বিজ্ঞাপন

অপেক্ষায় খুলনা সিটি, প্রস্তুত ভোটকেন্দ্র

May 14, 2018 | 9:12 pm

।। মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

খুলনা থেকে: রাত পোহালেই ভোট। তাই শিল্প নগরী খুলনা এখন অনেকটাই ফাঁকা। ভোটকে কেন্দ্র করে রোববার (১৩ মে) বিকেলে যে নির্বাচনি আমেজ ছিল, তার ঠিক বিপরীত চিত্র সোমবার (১৪ মে) সকাল থেকেই। গত কয়েকদিন ধরে কর্মী-সমর্থকদের মিছিল আর মোটরসাইকেল মহড়ার যে উত্তেজনা-ঠাসা পরিবেশ, নির্বাচনি প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ মেনে সেই পরিবেশ এখন শান্ত। রাস্তাঘাটে গণপরিবহনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম। শহরের বিপণী বিতানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় নেই বললেই চলে। নতুন নগরপিতাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে এখন তারা রয়েছেন শেষ মুহূর্তের অপেক্ষায়।

গণমানুষের উপস্থিতির দিক থেকে ফাঁকা হলেও নগরীরর মোড়ে মোড়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। প্রায় ফাঁকা শহরে সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে র‌্যাব-বিজিবির টহল গাড়ি।

নগরীর রাস্তাঘাট ফাঁকা, বিপণীবিতানেও ক্রেতাদের আনাগোনা কম

মঙ্গলবার (১৫ মে) সকালের ভোটকে সামনে রেখে সোমবার নগরীর ২৮৯টি কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ব্যালট বাক্সসহ অন্যান্য নির্বাচনি সরঞ্জাম। সেখানে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা সেগুলোর দেখভাল করছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ নির্বাচন যেন কোনোভাবে বিতর্কিত না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে বিভাগীয় সর্বোচ্চ প্রশাসন থেকে নির্দেশনা রয়েছে। তাই সজাগ রয়েছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রগুলোর সামনে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীসহ মেয়র পদে পাঁচ জন, ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডের ১৪৮ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে ভোট সহায়তা কেন্দ্র। সেখানে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা।

ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছে নির্বাচনি সরঞ্জাম

ভোটের আগের দিন সোমবার (১৪ মে) দুপুরের পর নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় ক্রেতা সমাগম অনেক কম। তরুণ-তরুণীদের ভিড় নেই। যারা আসছেন তারাও প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে দ্রুত ফিরছেন বাসায়।

নিউমার্কেট এলাকায় কথা হয় নগরীর ২৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফরিদা হাসানের সঙ্গে। তিনি একটি ভ্যানিটি ব্যাগ কিনতে মার্কেটে এসেছিলেন। সেটি নিয়ে আগেভাগেই বাসায় যাচ্ছেন তিনি। বললেন, ‘শহরের অবস্থা ভালো না। অযথা হয়রানি হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই আগেভাগেই বাসায় ফেরা ভালো।’

বিজ্ঞাপন

ইভিএম মেশিনের প্রশিক্ষণ

গেটের একটু ভেতরেই কথা হয় তরুণ মোস্তাফিজের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভোট উপলক্ষে আজ পুরো শহরেই লোক সমাগম কম। সবার মধ্যে একদিকে যেমন উৎসবের আমেজ আছে, তেমনি খানিকটা চাপা ভীতিও কাজ করছে। শহরে এত র‌্যাব-পুলিশের বিচরণ তো প্রতিদিনের স্বাভাবিক ঘটনা না।’

ভোট কেমন হবে বলে মনে করছেন— এমন প্রশ্নে নাগরিকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে ভোটের রাজনীতি মানেই ক্ষমতার লড়াই। ফলে একটু সতর্ক থাকার পক্ষেই মত দিচ্ছেন তারা।

নগরীতে টহল দিচ্ছে র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবি

নগরীর খালিসপুর এলাকার একটি খাবার হোটেলে কথা হয় স্থানীয় পাটকল শ্রমিক লতিফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, রোববার রাত ১টা পর্যন্ত নৌকার জনসভা হয়েছে তার ওয়ার্ডে। সেখানে মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক এসেছিলেন। তারা ভোটের জন্য অপেক্ষা করছেন।

পূর্ব বয়রা প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় কথা হয় স্থানীয় ভোটার আশরাফুল ইসলাম ও সাদেক আলীর সঙ্গে। তারা জানান, কয়েকদিন ধরেই তারা একাধিক ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও একজন মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। টাকা পেয়েছেন দিন হিসাবে। তাদের মতে, ভোটের দিন সকালে বোঝা যাবে কোন প্রার্থীর মেয়র হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বিজ্ঞাপন

রাস্তাঘাট ফাঁকা হলেও মোড়ে মোড়ে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা

৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ ভোটারের খুলনা নগরীতে বৈশাখের শেষ দিনটি পার হলো নির্বাচনি উত্তেজনায়। মধুমাস জৈষ্ঠ্যের প্রথম দিনেই তাদের সামনে সুযোগ নতুন নগরপিতা বেছে নেওয়ার। সে দিনটির শেষে নিজের পছন্দের প্রার্থীই জয়ের মালা পরবেন, সেই প্রত্যাশাতেই তারা কাটাচ্ছেন ভোটের আগের রাতটি।

সারাবাংলা/এমএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন