বিজ্ঞাপন

বিবিএসের ডিজিটাল জরিপের তথ্য নিতে মাঠে ৬১০ মাঠকর্মী

June 9, 2023 | 4:45 pm

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) থেকে ফিরে: মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়ার দক্ষিণ মেহেদী মণ্ডল এলাকায় পরিবারের কর্তা তোফাজ্জল হোসেন কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছিলেন তথ্য সংগ্রহকারী মো. হাবিবুর রহমান। এসময় তার পুরো শরীর ঘামে ভেজা। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে দীর্ঘসময় ট্যাবের মাধ্যমে তথ্য নিচ্ছিলেন। এসময় যিনি তথ্য দিচ্ছিলেন তিনিও অত্যন্ত ধৈর্য্যের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছিলেন। যেন কোনো ক্লান্তি ছুঁতে পারেনি তথ্য সংগ্রকারীকে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এমন চিত্র দেখা গেছে মাঠপর্যায়ে। ‘আর্থসামাজিক ও জনমিতি জরিপ-২০২৩’ এর আওতায় এসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

একই অবস্থা দেখা যায় ওই উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ হলদিয়া মৌজার শারমিন আক্তারের বাড়িতে। এসময় তথ্য সংগ্রহ করছিলেন মাহফুজুর রহমান। মাঠে কথা হয় মুন্সীগঞ্জের ৬ উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সুপারভাইজিং কর্মকর্তা অনামিকা ভদ্রের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিবিড় তত্ত্বাবধান করছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে কিংবা কেউ তথ্য দিয়ে সহায়তা না করলে আমরা জনপ্রতিনিধি ও প্রয়োজনে প্রশাসনের সহায়তা নিচ্ছি। তবে এরকম ঘটনা খুব বেশি ঘটছে না। মানুষ এখন অনেকটাই সচেতন।’

কথা হয় মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপপরিচালক মো. শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বড় প্রশ্নপত্র হওয়ায় তথ্য দিতে কেতউ কেউ অনীহা প্রকাশ করেন। আমাদের প্রশিক্ষিত তথ্য সংগ্রহকারীরা তাদের সঙ্গে কথা বলে ম্যানেজ করে ফেলতে পারছেন।’

বিজ্ঞাপন

এসময় ঢাকা বিভাগীয় পরিসংখ্যান অফিসার এইচ.এম. ফিরোজ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে যেন কোনোরকম গাফিলতি না থাকে। আমার বিভাগের দায়িত্বশীলদের প্রতি আমি নজর রাখছি। নিজেও মাঠে আসছি।’

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সূত্র জানায়, মাঠ থেকে একটি পরিবারের (খানার) ১৯৫ ধরনের তথ্য তুলে আনছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। ‘আর্থসামাজিক ও জনমিতি জরিপ-২০২৩’ এর আওতায় এ সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর ফলে শিগগিরই মিলবে দেশের মানুষের সামাজিক বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক এবং ভূমি সংক্রান্ত নানান হালনাগাদ তথ্য। জনশুমারি ও গৃহগণা প্রকল্পের মাধ্যমে এ জরিপটি পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিবিএসের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল জরিপ হিসেবে মানসম্মত ও নির্ভূল তথ্য তুলে আনার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে ২১ মে থেকে। চলবে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত। প্রচণ্ড গরম ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপক্ষো করে ট্যাবের মাধ্যমে নির্ধারিত বাড়িতে গিয়ে দীর্ঘ সময় নিয়ে কাজ করছেন  ৬১০ জন তথ্য সংগ্রহকারী। তথ্য প্রদানকারীর বাড়ি থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে ঢাকায় প্রধান কার্যালয় পর্যন্ত দেখা যায় নিবিড় তত্ত্বাবধান কার্যক্রম। পুরোটাই হচ্ছে সরাসরি ও প্রযুক্তির সহায়তায়।

বিজ্ঞাপন

জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পে ডিপিডি প্রতীক ভট্টাচার্য এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম সরকারের সঙ্গেও কথা হয়। তারা জানান, সারাদশের ১২ হাজার ৪০টি নির্বাচিত নমুনা এলাকা থেকে তথ্য আনা হচ্ছে। এ সব এলাকার প্রায় ৩ লাখ ১ হাজার খানা বা পরিবার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ জরিপের মাধ্যমে ১৩টি বিষয় ভিত্তিক মডিউলের আওতায় ১২১টি প্রশ্নের মাধ্যমে মোট ১৯৫টি সূচকের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। মডিউলগুলো হলো, খানার পরিচিতি, গৃহখানা, ব্যক্তি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যাংকিং সুবিধা, জন্ম, মৃত্যু বিবাহ, অভ্যন্তরীণ অভিবাসন, বিদেশ ফেরত সদস্য, আন্তজার্তিক অভিবাসন এবং পরিবারের সম্পদ সংক্রান্ত।

জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পে পরিচালক মো. দিলদার হোসেন সকালে ঘুরে ঘুরে দেখান পরিসংখ্যান ব্যুরো কার্যালয়ে স্থাপিত নেটওয়ার্ক অপারেশন স্টেন্টার (নক) থেকে কীভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কার্যক্রম মনিটরিং করা হচ্ছে। এখনও বিশাল স্কিনের মাধ্যমে ইচ্ছেমতো দেশের যে কোনো স্থানের তথ্যসংগ্রহকারীরর অবস্থানসহ তার সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছে।

এদিকে আইসিআর রুমে কাজ করছে শতাধিক কর্মী। তারা মাঠ থেকে পাঠানো তথ্য তাৎক্ষনিক যাচাই করছেন। সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে তথ্য সংগ্রহনকারির সঙ্গে কথা বলছেন। যেন বিশার এক কর্মষজ্ঞ চলছে। এ সময় সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘জনশুমারি থেকে ডিজিটাল শুমারির ভিত্তি স্থাপিত তয়। তবে বর্তমানের এ জরিপটি বিবিএস’র একমাত্র এবং প্রথম সম্পূর্ণ ডিজিটাল জরিপ। এখানে ভুল তথ্য তুলে আনার চান্স খুব কম।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তথ্য সংগ্রহ শেষে ৩ মাসের মধ্যেই কি-ফাউন্ডিং দেওয়া সম্ভব হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন