বিজ্ঞাপন

সিপিডির বাজেট সংলাপে খসরুর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ পরিকল্পনামন্ত্রী

June 18, 2023 | 6:59 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত বাজেট সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘অনির্বাচিত’ সরকার বলায় খসরুর ওপর ক্ষুব্ধ হন এম এ মান্নান।

বিজ্ঞাপন

গত ১ জুন সংসদে আওয়ামী লীগ সরকারের চলতি মেয়াদের শেষ বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এ নিয়ে রোববার (১৮ জুন) রাজধানীর হোটেল লেক শো’রে সংলাপের আয়োজন করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি। এই সংলাপে সরকারের পক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অপরদিকে বিরোধী দলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এতে আরও অতিথি ছিলেন পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইংরেজি দৈনিক ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, শ্রমিক নেত্রী ও আলোচিত্রী তাসলিমা আখতার, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সামি সাত্তার, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম প্রমুখ।

সংলাপে অংশ নিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাজেট তো জনগণের জন্য দিতে হয়। এখন বাজেট কারা দিচ্ছে, কী দিচ্ছে— সেটি বড় বিষয়। অনির্বাচিত সরকার বাজেট দেওয়ায় জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। আপনি যখন অনির্বাচিত থাকবেন তখন এর প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে। এখন চলছে পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি ও অর্থনীতি। তাদের ইন্টারেস্ট গ্রুপ আছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য এবং ক্ষমতা পাওয়ার জন্য তাদের সহযোগিতা দরকার। বর্তমানে দেশে রেন্টসিকিং এর অর্থনীতি চলছে। চারদিকে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। দীর্ঘদিন ডলারের বিনিময় হার কৃত্রিমভাবে ধরে রাখায় অর্থনীতিতে আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এরইমধ্যে ৭০-৭৫ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। অর্থনীতি ইমব্যালেন্সড হয়েছে। ইলেকশন হচ্ছে একটি ভোট চুরির প্রকল্প। এর কাজ হলো ৪০ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলা দেওয়া। বিরোধীদলীয় নেত্রীকে গ্রেফতার করা। ভয়-ভীতির পরিবেশ তৈরি করা। এক্ষেত্রে প্রকল্পটি সফল। দেশের অর্থনীতি চলছে পৃষ্ঠপোষকদের কারণে। তারা অবৈধ ইনকাম করে টাকা পাচার করছে। আবার সেই টাকা ফেরত আনতে সরকার তাদের প্রণোদনা দিচ্ছে।’

এর জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘সিপিডির প্রতি প্রশ্ন রইল আমরা কি অনির্বাচিত সরকার? যদি তাই হয় তাহলে আমাকে কেন দাওয়াত দেওয়া হলো। যারা অসত্য কথা বলে অপমান করতে চায় তাদের বিষয়েও কথা বলতে হয়। আমরা যদি আইন ভঙ্গ করি তাহলে কোর্টে যান, জনগণের আদালতে যান। তা না করে বকাঝকা করবেন না। চিৎকার করে ১ হাজার লোককে রাস্তায় নামাতে পারেননি। কালকে হরতাল ডাকুন, কয়টা লোক রাস্তায় নামে দেখুন। মানুষ জানে, মানুষ উন্নয়ন চায়, গাছের চারা লাগাতে হবে। সেটি যত্ন করে বড় করলে ফল পাওয়া যায়।’

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে সামাজিক স্থিতিশীলতা না থাকলে উন্নতি সম্ভব না। মাহাথির মোহাম্মদ দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ক্ষমতায় থাকলে ভালো লাগে, লি কুয়ান ইউ সিঙ্গাপুরে ৪০ বছর ক্ষমতায় থাকলে ভালো লাগে। কিন্তু শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ১০ বছর ক্ষমতায় থাকলে দেখতে ভালো লাগে না।’

বিজ্ঞাপন

বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘ব্যারিস্টার আনিসুল হক, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও রাশেদ খান মেননসহ যারা যারা খেলতে চান মাঠে নামুন। গ্যালারিতে বসে খেলতে পারবেন না, মাঠে নামুন। যাদের মনে মিলিটারির প্রতি অনুভুতি আছে। তাদের খেয়েপরে বড় হয়েছেন। ফলে তাদের প্রতি দুর্বলতা আছে। তাদেরকে বলব সেখান থেকে রেরিয়ে আসুন।’

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের নাক, কান চোখ খোলা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বোবা-কালা নয়। আমরা ইউনিভার্সেল পেনশন ব্যবস্থা চালু করছি। এটি একটি বড় কাজ। বাংলাদেশের মতো সেক্টরাল বাজেট বিশ্বের আর কোনো দেশে হয় কি না সন্দেহ আছে। আমাদের সমন্বিত বাজেট দরকার। আমরা শিশু বাজেট চাই, মা বাজেট চাই, বাবা বাজেট চাই এবং মহিলা বাজেট চাই— এ সব অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

দেশের মূল্যস্ফীতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি বিশ্বের সবখানেই আছে। তবে দেশের ৩০ শতাংশ গরিব মানুষকে সহযোগিতা দিতে আমরা কাজ করছি। তাদেরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও চিন্তা করছেন।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন