত ব্যবস্থা প্রসঙ্গে সরকারে উদ্যোগ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর সংবাদ প্রচারের প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় নির্দিষ্ট কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ কোনো কোনো মহল প্রচার করছে যে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সংবাদ প্রকাশ করায় সরকার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যদিও বাস্তবতা হলো, প্রকৃতপক্ষে অসৎ উদ্দেশে উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে একজন শিশুকে সংবাদের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

সারাবাংলা/আরআইআর/একে