‘ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ায় আমরা হিটেড-বুটেড হয়ে গেছি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ডেঙ্গুর ভয়াবহতা রোধে সিটি করপোরেশন ও সরকার কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি অভিযোগ তুলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “শুনলাম বিদেশ থেকে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এসে সিটি করপোরেশনে চাকরি দেয়, কী একটা পদের নাম জানি- ‘হিট অফিসার’। এখন আমরা যে হিটেড হয়ে গেলাম, আমরা এখন এই ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া-করোনা ভাইরাস- এসবে আক্রান্ত হয়ে, কোনো স্বাস্থ্য সেবা না পেয়ে ‘হিটেড-বুটেড’ হয়ে যাচ্ছি।”

শনিবার (৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ডেঙ্গু একেবারে সমস্ত বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি কিছুক্ষণ আগে আমাদের মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম সাহেবকে হাসপাতালে দেখে এলাম ১০৩/১০৪ ডিগ্রি জ্বর, প্লাটিলেট নেমে গেছে। ডাক্তাররা এখন পর্যন্ত ধরতে পারেননি এটা কি ডেঙ্গু নাকি চিকুনগুনিয়া… নাকি অন্যকিছু, নাকি করোনাভাইরাস।’

‘এই অবস্থা সারাদেশে। কালকে শুনলাম টেলিভিশনে যে, যাত্রাবাড়িতে এমন একটা ঘর নাই, বাড়ি নাই যেখানে ডেঙ্গু রোগী নাই। সিটি করপোরেশন কী করে? কলকাতা তো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। তারা যদি পারে তাহলে আমাদের দেশে যে এত ট্যাক্স আমরা দেই, এত যে কথা বলে বড় বড়’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে ১৫৩টা মামলা, ৯৬টা মামলা, ৮০টা মামল, ৯০টা মামলা আমাদের অনেক নেতা ১০ বছর যাবত জেলের মধ্যে আছেন মিথ্যা মামলায়, আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, লুতফুজ্জামান বাবর, বর্তমানে আমাদের যুব নেতা সাইফুল আলম নিবর, মোনায়েম মুন্না, এসএম জাহাঙ্গীর, গোলাম মাওলা শাহিন এসব নেতা জেলে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই একমাসে আমাদের প্রায় ৮ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেফতার করেছে সরকার। এটা গণতন্ত্রের লক্ষণ? সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন লক্ষণ? আবার ওরা বলে, আওয়ামী লীগ যখন আসে তখন নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। সেই ১৯৭২ সালে থেকে ১৯৭৩ সাল আওয়ামী লীগের সময়ে কেমন নির্বাচন হয়েছে মেনন ভাইয়ের (রাশেদ খান মেনন) কথা মনে আছে, আপনাদের মনে থাকার কথা যে, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে খন্দকার মোশতাক আহমেদকে কীভাবে নির্বাচিত করেছিল। এই ঘটনাগুলো তারা সব সময় করে। এটাই হচ্ছে তাদের বডি কেমেস্ট্রি।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বডি কেমেস্ট্রিতে গণতন্ত্র নাই। একটাই আছে সন্ত্রাস আর চুরি। আমাদের শ্রদ্বেয় বরণ্যে নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান বলেছিলেন আওয়ামী লীগের নামটাই হওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি। আর এই কথা শুনলে ওরা বলে আমার মুখে নাকি বিষ। আমার মুখে বিষ নয়, আমি যে সত্য সেই সত্য উচ্চারণ করি। বাংলাদেশের মানুষ এখন সত্য উচ্চারণ করছে, বাংলাদেশের মানুষ এই ভয়াবহ দানব মনোস্টার যারা আমাদের সমস্ত কিছুকে তছনছ করে দিয়েছে তাকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।’

এনপিপির চেয়ারপারসন ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমান, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকীসহ অনেকে।

সারাবাংলা/এজেড/এমও