বিজ্ঞাপন

মাদকে জড়িত থাকলে ছাড় নয়: র‌্যাব ডিজি

May 14, 2018 | 2:10 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশব্যাপী মাদক নির্মূলে র‌্যাবের বিশেষ অভিযান চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

সোমবার (১৪ মে) দুপুরে র‌্যাবের কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘গত ৩ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা র‌্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মাদক নির্মূলে র‌্যাবকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়ার পর ৪ মে থেকে সারা দেশে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। গত ৯ দিনে ১ হাজার ৪১৫ জন মাদক ব্যবসায়ীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এসময় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ১৫ কোটি টাকা সমমূল্যের মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। আর ৩৮১ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে জানিয়ে ডিজি বলেন, ‘প্রত্যাশা করছি যারা ড্রাগ গ্রহণ করেন তারা ছেড়ে দেবেন, যারা খুচরা বিক্রি করেন তারা বাদ দেবেন, যারা ডিলার হিসেবে সরবরাহ করেন তারা সব বন্ধ করবেন। সবাই সাবধান হবেন। সারাদেশে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সামগ্রিকভাবে কাজ করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর গত ১৪ বছরে ৬৮ হাজার ৪৯৮ জন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সময়ে ১ হাজার ৭০৪ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে।’

র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানে জেলা প্রশাসকদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করছি। যে সমস্ত দেশপ্রেমিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন, আমরা চাইবো এই মাদকের আগ্রাসন থেকে নিস্তার পেতে সবাই মিলে কাজ করে যাব।’

বিজ্ঞাপন

বিচারিক কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, জঙ্গি ও মাদক আর ১০টা অপরাধের মতো স্বাভাবিক অপরাধ নয়। আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আইনজীবী, প্রসিকিউটর, যারা মাদকের ব্যবসা করে ডিলার স্মাগলার তারা যেন আইনের ফাঁক-ফোকরের অপব্যবহারের সুযোগ না পায়।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সুরক্ষা বিভাগ পুরাতন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনকে হালনাগাদ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যতো দ্রুত সম্ভব আরও কঠোরভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের ব্যবস্থা করা যাতে আমরা দ্রুত তা প্রয়োগ করতে পারি।
মাদকদ্রব্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ট্রান্সপোর্টের পাশাপাশি, সরকারি বেসরকারি যানবাহনও ব্যবহার হচ্ছে। এর চালকরা কখন কোথায় সরকারি-বেসরকারি যানবাহনগুলো ব্যবহার করছেন তা গাড়ির মালিক ও ব্যবহারকারীদের খেয়াল রাখতে অনুরোধ করছি।’

মাদককে জাতীয় সমস্যা উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষক, ছাত্র, রাজনীতিবীদ, ধর্মীয় নেতা, অভিভাবক, কমিউনিটি নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের আমরা সহযোগিতা চাই। যাতে করে আমরা মাদকের শিকড় সমূলে মূলোৎপাটন করতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সর্বশেষ ইলেক্ট্রনিক্স, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ার সহযোগিতা চাই। আপনারা লেখেন, দেখান, আমরা সেখানেই যাবো, অভিযান চালাবো। র‌্যাব সদরের ফেইসবুক, রিপোর্ট টু র‌্যাব, ১৪টি ব্যাটালিয়নের ফেইসবুক পেইজে যে কেউ মাদক সম্পর্কে তথ্য দিতে ও যোগাযোগ করতে পারবেন। পূর্বে বড় বড় কাজের ক্ষেত্রে যে জাতীয় ঐক্য ছিল তা এক্ষেত্রে হলেও বড় কোনো বাধা হবে না। মাদক ও মাদক ব্যবসায়ীদের একটি সমন্বিত তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে আমরা সেটি নিয়ে কাজ করবো।’

বিজ্ঞাপন

মাদকের চাহিদা কমাতে র‌্যাবের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দুটো জায়গায় কাজ করতে হবে। ডিমান্ড ও সাপ্লাই বন্ধ করা। সেবনকারী ও বিক্রেতারা মাদক ছেড়ে দেবেন। পুনর্বাসনকারী প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।’

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে মাদক ব্যবসায় জড়িত তাদের ব্যাপারে কি ধরণের পদক্ষেপ নেবেন জানতে চাইলে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘র‌্যাবের কোনো সদস্য মাদকের সাথে জড়িত এখন পর্যন্ত এরকম কোনো অভিযোগ নেই।’

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন