হিন্দু ধর্মীয় আইন সংস্কার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সনাতন শাস্ত্রীয় আইন পরিবর্তনের ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র মহাসংঘ, বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনসহ কয়েকটি সংগঠনের আয়োজনে এ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা ঝাড়ু মিছিল, জুতা নিক্ষেপ ও কুপুত্তলিকা দাহ করে।

সনাতন আইন পরিবর্তনের চেষ্টাকে দেশ থেকে হিন্দু শূন্য করার কৌশল উল্লেখ করে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিস্ত্রী বলেন, সনাতনী সমাজে বিয়ে কোনো চুক্তি নয়, এটা একটি পবিত্র ব্রত। এখানে দেবতাকে সাক্ষী রেখে পবিত্র দেবমন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে বর-কনে একাত্ম হয়ে যান। তাই স্ত্রীকে বলা হয় সহধর্মিণী বা অর্ধাঙ্গিনী। তারা পরিবারের সম্পদ-সম্পত্তিও যৌথভাবেই ভোগ করে থাকেন।

যুগ যুগ ধরে পবিত্র শাস্ত্রীর বিধানের ঐশীবন্ধনে সনাতনী সমাজের পরিবারগুলো শান্তিময়-ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় চলমান। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা দেবীর আসনে অধিষ্টিত এবং পারিবারিকভাবে যথেষ্ট সুরক্ষিত। কিছু এনজিওসহ একটি বিশেষ মহলের কারসাজিতে তা বিনষ্ট করার এবং বাংলাদেশকে অচিরেই হিন্দু শূন্য করার ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে। অনতিবিলম্বে এই আইন পরিবর্তনের প্রচেষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র মহাসংঘের পিযুস দাস বলেন, আইনটির পরিবর্তন করা হলে দেশের হিন্দু নারীরা পারিবারিকভাবে সুরক্ষা হারাবে, একসময় ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হবে। তাই সরকারের কাছে এই আইন বন্ধের দাবি জানাই।

মুখপাত্র সুমন কুমার রায় বলেন, হিন্দু পারিবারিক আইন শুধু আইন নয়, এটা একটা বৈদিক শাস্ত্র, যা হাজার বছর ধরে সুরক্ষিত। হিন্দু নারীদের এই সুরক্ষাকে ভেঙ্গে দিতে কিছু স্বার্থন্বেষী মহল আইন পরিবর্তনের নামে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। অনতিবিলম্বে এই ধরণের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে সরকারকে অনুরোধ জানাই।

ভক্ত সংঘ সোসাইটি বাংলাদেশ-এর পক্ষে অনিল পাল বলেন, হিন্দু আইন সনাতন শাস্ত্রীয় আইন। এই আইন স্বয়ং ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত আইন। এই আইনকে সংস্কারের নামে কিছু স্বার্থন্বেষী মহল পারিবারিক সুরক্ষা ভেঙে দিতে গাভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সনাতন কল্যান জোট-এর পক্ষে শ্যামল ঘোষ বলেন, হিন্দু আইন সংস্কারের নামে বিবাহ-বিচ্ছেদ চালুসহ পারিবারিকভাবে সুরক্ষিত হিন্দু নারীদের রাস্তায় নামাতে বাধ্য করতে দেশের বিতর্কিত কতিপয় এনজিও, কিছু দুষ্কৃতিকারীরা ষড়যন্ত্র করছে।

যে কোনো মূল্যে হিন্দু ধর্মীয় আইন সংস্কারের প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে বলে জানান সংগঠনগুলোর নেতারা।

সমাবেশে বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের সভাপতি বরুন চন্দ্র সরকার, মহাসচিব শ্যামল কান্তি নাগ, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এআই/এনইউ