বিজ্ঞাপন

‘জনগণের করের টাকায় আফ্রিকায় গিয়ে বিএনপিকে গালাগালি কেন?’

August 26, 2023 | 8:34 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাংলাদেশের মানুষের করের টাকায় দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে শেখ হাসিনা বিএনপিকে গালাগালি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ির দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়ক থেকে সরকারের এক দফা পদত্যাগের দাবিতে নগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত কালো পতাকা গণমিছিল পরবর্তী সমাবেশে তিনি এই অভিযোগ করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় উপস্থিত অন্যান্য দেশের সদস্যদের সঙ্গে শেখ হাসিনার ছবি নেই জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের করের টাকা দিয়ে। দলবল, পরিবারসহ মাশাল্লাহ… দক্ষিণ আফ্রিকায় উপস্থিত হয়েছেন। ব্রিকসের নাকি সদস্য হবে। যারাই ওখানে অতিথি হিসেবে গিয়েছেন বা উপস্থিত ছিলেন তাদের ছবিতেও শেখ হাসিনা নেই।’

তিনি বলেন, ‘তাহলে শেখ হাসিনা কোথায় ছিলেন? ওই বাংলাদেশি কিছু আওয়ামী লীগের লোকজন সেখানে আছে। দক্ষিণ আফ্রিকাতে যত বাঙালি থাকে তার ৯০ শতাংশ হচ্ছে বিএনপি। আমি জেনে বলছি। ১০ শতাংশ হচ্ছে তারা, যাদের পরিবার এখানকার লুটপাটের ভাগ পাচ্ছে বা লাভবান হচ্ছে এই দুর্নীতিবাজ সরকার থেকে। এদের নিয়ে উনি একটি সভা করেছেন ওখানে।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গেছেন কোন কাজে, করছেন কি। গেছেন ওখানে সদস্যপদের জন্য। ওখান থেকে বঞ্চিত হয়ে এদের সঙ্গে গিয়ে সভা করছেন। ওখানে তিনি কি বলেছেন? নৌকায় ভোট দিতে বলেছেন। ওরা কেউ কিন্তু ভোটার না? ওরা তো দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকে। বাংলাদেশের করের টাকা খরচ করে আপনি দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছেন কি নৌকায় ভোট চাইতে?’

তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেখানে করেছেন তিনি। সে সভায় বিএনপিকে মন খুলে গালিগালাজ করেছেন তিনি। দেশে যেরকম সকাল-বিকেল প্রতিদিন করেন, তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ সবাইকে মন খুলে গালি দিয়েছেন।’

‘বাংলাদেশের মানুষের করের টাকা দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে বিএনপিকে কেন গালি দিতে হবে? প্রতিদিন তো বাংলাদেশে দিচ্ছেন। এটার জন্য কি দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার দরকার আছে? কারণ হচ্ছে, ওখানে গিয়ে কোথাও উনার কোনো জায়গা হয়নি, পাত্তা পায়নি। এজন্য ঘরের কোণের মধ্যে কিছু আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে উনি বক্তব্য রেখেছেন।’

বিজ্ঞাপন

আমীর খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোথাও জায়গা নেই, যাওয়ার জায়গা নেই। শুধু কয়েকটি জায়গায় যেতে পারবে। একটি হচ্ছে প্রতিদিন টাকা দিয়ে বিরানী খাইয়ে শান্তি কমিটির মিটিং করা। আবার ওই টাকা নিয়ে, বিরানী খেয়েও বিএনপির মিছিলেও চলে আসে অনেকে। এটা আমি সত্যি কথা বলছি। এই হলো জনগণের সাথে আওয়ামী লীগের অবস্থা।’

‘আরেকটা হচ্ছে কিছু আওয়ামী পুলিশ আছে না…. তাদের ব্যবহার করে। তাদের ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা দেবে। আর বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগে-পরে গ্রেফতার করবে।’

বিচার বিভাগকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করে বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্রুত জেলে পাঠানো হচ্ছে অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, ‘বিচার বিভাগকে দিয়ে মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলাকে ব্যবহার করে বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্রুতগতিতে জেলে পাঠানোর একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমি আগে বলেছিলাম বাংলাদেশ আওয়ামী বিচারক লীগ ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরা আওয়ামী লীগের আরেকটি অঙ্গ সংগঠন। এখন মিথ্যা মামলা, ফৌজদারি মামলা ও গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপি এবং বিরোধীদলীয় ও ভিন্নমতের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে।’

‘এগুলো কিছু পুলিশ ও কিছু আওয়ামী দলীয় লোকজন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে আইনে এসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে সে আইনেও এইটাও বলা আছে যদি মামলা মিথ্যা হয় তাহলে সেটা শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এটার শাস্তি আজীবন কারাদণ্ড হতে পারে। আপনার যারা এসব কাজ করছেন ভেবে দেখেন সারাজীবন কি জেলখানায় থাকতে চান, নাকি সংবিধান আপনাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে জনগণের সুরক্ষার জন্য সেটা পালন করবেন।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের মানুষের স্যাংশন থেকে কেউ রক্ষা পাবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘একটি দলকে ক্ষমতায় রাখার জন্য, একটি ব্যক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য যদি জনগণের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নেন তাহলে আজীবন জেল খাটতে হবে। জরিমানা দিতে হবে। আগামী দিনে যে নির্বাচন আসছে সেটা বাধাগ্রস্থ করার জন্য যারা ভূমিকা পালন করবে… আমেরিকার ভিসা তো বাতিল, সেটা সমস্যা নেই। ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকতে পারবে না। চলে আসতে হবে। চুরি করে যে বাড়িঘর করেছে সেসব আমেরিকার সরকার নিয়ে নেবে। তাদের বিতাড়িত করবে। তাদের ছেলেমেয়েরা কেউ পড়তে যেতে পারবে না।’

বিএনপি ভদ্রলোকের দল মন্তব্য করে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা গ্রেফতার করতে আসবে রাতের অন্ধকারে তাদের ছবি তুলবেন। বিএনপি ভদ্রলোকের দল। এখনও কিন্তু সুশৃঙ্খল্ভাবে, অহিংসভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। আমরা প্রতিবাদ করছি। কিন্তু বাসায় বাসায় গিয়ে গ্রেফতার, গায়েরি ও মিথ্যা মামলা এই ধারা যদি চলতে থাকে এখন তো প্রতিবাদ করছি তখন প্রতিরোধ করব। প্রতিরোধ কী জিনিস তখন বুঝতে পারবেন।’

‘এখানে বাংলাদেশের জনগণের অধিকার আছে। কেউ যদি কারও নাগরিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেয় তাহলে সেই নাগরিকের অধিকার সেটা প্রতিরোধ করা। আবারও বলছি দেওয়ালের লিখন পড়তে শেখেন। দেওয়ালের লিখন হচ্ছে শেখ হাসিনার বিদায়। এখনও যারা যারা পড়েননি, পড়ে নেন।’

নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গণমিছিলটি কাজির দেউড়ির নুর আহম্মেদ সড়ক থেকে শুরু হয়ে লাভলেইন, বৌদ্ধ মন্দির মোড়, চেরাগী হয়ে আন্দরকিল্লায় গিয়ে শেষ হয়।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন