বিজ্ঞাপন

‘শুধু আমেরিকা নয়, দেশের মানুষও সরকারকে স্যাংশন দিয়েছে’

September 24, 2023 | 8:21 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘শুধু আমেরিকা নয়, দেশের মানুষও সরকারকে স্যাংশন দিয়েছে’— এমনটিই মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা এবং মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনেক আশা করে আমেরিকা গিয়েছিলেন। মনে করেছিলেন, একটা সুরাহা হবে। অথচ, উনি ওখানে থাকতেই বাংলাদেশের প্রতি স্যাংশন জারি করল আমেরিকা। আজ শুধু আমেরিকা নয়, এ দেশের মানুষও সরকারকে স্যাংশন দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নতুবা তার কিছু হলে সকল দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) দেশনেত্রীকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমি কখনও তার চোখে পানি দেখেনি। তিনি অনেক শুকিয়ে গেছেন। ঠিক মতো কথা বলতে পারছেন না। আজ দেশের গণতন্ত্র মুক্তির জন্য গৃহবন্দি হয়ে আছেন। ডাক্তার আমাকে বলেছেন, আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন, তার শারীরিক অবস্থা ভালো না। আমি আবারও বলছি, তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, তার কিছু হলে বিএনপির নয়, জনগণের ক্ষতি হবে, গণতন্ত্রের ক্ষতি হবে, দেশের বড় ক্ষতি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগে জার্মান রাষ্ট্রদূত আমাদের অফিসে এসে জানতে চেয়েছিলেন, বেগম জিয়া কেমন আছেন। তিনি পৃথিবীর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তাকে আমরা এভাবেই সম্মান করি। সারাবিশ্ব তাকে এভাবেই সম্মান করে। যে নেত্রী দেশের প্রয়োজনে গণতন্ত্রের জন্য গৃহিণী থেকে রাজপথে নেমেছেন; ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়ে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন- আজ তাকে বিনা চিকিৎসায় আটক করে রেখেছেন।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৬দিন হরতাল দিয়েছে। খালেদা জিয়ার বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। এর পর চারটি নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। সরকার যখন দেখল, নিরপেক্ষ নির্বাচনে, সিটি নির্বাচনে তাদের পরাজয় হলো- তখন বুঝতো পারল অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা আর কখনও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই রাতারাতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিল করা হলো। সেদিনই খালেদা জিয়া বলেছিলেন, দেশে স্থায়ীভাবে সংঘাত সৃষ্টি হবে। হলোও তাই। ২০১৪ ও ১৮ সালে তাই হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ সারাদেশের মানুষ বলছে, এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আজ গণতন্ত্রকামী কোনো দলই এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা পরিকল্পিতভাবে ১৫ বছর ধরে শুধু বিএনপি নয়, দেশের মানুষকে অত্যাচার করে যাচ্ছেন। এরা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে ফের এক তরফা নির্বাচন করতে চায়। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে আন্দোলন স্তব্ধ করতে চায়।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিএনপির কোনো মাথা ব্যাথা। কিছু সাবেক ও বর্তমান আমলা মিটিং করেছে, তারা নাকি এই সরকারকে রক্তের বিনিময়ে রক্ষা করতে চায়। এখন আবার পুলিশের কিছু কর্মকর্তা নাকি বৈঠক করে যাচ্ছে, যেভাবেই হোক বিএনপির আন্দোলন দমন করতে হবে। মিটিং আর গোপনে করবেন না, প্রকাশ্যে করেন। জয়ের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলে তার মায়ের কোনো আফসোস নেই। কিন্তু আমার আপত্তি আছে। এটাতো তার বাবার টাকা নয়, এ দেশের টাকা মেরে সে বিদেশ নিয়ে গেছে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন