বিজ্ঞাপন

‘বিশ্ব আমাদের পাশে, এখনই সময় ঝাঁপিয়ে পড়ার’

September 15, 2023 | 7:48 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা একা নই। গণতান্ত্রিক বিশ্ব আমাদের সঙ্গে আছে। এখনই সময় ঝাঁপিয়ে পড়ার।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ বিএনপি এ সমাবেশ আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘১৯৭১ সালে এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছিল। ১৯৯০ সালে আমান সাহেবরা (আমান উল্লাহ আমান) একইভাবে লড়াই করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন। আজকে আবার সেই ডাক এসেছে।’

‘সেই ডাক এসেছে দেশের কাছ থেকে, সেই ডাক এসেছে আমাদের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে, সেই ডাক এসেছে আমাদের নেতা তারেক রহমান— যিনি আজকে দেশের বাইরে থেকে আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রতি মহূর্তে সংগ্রাম করছেন। তার কাছ থেকে ডাক এসেছে। ডাক এসেছে আমাদের সাধারণ মানুষ, আমাদের কৃষক-শ্রমিকদের কাছ থেকে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা একা নই এই আন্দোলনে। আমাদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক বিশ্ব আছে। আর কালবিলম্ব না করে আসুন, একযোগে বাংলাদেশের গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ি। এখনই সময় ঝাঁপিয়ে পড়ার। এই ভয়াবহ সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোনো মূল্যেই এই সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। কোনো নির্বাচন হবে না নিরপেক্ষ এবং নির্দলীয় সরকার ছাড়া।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অধিকার নিয়ে, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার নিয়ে যিনি কথা বলেন, যিনি এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং নিয়ে কথা বলেন, যিনি নির্বিচারে হেফাজতের হত্যা নিয়ে কথা বলেছিলেন, আজকে এই সরকার তাদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে। আজকে সারাবিশ্ব তাদের ধিক্কার জানিয়েছে, অবিলম্বে তাদের মুক্ত করতে বলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট প্রস্তাব দিয়েছে— অবিলম্বে এই মামলা বাতিল করে তাকে মুক্ত করা হোক এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হোক।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বর্তমান সরকার, সরকার নয়, এরা কর্তৃত্ববাদী। এরা গুম খুন সাজা দিয়ে দেশকে অস্থির রেখে লুটপাট করছে। জনগণকে কোনো তোয়াক্কা করে না, এদের ক্ষমতায় টিকে থাকার একমাত্র অস্ত্র পুলিশ আর কোর্ট। এরা যে কোনোভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়। এদের কোনো লজ্জা সরম নেই। পুলিশ আমলা ব্যবসায়ী এমনকি সাংবাদিকরাও ১৫ বছর ভোট দিতে পারে নাই। ভোট না দিয়ে যদি ক্ষমতায় থাকা যায়, তাহলে ভোটের দরকার কী?

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নাকি নির্বাচনে শত কোটি টাকার গরু-ছাগল বিতরণ করবে। জুতা মেরে গরু দান। এদেশের মানুষ গরু ছাগল চায় না, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা চায়, খেয়ে বেঁচে থাকতে চায়। সরকারের ডিসি যদি থাকে তাহলে এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘এ সরকার গণতন্ত্র হরণ করে বাকশালি শাসন কায়েম করেছে। এরা শুধু গণতন্ত্র হত্যা করেনি, মানুষের সকল মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। আজকে দেশের মানুষ গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে রাজপথে আছে। ৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগও অংশ নিয়েছিল। তখন কি সংবিধান লঙ্ঘিত হয়নি? মানুষের জন্য সংবিধান। সংবিধানের জন্য মানুষ নয়।’

বিজ্ঞাপন

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ব গণতন্ত্রে দিবসে আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বাকস্বাধীনতা নেই। আজকে গণতন্ত্রের পক্ষে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমেছে। এ আন্দোলন বিএনপির আন্দোলন নয়, এ আন্দোলন দেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন। ৭১ মুক্তিযুদ্ধের পর এটি বড় আন্দোলন। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন পাকিস্তানিদের সকল অনাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে জাতি যেমন এক হয়েছিল, বর্তমানে একই কারণে দেশের মানুষ এক হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় আছে তারা সরকার নয়, এটি লুটেরা, খুনি ও গণতন্ত্র হত্যাকারী। আমাদের আন্দোলন কোনো দলের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের প্রতিপক্ষ যারা সব কিছু দখল করে রেখেছে, বিচার বিভাগকে দখল করে রেখেছে যারা দেশের মানুষকে বাইরে রেখে আবারও ক্ষমতায় আসতে চায় তাদের বিরুদ্ধে। আজকে দেশের মানুষ একদিকে আর এ সরকার আরেক দিকে। দেশের মানুষ যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সে সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ টিকে থাকতে পারবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘অটোপাস আর এদেশে আর হবে না। আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। স্বাধীনতার পর এই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র খেয়ে ফেলেছে। সকল দল নিষিদ্ধ করেছে। আজ তারা গণতন্ত্রের কথা বলে। বাংলাদেশে যতবার গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে প্রতিবারই তারা করেছে। এরশাদের স্বৈরশাসনকে বৈধতা দিয়েছে, ১/১১কে ক্ষমতায় এনেছে। দেশে যত খারাপ করেছে তা আওয়ামী লীগ করেছে।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল মিল্টন, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন