বিজ্ঞাপন

‘অগ্নি নিরাপত্তার দুবর্লতা কাটিয়ে উঠেছে বিএম ডিপো’

June 4, 2023 | 9:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: এক বছর আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে শোকসভা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, ‘অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে বিএম ডিপোর যে দুবর্লতা ছিল, সেগুলো তারা কাটিয়ে উঠেছে।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (০৪ জুন) বিকেলে সীতাকুণ্ডে ডিপো প্রাঙ্গনে আয়োজিত শোকসভায় ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন।

গত বছরের ৪ জুন দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর সেখানে কয়েক দফা বিস্ফোরণ ঘটে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নেভানো হয়।ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে প্রথমে ৪১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া এবং ডিপো পরিষ্কারের সময় বেশ কিছু মানবদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধারের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আহত হন প্রায় দুই শতাধিক।

বিস্ফোরণের তিনদিন পর ৭ জুন রাতে সীতাকুণ্ড থানায় দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় একটি মামলা করেছিলেন ওই থানার এসআই আশরাফ সিদ্দিকী। মামলায় ডিপোর ডিজিএম (অপারেশন) নুরুল আকতার, ম্যানেজার (অ্যাডমিন) খালেদুর রহমান, সহকারী অ্যাডমিন অফিসার আব্বাস উল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) আবদুল আজিজ, কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশনের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, একই বিভাগের নজরুল ইসলাম ও জিএম (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) নাজমুল আকতার খানকে আসামি করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

১১ মাস তদন্তের পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পুলিশ বিস্ফোরণে ‘কারও দায় নেই’ মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।

নিহতদের স্মরণে শোকসভায় আব্দুল হালিম বলেন, ‘বিএম ডিপোতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর যে ফায়ার সেফটি প্ল্যান করা হয়েছে, সেটি বিশ্বমানের। ফায়ারের ডিজি মহোদয় ডিপো পরিদর্শন করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। অন্যান্য ডিপোর তুলনায় এখন বিএম ডিপোর ফায়ার সেফটি প্ল্যান অনেক বেশি কার্যকর। বিএম ডিপোর যে দূর্বলতা ছিল, সেটি তারা এখন কাটিয়ে উঠেছে।’

ডিপো কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তারা সরকারের পক্ষ থেকে এবং আপনাদের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছে। তবে যে জীবনগুলো হারিয়ে গেছে, সেগুলো টাকা দিয়ে শোধ হবে না। আমি তাদের নিয়ে কাজ করেছি। তাদের প্রতি আমার ভালোবাসা ছিল। তাদের মৃত্যু আমার জন্য অনেক কষ্টের, আপনাদের জন্যও কষ্টের। আমাদের দায়িত্ব তাদের পরিবারের পাশে থাকা। এই মহান দায়িত্ব আমাদের পাশাপাশি আপনারাও পালন করেছেন। আগামীতেও এটি অব্যাহত রাখবেন।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে নিহতদের স্মরণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ডিপো পর্যন্ত ১৪০০ মিটার সংযোগ সড়কের নাম
‘অগ্নিবীর‘ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ডিপোর মালিক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ‘বিএম ডিপোতে দুর্ঘটনায় হতাহতদের আমরা আজীবন মনে রাখবো। বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর ফায়ারের ২৭ জন কর্মী মারা গেছে। এর মধ্যে ১৩জনই এই দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আমরা নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে আজীবন থাকবো।’

স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন মঈনুল আহসান খানের সভাপতিত্বে ও ব্যবস্থাপক মো. শাকিবের সঞ্চালনায় শোকসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, গ্রুপের পরিচালক মো. শফিকুর রহমান, বিএম কনটেইনার ডিপো লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ্য মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্টে কর্নেল তৌফিক আহমদ, চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের সহকারি পরিচালক আব্দুল মালেক।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/ এনইউ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন