বিজ্ঞাপন

টাকা পেয়েও অপহৃত ৩ বন্ধুকে খুন, জড়িত ২ রোহিঙ্গা যুবক

May 25, 2023 | 3:22 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

কক্সবাজার: টেকনাফে পাত্রী দেখতে গিয়ে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের শিকার হয় তিন বন্ধু। অবশেষে র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে ২৬ দিন পর বুধবার (২৪ মে) রাতে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে গহীন পাহাড় থেকে। এ ঘটনায় মো. শফি ও মো. আরাফাত নামে দুই রোহিঙ্গা যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের বাসিন্দা।

বিজ্ঞাপন

গত ২৮ এপ্রিল টেকনাফে ছোট ভাইয়ের বিয়ের পাত্রী দেখতে যান কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডীর মোহাম্মদ আলমের ছেলে লবণ ব্যবসায়ী জমির হোসেন ওরফে রুবেল (৩৫)। তার সঙ্গে ছিল দুই বন্ধু শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম বাহারছড়ার মৃত মোহাম্মদ কবিরের ছেলে মোহাম্মদ ইউছুপ (৩৪) এবং দুই নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ ইমরান (৩৩)।

ওইদিন বিকেলে টেকনাফ সদরের রাজারছড়া এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরদিন অপহৃত রুবেলের ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে কল দিয়ে মুক্তিপণ বাবদ ৩০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। ওই সময় গহীন পাহাড়ে তাদের বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের ভিডিও চিত্র পাঠায় স্বজনদের কাছে। আর মুক্তিপণের টাকা না দিলে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়।

এদিকে, অপহরণকারীদের চাহিদা অনুযায়ী ইমরানের পরিবার এক লাখ টাকা মুক্তিপণ পাঠায়। কিন্তু তারা ইমরানকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ইমরানসহ তিন বন্ধুকে হত্যা করে। নিহত ইমরানের বাবা জানান, তার ছেলেসহ তিন বন্ধু টেকনাফে বেড়াতে গিয়ে অপহৃত হয়। পরে অজ্ঞাত অপহরণকারীরা মুক্তিপণের মোটা অংকের টাকা দাবি করে। তখন অসহায়ত্বের কথা বলা হলে তারা এক লাখ টাকার বিনিময়ে ইমরানকে ছেড়ে দিতে সম্মত হয়। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও তাকে ছেড়ে দেয়নি। অবশেষে ইমরানসহ তিন বন্ধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

বিজ্ঞাপন

অপহরণের ঘটনায় নিহত ইমরানের বোন মিনুয়ারা বেগম বাদী হয়ে গত ১০ মে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনার তদন্তে জড়িত কয়েকজনকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। তথ্যের ভিত্তিতে গত ১২ মে কক্সবাজার শহরের একটি চা’য়ের দোকানে কর্মরত অবস্থায় মো. শফিকে এবং ওইদিন রাতে টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে মো. আরাফাতকে গ্রেফতার করে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ রাসেল জানান, পাত্রী দেখার কথা বলে তিন বন্ধুকে টেকনাফ ডেকে নিয়ে যায় গ্রেফতার শফি। এছাড়া গ্রেফতার আরেক রোহিঙ্গা যুবকের কাছে নিহত রুবেলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক কর্নেল মো. সাইফুল ইসলাম সুমন জানান, ঘটনার পর থেকে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও তদন্ত শুরু করে। এই ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেফতারের পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গহীন পাহাড়ের বিচ্ছিন্ন জায়গা থেকে তিন বন্ধুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দেওয়া তথ্যে মতে, রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরসহ টেকনাফের গহীন পাহাড়ি এলাকায় সংঘবদ্ধ কয়েকটি অপহরণকারী চক্র রয়েছে। গত ৮ মাসে টেকনাফে পাহাড়কেন্দ্রিক ৬৫ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। রোহিঙ্গা ও স্থানীয় অপরাধীদের যোগসাজশে গড়ে ওঠা এসব চক্রের কারণে টেকনাফ এখন আতঙ্কের জায়গা।

সারাবাংলা/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন