বিজ্ঞাপন

কেসিসি’র রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির নজরদারিতে!

May 9, 2018 | 10:22 pm

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীকে নজরদারির মধ্যে রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই রিটার্নিং কর্মকর্তা কেসিসি নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে কাজ করায় সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই- তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আওয়ামী লীগের। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রদলের ক্যাডার ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন জানিয়েছেন, এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে উপসচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তার কার্যক্রম মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন যুগ্ম সচিবকে।

জানা গেছে, আজ বুধবার (৯ মে) বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে সাক্ষাৎ করে। এ সময় তারা কেসিসি নির্বাচনে দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে ধরেন। পরে এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের জানান, ওই কর্মকর্তার কার্যক্রম নজরদারির জন্য আরেক কর্মকর্তাকে খুলনায় পাঠিয়েছে ইসি।

এইচটি ইমাম বলেন, খুলনার রিটার্নিং অফিসারের কার্যক্রম অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট এবং তার নেওয়া সিদ্ধান্তের অনেকগুলোই আপত্তিকর। এমন একজন পক্ষপাদতদুষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। ওই কর্মকর্তা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ক্যাডার হিসেবে কাজ করছেন। এখনও তিনি সেই দলীয় আচরণই হচ্ছেন। তার কথাবার্তায় সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এইচটি ইমাম

রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্যের মেয়ের জামাই, সাংবাদিকরা এ তথ্য জানালে এইচটি ইমাম বলেন, ‘কে কার আত্মীয়, এটা বড় কথা নয়। যদি এমন হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি তার আস্থা নেই। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের চেতনাবিরোধী। তিনি নারীবিদ্বেষী, বিভিন্ন বিষয়ে আপত্তিকর কথা বলেছে।’ একটি বিশেষ সময়ে হাওয়া ভবনের ৩০০ জনের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী তার নিয়োগ হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না। তার বেশ কিছু কথাবার্তা আমরা শুনেছি। সে জন্যই আমরা চাই, তিনি যেন কোনো ধরনের দলীয় আচরণ না করেন। আমরা তার প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তার কাজের তদারকি করার কথা বলেছি।’

এইচটি ইমাম বলেন, ‘নির্বাচনি কর্মকর্তাদের কিছু ডক্যুমেন্ট প্রকাশ করতে হয় যেগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত। তাতে কোনো আপত্তি থাকলে তা সবাই জানাতে পারে। কিন্তু এই কর্মকর্তা (ইউনুচ আলী) কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলেই এমন তালিকা প্রকাশ করেছিলেন। সেটি একটি দল ছাড়া আর কারো কাছে গ্রহণযোগ হয়নি। এতে প্রমাণিত হয়, তিনি কারো পক্ষে কাজ করছেন।’

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফও অভিযোগ করেন ইউনুচ আলীর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘খুলনা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তিনি কার মেয়ের জামাই, সেটি বড় কথা নয়। তিনি একটি ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিলেন।’

আওয়ামী লীগ ইউনুচ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘খুলনা রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে তাকে সহায়তা করার জন্য আরেকজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

ইসি সচিব বলেন, ‘খুলনার রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগে কোনো অভিযোগ ছিল না। তবে আমরা নিজেরাই দেখছি, খুলনায় রিটার্নিং কর্মকর্তা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। তাই অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে সহায়তা করার জন্য সিনিয়র একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে ইউনুচ আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন