বিজ্ঞাপন

আইসিটি পণ্যের রফতানি বাড়বে: আলমাস কবীর

May 12, 2018 | 4:07 am

। এমদাদুল হক তুহিন।

বিজ্ঞাপন

মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণের ফলে দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিপ্লব ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। মহাকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আকাশে উড়ে যাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সারাবাংলা ডটনেটের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সৈয়দ আলমাস কবীর সারাবাংলাকে জানান, নিজস্ব স্যাটেলাইটের গর্বিত মালিক হওয়ায় দেশে আইসিটি খাতে অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থান যেমন বাড়বে তেমনি বাড়বে আইসিটি খাতের রফতানিও। এছাড়া একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মহাকাশ নিয়ে লেখাপড়া শুরু হবে। ফলে খাতটিতে তৈরি হবে নতুন নতুন প্রকৌশলী।

আলমাস কবীর বলেন, ‘মহাকাশে আমাদের যে যাত্রা শুরু হলো তা বেশ কয়েকটি দিগন্ত খুলে দেবে। প্রথমত, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে ডাটা কমিউনিকেশন তা দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়বে। দেশে যে ২৬ লাখ শিক্ষিত বেকার রয়েছে, ইন্টারনেটের সুবিধা নিয়ে খুব সহজেই তারা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে।’

বিজ্ঞাপন

বেসিস সভাপতি বলেন, ‘দ্বিতীয়ত আমরা যে জ্ঞানভিত্তিক দক্ষ জনশক্তির কথা বলে আসছি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে দেশে তা গড়ে উঠবে। স্পেস টেকনোলজি নিয়ে লেখাপড়া শুরু হবে। আমাদের দেশে স্পেস বা এরোস্পেস নিয়ে এখনও লেখাপড়া হয় না। আগামী ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মহাকাশ নিয়ে কোর্স চালু হবে। ফলে এ খাতে নতুন নতুন প্রকৌশলীও তৈরি হবে।’

বিজ্ঞাপন

বেসিস সভাপতি সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশের বাইরে যে আমরা এত কাল আইসিটি পণ্য রফতানি করেছি, বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের বলেছি তোমরা আমাদের দেশে আসো, বিনিয়োগ করো। তখন তাদের প্রথম প্রশ্নটি ছিল, তোমাদের দেশে ইন্টারনেট ফেলিউর রেট কেমন? আমরা তখন তাদের খুব একটা ভালো উত্তর দিতে পারিনি। এখন কিন্তু কাল থেকে খুব জোর দিয়ে বলতে পারবো, ইন্টারনেটের সাবমেরিন ক্যাবল যদি কোনদিন কেটেও যায়, তাও কিন্তু বাংলাদেশ এক মিনিটের জন্য সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না। কারণ এখন আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট আছে। এতে দেশের বাইরে সুনাম (ইমেজ) বাড়বে। আমাদের ওপর তাদের আস্থা বাড়বে। এতে দেশের আইসিটি পণ্যের রফতানিও বাড়বে।’

এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ২ টা ১৪ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ প্যাড-৩৯ থেকে মহাকাশপানে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের এই স্বপ্ন। রাতেই কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে প্রস্তুতি শুরু হওয়ার তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার রাত ৩টা ৪৭ মিনিটে বঙ্গবন্ধু-১ এর যাত্রা বাতিলের পর স্পেসএক্স জানিয়েছিল শেষ মুহূর্তে গ্রাউন্ড সিস্টেমে সমস্যা দেখা দেয়ায় উৎক্ষেপণ বাতিল করা হয়। ওড়ানের জন্য রাখা রিজার্ভ ডে আজ শুক্রবার একই সময়ে ‘বঙ্গবন্ধু-১’ আবারও উৎক্ষেপণের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিটে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে করে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মহাকাশে পাড়ি জমানোর কথা ছিল। পরে সেই সময় বাড়িয়ে ৩টা ৪৭ মিনিটে নির্ধারণ করা হয়। পরে সময় আরও ১৫ মিনিট বাড়িয়ে ৪টা ২ মিনিটে উৎক্ষেপণের কথা বলা হয়। সবশেষে ৪টা ৭ মিনিটে উৎক্ষেপণের স্থগিতের কথা জানায় স্পেসএক্স।

স্পেসএক্স ওয়েবসাইটে আরো জানিয়েছে এর উৎক্ষেপণযান বা রকেট ফ্যালকন-৯ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে মহাকাশে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত অরবিট প্লটে স্থাপন করবে।

বিশেষ এই ক্ষণের স্বাক্ষী হতে গতকালের মতো ইউটিউবে, টেলিভিশনের পর্দায় চোখ ছিল বিশ্বজুড়ে বাঙালির। এ যেন স্যাটেলাইটের মহাকাশযাত্রা নয়, বাঙালির মহাকাশযাত্রা। অনেকে আবার নিজের এলাকায় টাঙানো বড় পর্দায় প্রত্যক্ষ্য করেন বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু-১’কৃত্তিম উপগ্রহের মহাকাশের পথে রওনা হওয়ার মূহুর্তটি।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৯০২ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট এক হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা বিডার্স ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় সংকুলান হয়েছে।

 

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসবি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন