বিজ্ঞাপন

জোটগত নির্বাচনে হার্ডলাইনে জাপা, চায় ১০০ আসন ও মন্ত্রিত্ব

October 5, 2023 | 11:51 pm

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি (জিএম কাদের গ্রুপ) জোটগত নির্বাচন করার ক্ষেত্রে হার্ডলাইনে চলে গেছে। আসছে নির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে নাকি অন্য কোনো জোটে যাবে- সেসব হিসাব নিকাশও পরে করতে চাইছে দলটি। তবে যে জোটেই যাক না কেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১০০ আসন ও মন্ত্রিপরিষদে স্থান এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আনুপাতিক হারে জায়গা ছাড়ের দাবি জানাবে তারা।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবদলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের পক্ষে রয়েছে তারা। অবশ্য সরকার বিএনপি ছাড়া অন্যান্য দল নিয়ে নির্বাচন করলে সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবে। কারণ, তাদের ধারণা- বিএনপি ছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করলেও সে সরকার বেশিদিন টিকবে না। সেজন্য জাপার জিএম কাদের গ্রুপ সরকারি দলের সঙ্গে থেকে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় পার্টির যৌথসভায় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যরা জোট ও ভোট নিয়ে এভাবেই তাদের মতামত তুলে ধরেন বলে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, যৌথসভায় জাতীয় পার্টির ৩৯ জন সদস্য বক্তব্য দেন। এর মধ্যে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি ও জাতীয় পার্টির রাজনীতি এক। তারাও জাতীয়তাবাদী, জাতীয় পার্টিও তাই। জাতীয় পার্টি গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে দলীয়ভাবে কিছুই করতে পারেনি। সেক্ষেত্রে বাধা ছিল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়নি। তবে এবার তারা জাপাকে সঙ্গে চাইলে আমাদের চাহিদা ও দাবি মেনে নিয়ে জোটে রাখতে হবে।’ আনিসুল ইসলাম মাহমুদের এই মতামতের প্রতি সম্মতি দেন উপস্থিত সকলেই।

বৈঠকে দলের অন্যান্য সদস্যরাও তাদের মতামত জানান। তারা বলেন, জাতীয় পার্টি এই মুর্হূতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে বেকায়দায় পড়তে পারে। কেননা দেশি ও বিদেশি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বিএনপি যদি আন্দোলনে সফল হয়, তখন আমাদের তারা জোটে না টানলেও জাপা এককভাবে নির্বাচন করবে। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যে কয়টি আসন পাবে তাই দলের জন্য বিরাট শক্তি। তবে দেশীয় রাজনীতির ইতিহাস পর্যালোচনা বলে দেয়, জাপা ট্রাম্পকার্ড হিসেবেই রাজনীতির মাঠে থাকবে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা জানান, যৌথ বৈঠকে উপস্থিত সকলের মতামতের পর সভায় রাজনৈতিক সব সিদ্ধান্ত গ্রহণে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদেরকে ক্ষমতা দেওয়া হয়। জোটগত নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কোনো দলীয় প্রধানের সঙ্গে কেউ এককভাবে বৈঠক করতে পারবেন না। জিএম কাদের তার মনোনীত নেতাদের নিয়ে সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া বৈঠকে রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে বিভাগীয় কর্মী সভার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত জাপার এক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম গোপন রাখার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টি হয়তো আর যৌথ বৈঠক করতে পারবে না। এটাই মনে হচ্ছে শেষ বৈঠক। তবে এবার জাতীয় পার্টি জোটগত নির্বাচনের ক্ষেত্রে হার্ডলাইনে চলে গেছে। শর্ত ও লিখিত চুক্তি ছাড়া জাপা কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে না।’

এই নেতা আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সরকারের কাছ থেকে কেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি। বরং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম করেছে। ফলে জাপা এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

আজকের যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আবুল কাশেম, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া টিপু, সাহিদুর রহমান টেপা, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ.টি.ইউ.তাজ রহমান, নাসরিন জাহান রতনা, আব্দুর রশীদ সরকার, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মো. মিজানুর রহমান, সৈয়দ দিদার বখ্ত, নাজমা আখতার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল, লিয়াকত হোসেন খোকা, মো. জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জহিরুল আলম রুবেল, রওশন আরা মান্নান, শেরীফা কাদের, পনির উদ্দিন আহমেদ, শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, নুরুল ইসলাম তালুকদার, পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ, আহসান আদেলুর রহমান।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন