বিজ্ঞাপন

ভোটের খবর প্রচারে ১০ দফা বিধিনিষেধ চায় ইসি

May 8, 2018 | 4:03 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নির্বাচন চলাকালে গণমাধ্যমকর্মীদের ভোট বুথে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ সংবাদ প্রচার ও প্রকাশে ১০ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির ১০ দফা এই প্রস্তাবনার মধ্যে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনরত কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী, পোলিং এজেন্ট বা দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার না নেওয়া এবং প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া ভোটকক্ষে প্রবেশ না করার কথাও বলা আছে।

মঙ্গলবার (৮ মে) সকালে নির্বাচনি সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ এসব নীতিমালা প্রণয়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। এ সময় তিনি এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মতামত জানতে চান। উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা এসব প্রস্তাবনার বিরোধিতা করেন।

রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত ইসি তথা নির্বাচন সংবাদ পরিবেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন। তারা বলেন, ইসির প্রস্তাবিত এই নীতিমালা মেনে চললে সঠিক নির্বাচনি সংবাদ প্রকাশ করা কঠিন হয়ে পড়বে এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য এসব নীতিমালা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।

বিজ্ঞাপন

ইসির ১০ দফার বিধিনিষেধে বলা হয়েছে প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া ভোটকক্ষে প্রবেশ করা যাবে না। অনুমতিসাপেক্ষে অল্প সময়ের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে কোনোভাবেই ভোটদানের গোপন কক্ষ বা বুথে প্রবেশ করা এবং ভেতরের কোনো ছবি বা ভিডিও ধারণ করা যাবে না। একইসাথে একাধিক সাংবাদিকের একই ভোট কক্ষে প্রবেশ এবং ভোট কক্ষের ভেতর থেকে সরাসরি সংবাদ সম্প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে ইসি। ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের ছবি বা ভিডিও ধারণেও নিষেধাজ্ঞা চায় ইসি।

ইসির প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়েছে, নির্বাচনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাজে হস্তক্ষেপ করা যাবে না; কোনো ধরনের নির্বাচনি উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করা যাবে না; নির্বাচনে প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে-বিপক্ষে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে; নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্য সংবিধান, নির্বাচনি আইন ও বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ভোটকক্ষের ভেতরে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনরত কোনো কর্মকর্তা/ কর্মচারী, পোলিং এজেন্ট বা দায়িত্বরত কর্মকর্তার কোনো সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না এবং ভোটগণনা কার্যক্রমের ছবি সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ মতবিনিময় সভায় বলেন, সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বরং নির্বাচন চলাকালে নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমরা কিছু নীতিমালা করতে চাচ্ছি। তবে সাংবাদিকদের মতামতের ওপর ভিত্তি করেই এই নীতিমালা করা হবে। তিনি আরো বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার যেহেতু কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা। ফলে তার অনুমতি নিয়ে সেখানে প্রবেশ করলে সাংবাদিকদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

বিজ্ঞাপন

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, আমরা হঠাৎ করেই জানতে পারলাম, নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। অথচ যে ছয়টি মৌজা নিয়ে রিট করা হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে একাধিকবার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, কোনো আইনি ঝামেলা নেই। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেই আলোকে আমরা তফসিল ঘোষণা করেছি।

সংবিধানের ১২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনকে অবহিত না করে আদালত কোনো নির্বাচনের বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারে না। গাজীপুরের ক্ষেত্রে এ বিধানের প্রতিফলন হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আমরা আদালত থেকে কোনো নোটিশ পাইনি। আমাদের পর্যাপ্ত  সময়ও দেওয়া হয়নি। নির্বাচন স্থগিতের পরে জানতে পারলাম, যেদিন রিট পিটিশন হয়েছে, সেদিনই শুনানি ও রায় হয়েছে। তবে আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা নির্বাচনি কার্যক্রম স্থগিত করেছি।’

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন