May 7, 2018 | 10:27 pm
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নারীদের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখার জন্য এ বছর চার জনকে ‘নাসরীন স্মৃতি পদক’ দেওয়া হয়েছে। অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের প্রয়াত কান্ট্রি ডিরেক্টর নাসরীন পারভীন হকের স্মরণে প্রতিবছর এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর ছিল এই স্মৃতি পদকের দ্বাদশ আয়োজন।
সোমবার (৭ মে) রাজধানীর স্পেকট্রা কনভেনশন হলে চারটি ক্যাটাগরিতে মোট চার জনকে এই পদক দেওয়া হয়। এর মধ্যে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী বিভাগে খুলনার ভারতী বিশ্বাস, ভিন্নরূপে পুরুষ ক্যাটাগরিতে জামালপুরের বালক চন্দ্র বিশ্বাস, শিশু বিবাহ প্রতিরোধ বিভাগে কুষ্টিয়ার টিপু সুলতান এবং নারী ক্ষমতায়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশেষ পদক পেয়েছেন নওগাঁর কিশোরী তাসমিনা খাতুন।
পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে ৪০ বছর বয়সী ভারতী বিশ্বাস একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নারী। ২০১৭ সালে তার এলাকায় ঘটে যাওয়া একটি ধর্ষণের বিচারের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। ৩৯ বছর বয়সী দরিদ্র জেলে বালক চন্দ্র বিশ্বাস ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত জেলের কাজ ছাড়াও ঘর গৃহস্থালীর সব কাজ করে আসছেন। তার স্ত্রী কিডনির পাথর অপরেশনের পরে শয্যাশায়ী। তাদের দুই মেয়ে-এক ছেলের সবাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এই পরিবারের সব দায়িত্ব একা পালন করে আসছেন বালক চন্দ্র।
এদিকে, কুষ্টিয়ার ২৪ বছর বয়সী তরুণ টিপু সুলতান বন্ধু ও পরিচিতদের নিয়ে ৪০ জনের একটি দল গঠন করেছেন। এই দলটি বাল্য বিবাহ বিষয়ে সচেতনতা নিয়ে কাজ করে থাকে। টিপু সুলতানের দলের উদ্যোগে এখন পর্যন্ত সাতটি শিশু বিবাহ রোধ করা সম্ভব হয়েছে। আর নারীর ক্ষমতায়ন বিভাগে পুরস্কার পাওয়া কিশোরী তাসমিনা খাতুন ঘোড়সাওয়ার হিসেবে কাজ করে থাকে। বিভিন্ন মেলা ও প্রতিযোগিতায় সে অন্যের ঘোড়াকে জিতিয়ে দেয়।
১২তম নাসরীন স্মৃতি পদকের জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন ইউবিকোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এস এম আকবর। তিনি বলেন, নাসরীন হকের সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলাম না। তবে ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে পরিচয় লাগে না। তিনি আরও বলেন, তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রতিযোগীরা উঠে এসেছেন। তারা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিজয়ী।
নাসরীন হকের বড় বোন ও নারী অধিকারকর্মী শিরিন হক বলেন, এখন আমাদের সামাজিক চুক্তিগুলো ভেঙে গেছে। এখন মনে হয় অভিযোগ করলে কেউ শুনছে না। আজকের এই অনুষ্ঠানে পুরষ্কারপ্রাপ্তদের মনে হচ্ছে সব পুরুষ বেপরোয়া না। তাদের মধ্যেও সহানুভূতিশীলতা আছে। তারা এ সমাজ সম্পর্কে আমাদের আশা জাগায়।
অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেন, আমরা সমাজ বদলের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই চেষ্টা যত ছোটই হোক, তা সমাজ পরিবর্তনের আশা বাঁচিয়ে রাখে।
সারাবাংলা/এমএ/টিআর