বিজ্ঞাপন

‘জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ’

May 14, 2023 | 5:36 pm

স্পেশাল করেপন্ডেন্ট

ঢাকা: পঁচাত্তরে নভেম্বরে তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তার হত্যার ঘটনায় জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে মামলা দায়ের সরকারের সূদূর প্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৪ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘একটা সর্বৈব মিথ্যাকে আবারও সামনে তুলে নিয়ে এসেছে ৪৮ বছর পর। এটা সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সেই উদ্দেশ্যটা হলো- জনগণ যখন গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলন শুরু করেছে, যখন মানুষ রাস্তায় বেরোনো শুরু করেছে, যখন জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়েছে সরকারের উপর, তখন এ ধরনের একটি বিষয় তুলে ধরে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। এর পেছনের রয়েছে সুদূর প্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। এটা ষড়যন্ত্রেরই অংশ বিশেষ।’

তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত রূঢ় সত্য হচ্ছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী নিশিরাতের নির্বাচনের বিনাভোটের গঠিত সংসদের একজন সদস্য নাহিদ ইজহার খান সম্ভবত তার নিজের মায়ের লেখা বইটাও পড়ে দেখেননি। যেখানে তার মা নীলুফার হুদা তার লেখা ‘কর্ণেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’ গ্রন্থে স্পষ্টভাবেই লিখে গেছেন যে, কর্নেল হুদাকে হত্যার সময় কী পরিস্থিতি ছিল। সেখানে উপস্থিত মানুষের জবানবন্দিই প্রমাণ দেয় সেদিন জিয়াউর রহমান কর্নেল নওয়াজিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন খালেদ মোশাররফ, কর্নেল নাজমুল হুদা এবং মেজর এটিএম হায়দারকে রক্ষা করার।’

বিজ্ঞাপন

‘দায়েরকৃত মামলার বাদী নাহিদ ইজহার খানের মায়ের লিখিত গ্রন্থের ১৩৪ পাতায় সুস্পষ্টভাষায় হত্যাকাণ্ডের পেছনে কর্নেল তাহের (আবু তাহের) সংশ্লিষ্টতার বিষয় উঠে এসেছে। এতে আরও উঠে এসেছে যে, কর্নেল তাহেরের নির্দেশে হত্যাকাণ্ডের চারদিন আগে থেকে কর্নেল হুদাসহ অন্যান্যদের ভারতের চর হিসেবে সেনাবাহিনীতে প্রচার করেছিল জাসদ গণবাহিনী। মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরীর একই কথা লিখেছেন বইটির ভূমিকায়’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘ইতিহাসের নির্মম পরিহাস হচ্ছে, কর্নেল হুদার মেয়ে নাহিদ ইজহার খান যিনি ফ্যাসিস্ট ভোটারবিহীন সংসদের এমপি হিসেবে তার পিতার হত্যাকারী জাসদ-গণবাহিনীর উপপ্রধান হাসানুল হক ইনু এবং কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল সংসদের এমপি হিসেবে গলা ফাটাচ্ছেন। নিজের পিতা হত্যায় হুকুমের আসামি করেছেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে, যিনি তার পিতাকে বাঁচানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি তার মায়ের লেখা গ্রন্থে অভিমান করে স্বীকার করে নিয়েছেন তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বস্তুত নাহিদ ইজহার খান জিয়াউর রহমানকে তার পিতার হুকুমদাতা হিসেবে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী গোষ্ঠীর একজন ক্রীড়নক মাত্র। এর পেছনে রয়েছে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যার প্রধান কারণ হচ্ছে, চলমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন থেকে দেশি-বিদেশি গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানো। অন্যথায়, পিতার ইতিহাস স্বীকৃত জাসদ-গণবাহিনীর জীবিত কমান্ডার ইনু গংদের বাদ দিয়ে যিনি সৈনিক-অফিসার বিরোধ নিরসনে সেনা অফিসারদের জীবনবাজী রেখে দেশের বিভিন্ন সেনা ছাউনিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন, সেই জিয়াউর রহমানকে হুকুমের আসামি করে পিতার রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করতেন না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শেখ হাসিনা ও তার কুশীলবরা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই মামলা সেই ষড়যন্ত্রের একটি উদাহরণ মাত্র। সরকারের তরফ থেকে আগামীতেও এই ধরনের ষড়যন্ত্র চলমান থাকবে। বিশেষ করে সরকার পতনের সময়কাল যত এগিয়ে আসবে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির বিরুদ্ধে এই ধরনের ষড়যন্ত্রের মাত্রা আরও বাড়বে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল ষড়যন্ত্রের জাল নস্যাৎ করে দেব।’

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মেজর জেনারেল খালেদা মোশাররফ বীর উত্তম, কর্নেল নাজমুল হুদা বীর বিক্রম ও লেফটেন্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার বীর উত্তমকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার ৪৮ বছর পর গত ১০ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি করেন কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন