বিজ্ঞাপন

‘সকালে আমেরিকাকে গালি আর বিকেলে ফুলের তোড়া’

August 4, 2023 | 7:29 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সকালে আমেরিকানদের গালি দেয় আবার বিকেলে ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির হয়। আবার যখন পরেরদিন তারা বুঝে যায়, আমেরিকানরা তাদের ভোট চুরির বিরোধী, তখন তাদের গালিও দেয়।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউড়ীর দলীয় কার্যালয়ের সামনে নূর মোহাম্মদ সড়কে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যেগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের লোকদের নাম মুখে নিতে নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমেরিকার রাষ্ট্রদূতকে ফুলের তোড়া নিয়ে, ৩২টি দাঁত দেখিয়ে কি খুশি। এসব লোকের নাম মুখে নিতে নেই। এরা পঁচে গলে ভ্রষ্ট হয়ে গেছে। এদের কোনো অস্তিত্ব নেই। একটি দেশের রাষ্ট্রদূত গেছে, এভাবে ফুলের তোড়া দিয়ে, কী হাসি খুশি, মনে হয় জীবনে আর দেখেনি। বিএনপি অফিসে কত রাষ্ট্রদূত গেছে কোনোদিন দেখছেন ফুলের তোড়া নিয়ে দাঁড়াতে।’

‘বিএনপি নাকি বিদেশিদের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাতে দেয়। আপনারা ফুলের তোড়া নিয়ে কী গলাতে গেসিলেন ওখানে? আবার বের হয়ে এসে সুখবর দিচ্ছে রাষ্ট্রদূত এটি বলেনি, ওটা বলেনি। কী আনন্দ! তাহলে কে নাক গলালো? ফুলের তোড়া নিয়ে নাক গলাতে হয়? এই হচ্ছে আপনাদের দুরবস্থা।’

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সরকার এখন জোবাইদা রহমানের পেছনে লেগেছে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘প্রথমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে মনে করেছিলেন ক্ষমতায় অব্যাহতভাবে আবার থাকবেন। তারপর তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে মনে করেছিলেন আপনাদের কাজ হয়ে গেছে। তারপরও আপনাদের সন্দেহ কাটছে না। আপনাদের ভয় কাটছে না। আপনাদের ভেতরে কম্পন শুরু হয়ে গেছে।’

‘খালেদা জিয়াকে জেলে দিয়েছেন, তারেক রহমাকে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এখন ভয় পাচ্ছেন জোবাইদা রহমান যদি বাংলাদেশে আসে আপনাদের কী অবস্থা হবে? বেগম জিয়া, তারেক রহমানের সঙ্গে পারেননি, তাই জোবাইদা রহমানের পেছনে লেগেছেন। এখন কি অপেক্ষায় শুধু জাইমা রহমান। বাংলাদেশের মানুষ তাদের অনুপস্থিতেই আপনার বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।’

আইন শৃঙ্খলাবাহিনী দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একটি অংশকে সাথে নিয়ে জনগণের লড়াইকে বন্ধ করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ সরকার। আগামী দিনগুলোতে আপনাদের জন্য কঠিন সময় আসছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। আপনাকে যেতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

‘আপনি থাকতে পারবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটিও অংশকে ব্যবহার করে থাকতে পারবেন না। সরকারি একটি অংশকে ব্যবহার করে আপনি থাকতে পারবেন না। ঢাকায় ২৮ জুলাই ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষ সমাবেশ করে একটি বার্তা দিয়েছে, শেখ হাসিনা বিদায় হও।’

‘ওই আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আওয়ামী পুলিশ বাহিনীর একটি অংশ, সরকারি একটি অংশ এবং কিছু বিচারককে নিয়ে টিকে থাকার যে চেষ্টা করছেন তা আর হবে না। আপনার সাথে বাংলাদেশের কেউ নেই। জনগণ নেই। বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনার সাথে নেই। বিশ্বের বিবেক আপনার সাথে নেই।’

আওয়ামী লীগ লুটেরা ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা লুটপাট ও হালুয়ারুটির ভাগ নিয়েছেন তারা কিছুটা লাফালাফি করছেন। হালুয়া রুটি যারা খেয়েছে তারা আরও খাওয়ার জন্য লাফালাফি করছে। এদের সংখ্যা বাংলাদেশের মানুষের এক শতাংশও হবে না। এই এক শতাংশ নিয়ে আপনি ৯৯ শতাংশ জনগণের বিরুদ্ধে টিকে থাকবেন। কীভাবে আপনি ভাবছেন এই কথাটি?’

‘বেগম খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া, জোবাইদা রহমান ও জাইমা রহমান এদের পথ রুখে দাঁড়াবার কোনো শক্তি বাংলাদেশে কারও নেই। বিচারবিভাগের নেই, আওয়ামী লীগের নেই। আপনারা এসব রায় দিয়ে আওয়ামী লীগের যদি কিছু একটাও যদি থেকে থাকে সেটাও ধ্বংস করে দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

‘এরা যে রাজনৈতিক দল নয়, এরা যে জনগণের ওপর নির্ভরশীল নয় , এরা জনগণের ওপর বিশ্বাস করে না। এরা নির্ভরশীল বিচার বিভাগের ওপর, আইনশৃঙ্খলার কিছু লোকের ওপর আর কিছু লুটেরা ব্যবসায়ীর ওপর।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা কিভাবে যাবেন ঠিক করেন। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে যাবেন নাকি জনগণ আপনাদের বিতাড়িত করবে। আমরা কাউকে বিতাড়িত করার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।’

‘আমরা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের ভোটের নির্বাচিত সংসদ ও নির্বাচন। এই কাজটাতে বিএনপি বিশ্বাস করে। এই কাজটা যদি আপনি করেন তাহলে খুব ভালো।’

‘আর যদি না করে গত নির্বাচনের মতো রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেন এবার কিন্ত প্রতিবাদ নয় প্রতিরোধ করব।’

নগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সদস্য মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও দক্ষিণ জেলার আহবায়ক আবু সুফিয়ান।

সারাবাংলা/আইসি/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন