বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু টানেলের টোল চূড়ান্ত (হারসহ তালিকা)

July 13, 2023 | 10:06 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য টোল হার চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ। এর আগে, সেতু বিভাগ যে টোল হার প্রস্তাব করেছিল, সেটাই অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীল কার্যালয় ঘুরে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে চূড়ান্ত হিসেবে নির্ধারণ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সেতু বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে, টানেলের মধ্য দিয়ে যেতে হলে ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার), জিপ ও পিকআপকে দিতে হবে ২০০ টাকা করে। আর মাইক্রোবাসের জন্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। ৩১ বা এর চেয়ে কম আসনের বাসের জন্য ৩০০ এবং ৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসনের জন্য ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।

টানেলে দিয়ে যেতে হলে ৫ টন পর্যন্ত ট্রাককে ৪০০ টাকা, ৫ দশমিক ১ টন থেকে ৮ টনের ট্রাককে ৫০০, ৮ দশমিক ১ টন থেকে ১১ টনের ট্রাককে ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে। তিন এক্সেলবিশিষ্ট ট্রাক-ট্রেইলরের টোল চূড়ান্ত করা হয়েছে ৮০০ টাকা। চার এক্সেলের ট্রাক-ট্রেইলরকে দিতে হবে ১০০০ টাকা। এর বেশি ওজনের ট্রাক-ট্রেইলরকে প্রতি এক্সেলের জন্য ২০০ টাকা করে অতিরিক্ত দিতে হবে। টানেল উন্মুক্ত করার দিন থেকে টোলের হার কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সেতু কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত টোলের হার গত বছরের ২০ ডিসেম্বর অনুমোদন দিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ও আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণসহ অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। তবে এখনও উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ হয়নি। গত এপ্রিলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বরে টানেল খুলে দেওয়া হতে পারে। টানেলের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশীদ সারাবাংলাকে জানান, জুনের মধ্যে প্রকল্পের ৯৭ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বরের আগেই কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে।

কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তুলতে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন টানেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। নির্মাণ কাজ করছে চীনা কোম্পানি ‘চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলে প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। একটির সঙ্গে অপর টিউবের দূরত্ব ১২ মিটারের মত। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেইন তৈরি করা হয়েছে। টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম ও প্রান্তে থাকছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এ ছাড়া ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজ রয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে।

নগরীর পতেঙ্গায় নেভাল একাডেমির পাশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় নেমে যাওয়া এই টানেল কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ-পূর্বে আনোয়ারায় সিইউএফএল ও কাফকোর মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে স্থলপথে বের হবে। ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার টানেলে দুটি টিউব দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। টানেলের উত্তরে নগরীর দিকে আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কাটগড় সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক এবং পতেঙ্গা বিচ সড়ক দিয়ে টানেলে প্রবেশ করা যাবে।

উল্লেখ্য, টানেল দিয়ে মোটর সাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্মাণকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন