বিজ্ঞাপন

ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনস্বাস্থ্যবিদদের ১০ সুপারিশ

August 10, 2023 | 8:20 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে প্রতিদিন বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর থেকে দেশের ইতিহাসে ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর পরিসংখ্যানও ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশা নিধন জরুরি হলেও তাতে ঘাটতি দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। আর তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ১০টি সুপারিশ করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহুপক্ষীয় উদ্যোগ ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। পরিস্থিতির উন্নতি করতে মানুষের সচেতন আচরণ ও নাগরিক সমাজের সম্পৃক্ততা জরুরি।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এসব সুপারিশের বিষয়ে জানান বিশেষজ্ঞরা। ‘বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ: সামনে করণীয়’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক শাহ মনির হোসেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম শহিদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে ১০টি সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। এগুলো হলো-

১. ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি।
২. ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ানো।
৩. পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৌশলগত অগ্রাধিকার ঠিক করা।
৪. স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দক্ষতা বাড়ানো।
৫. হাসপাতালে রোগী ব্যবস্থাপনায় সৃজনশীল উদ্যোগ।
৬. মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা চালু।
৭. মশারি বিতরণ।
৮. মশার ওপর নিয়মিত নজরদারি।
৯. ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গোটা সরকারব্যবস্থার সম্পৃক্ততা।
১০. জোরালো তদারকি ও নিয়মিত কাজের মূল্যায়ন।

এদিন সেমিনারে দুইটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে প্রথম প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকারি–বেসরকারি নানা পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। কিন্তু বর্তমান দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে না যে, আমরা একত্রে আছি। নির্বাচনের কারণে ডেঙ্গু ইস্যুটি পেছনে পড়ে গেছে। এতে দুর্যোগ আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।’

বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করোনার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। বর্তমানে ডেঙ্গু জাতীয় জরুরি অবস্থার মতো।’

সেমিনারে দ্বিতীয় প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন নিপসমের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম ছারোয়ার। তিনি বলেন, ‘মশানাশক ও লার্ভানাশ কার্যকারিতা হারিয়েছে। মশককর্মীরা যেভাবে কাজ করছেন, তাতে আবাসিক এলাকায় মশা বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি আছে।’

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক কারণে একাধিকবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যের ব্যাপারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হতে দেখা যায়নি। জরুরি অবস্থার জন্য হাজার হাজার মানুষ মারা যেতে হবে, বিষয়টি তেমন নয়।’

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা, কীটতত্ত্ববিদ, টিকাবিশেষজ্ঞ, সাধারণ চিকিৎসক, গবেষক, সাংবাদিক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন