বিজ্ঞাপন

ইবিতে নির্যাতন: ছাত্রলীগ নেত্রীসহ ৫ শিক্ষার্থী স্থায়ী বহিষ্কার

August 21, 2023 | 6:24 pm

ইবি করেসপন্ডেন্ট

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২১ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০ তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনা মোতাবেক পর্যালোচনা করে সিন্ডিকেটে অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

অন্য বহিষ্কৃতরা হলেন- ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম এবং চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী। তারা সবাই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট, ১৯৮৭ এর অধ্যায় ২ ধারা ৮ অনুযায়ী অভিযুক্তদের এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তবে এই শাস্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বিধি সম্মত হয়নি বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। এছাড়াও এই রায়কে অকার্যকর করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। একইসঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অব কন্ডাক্টের প্রথম ভাগের ৪, ৫, ৭ ও দ্বিতীয় ভাগের ২ (৮) ধারায় সাজা দিয়ে উপাচার্যকে আগামী ২৩শে আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেন আদালত।

গত ২৬ জুলাই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে রোববার (২০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। মিটিংয়ে এই বিষয়টির সিদ্ধান্তের জন্য সিন্ডেকেট সভায় পাঠানো হয়। সেই লক্ষ্যে সোমবার জরুরি সিন্ডেকেট অনুষ্ঠিত হয় এবং অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি দুই দফায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর র‌্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে। ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা তাকে নির্যাতন করেন বলে জানায় ভুক্তভোগী।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৫ই ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগ। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট হলে হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শৃঙখলা কমিটির সভায় অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রীকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ।

এছাড়াও তাদের সবাই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর গত ১২ই জুন অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটি। একইদিনে ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুনকেও ডাকা হয়। এসব বিবেচনা শেষে গত ১৫ জুলাই ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির চূড়ান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন