বিজ্ঞাপন

রাঙ্গামাটিতে কমছে পানি, বাঘাইছড়ি থেকে ৪ লাশ উদ্ধার

August 10, 2023 | 8:49 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাঙ্গামাটি: জেলার বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি ও বরকল উপজেলায় উজানের ঢলের পানি কমতে থাকায় প্লাবন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে মানুষের বসতঘরে ঢুকে পড়া পানি কমতে শুরু হয়েছে। জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার কাচালং নদী, বিলাইছড়ির রাইক্ষ্যং নদী ও বরকলের কর্ণফুলী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া টানা পাঁচ দিন বিদ্যুৎসেবা বিঘ্নিত থাকা জুরাছড়ি উপজেলায় বুধবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়েছে। তবে কাপ্তাই হ্রদের পানি ঘোলাটে হয়ে পড়ায় জেলার বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকার মানুষ ব্যবহারযোগ্য ও সুপেয় পানির নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করছেন স্থানীয় প্রশাসন। এ, ছাড়া অব্যাহত রয়েছে ত্রাণ কার্যক্রম।

স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছরই পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যান্য বছরগুলোয় বর্ষার দিনে কিছু কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হলেও এবারের মতো পরিস্থিতি উদ্ভব হয়নি। টানা রেকর্ড বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলেই এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বাঘাইছড়ি উপজেলার পৃথক চারটি স্থান থেকে তিন শিশুসহ চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলী এলাকায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে রাহুল বড়ুয়া (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া বাঘাইছড়ি সদরের উগলছড়ি এলাকা থেকে বিকালে মো. জুয়েল (৭) ও খেদারমার ইউনিয়নের দক্ষিণ হীরারচর এলাকা থেকে জুনি চাকমা (৭) নামের আরো দুই শিশুর মৃতদেহ পানি থেকে উদ্ধার করা হয়।

এর আগে, সকালে উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালং এলাকার দীপুপাড়ায় কাচালং নদীর পাড়ে ট্রেবা ত্রিপুরা (৩৫) নামে আরেক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়; তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চারটি মৃতদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার।

ইউএনও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বাঘাইছড়িতে তিন শিশুসহ চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে, কাচালং নদীর পানি কমতে শুরু করায় বাঘাইছড়িতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখনো নিম্নাঞ্চলের কিছু বসতঘরে পানি আছে। উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো ৪০০-৫০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। পানি কমলেও বসতঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় মানুষের ভোগান্তি তো রয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। এ ছাড়া পানি কমার কারণে সাজেকে আটকা পড়া পর্যটকদের বেশিরভাগ বাড়ি ফিরেছেন।’

বিজ্ঞাপন

রাঙ্গামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘বুধবার জেলার ২৮টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত থাকলেও আজ (বৃহস্পতিবার) ৬টি ইউনিয়নের পানি নেমে গিয়েছে। এখনো ২২টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি। জেলা প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৪২৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৪ লাখ টাকা এবং ১ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছি।’

বিলাইছড়ির ফারুয়াসহ দুর্গম এলাকায় প্লাবিত হওয়া মানুষদের কাছে ত্রাণ পৌঁছেছে কি না?- জানতে চাইলে জেলাপ্রশাসক বলেন, ‘প্রশাসন থেকে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের দুর্গম এলাকায় ত্রাণ-বিতরণের জন্য বলা হয়েছে। আমরা পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট ইউপির সঙ্গে বিষয়টি সমন্বয় করে নেব।’

সারাবাংলা/পিআর/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন