বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে পাঁচ বছর পর ১৪ দলের সভা, ৩১ মে সমাবেশ

May 26, 2023 | 8:59 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ১৪ দলকে আবারও চাঙ্গা করার মিশন শুরু করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর তৎপর হয়েছেন তিনি। প্রয়াত নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর চট্টগ্রামে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে ১৪ দলীয় জোট।

বিজ্ঞাপন

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচ বছর পর শুক্রবার (২৬ মে) চট্টগ্রামে ১৪ দলের নেতারা এক সভায় মিলিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আবারও এগিয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সভায় ৩১ মে চট্টগ্রামে ১৪ দলের উদ্যোগে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ মে) বিকেলে নগরীর দারুল ফজল মার্কেটে নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ১৪ দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে খোরশেদ আলম সুজন সভাপতিত্ব করেন।

২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়। জোটের শরিক দলগুলো হচ্ছে- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এবং তৎকালীন বাম-প্রগতিশীলদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম ১১ দলীয় জোট। পরবর্তীতে অবশ্য সিপিবি, বাসদসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ১৪ দল থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু ১১ দল নামে বাকি দলগুলো জোটভুক্ত থাকে।

বিজ্ঞাপন

গঠনের পর থেকেই চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তিনি ১৪ দলকে সচল রেখেছিলেন। মহিউদ্দিনের মৃত্যুর পর চট্টগ্রামে কার্যত ১৪ দলের কোনো কার্যক্রম ছিল না। শুধুমাত্র ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর বাসায় ১৪ দলের একটি সভা হয়েছিল।

এমন অবস্থায় গত ২১ মে খোরশেদ আলম সুজনকে চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়কের দায়িত্ব দেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। পাঁচ দিনের মধ্যে তিনি শরিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবাইকে একমঞ্চে আনেন।

বিজ্ঞাপন

খোরশেদ আলম সুজন সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৪ দল আবার আগের মতো চলবে। মহিউদ্দিন ভাইয়ের মৃত্যুর পর যে গ্যাপটা তৈরি হয়েছিল, আজকের পর থেকে সেটি আর থাকবে না। আমরা এখন থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালনের বিষয়ে একমত হয়েছি। সামনে দেশ ও জাতির জন্য কঠিন পরিস্থিতি আসতে পারে। বিদেশি বিভিন্ন শক্তি যারা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা চায় না, তারা স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে এক হয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। এটা মোকাবিলায় ১৪ দলকে সক্রিয় রাখার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

খোরশেদ আলম সুজন জানান, ৩১ মে বিকেলে নগরীর লালদিঘীতে জেলা পরিষদ চত্বরে ১৪ দলের সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর জুলাই মাসজুড়ে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে গিয়ে কর্মসূচি পালন করা হবে। জুলাইয়ের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় ১৪ দল নেতাদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রামে বড় আকারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।

সভায় উপস্থিত থেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘১৪ দলের মধ্যে প্রগতিশীল দল হিসেবে আমরা সবাই দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আমাদের বাইরে কিছু ধর্মীয় সংগঠন ও জোট আছে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বে বিশ্বাসী। আমার মত হচ্ছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে হবে। অনেক মসজিদের ইমাম আছেন, যারা সরকারি প্রণোদনা পাচ্ছেন। তারা আদৌ বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে কি না সেই খোঁজখবরটা আমাদের নিতে হবে। যারা সরকারি প্রণোদনার বেনিফিসিয়ারি, কিন্তু আদৌ বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না, তাদের তালিকা করতে হবে।’

সভায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘১৪ দল আমাদের একটি সম্মিলিত রাজনৈতিক শক্তি, যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী। একটা বিষয় হচ্ছে, আমাদের শরিক দলগুলো আন্দোলন কর্মসূচিতে মাঠে ততটা তৎপর নয়।’

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তব্যে ১৪ দল চট্টগ্রাম মহানগরের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম ১৪ দলের অস্তিত্ব মুছে গিয়েছিল। সেই অস্তিত্ব আবার আবিষ্কার করতে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলগুলোকে নিয়ে আবারও মাঠে নামতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রামে ১৪ দলের অস্তিত্বের পুনরুদ্ধার আজ থেকে আবারও শুরু হলো।’

মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুলের সঞ্চালনায় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, মহানগর জাসদের সভাপতি অভীক ওসমান, ওয়ার্কাস পার্টির জেলা সভাপতি আবু হানিফ, ন্যাপের গাজী আলমগীর ও ফয়জুল্লাহ মজুমদার, তরিকত ফেডারেশনের মোর্শেদ আলকাদেরী, গণআজাদী লীগের নজরুল ইসলাম আশরাফী, সাম্যবাদী দলের অমূল্য বড়ুয়া, গণতান্ত্রিক পার্টির স্বপন সেন বক্তব্য দেন।

সারাবাংলা/আরডি/আইই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন