বিজ্ঞাপন

তেল সংকটে সক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যর্থ ২ কেন্দ্র 

May 15, 2018 | 10:38 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : চাহিদা অনুযায়ি ডিজেল না পাওয়ায় সক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না সিরাজগঞ্জের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এমনকি বিভিন্ন সময় গোটা উৎপাদনই বন্ধ থাকছে। অথচ দেশে সার্বিকভাবে তেলের জোগানে কোনো সংকট নেই। শুধু পরিবহন ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে কেন্দ্রগুলোতে সময়মতো তেল পৌঁছাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাস সংকটের কারণে এমনিতেই গ্যাসচালিত কেন্দ্রগুলো পুরোদমে উৎপাদন করতে পারছে না। এর মধ্যে তেলচালিত কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যহত হলে দেশের সার্বিক বিদ্যুৎ পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে, রমজানে বর্ধিত চাহিদা মেটানো কঠিন হবে।

সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটে ডিজেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় দুটি কেন্দ্রেই নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি কেন্দ্র দুইটির মালিকানায় থাকা কোম্পানি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (নওপাজেকো) বিদ্যুৎ বিভাগকে এ তথ্য জানিয়ে চিঠি দেয়।

বিজ্ঞাপন

ইউনিট-১ কেন্দ্রটি গত বছরের ১২ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৭ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। এরপর ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ডিজেলের মাধ্যমে মাঝে মাঝে এটি  চালু ছিল। এরপর আবার ডিজেলের স্বল্পতা থাকায় কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রেখে অপেক্ষমান রাখা হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ প্রসঙ্গে বলেন, রমজানে ও চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ঠিক রাখতে এই কেন্দ্র চালু রাখা দরকার। চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। আশা করছি কয়েক দিনের ঠিক হয়ে যাবে।

নওপাজেকোর এক কর্মকর্তা জানান, দ্বিতীয় ইউনিট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে চালু হয়। প্রথম ইউনিটের উৎপাদন প্রায় বন্ধ থাকলেও দ্বিতীয় ইউনিটটি চলছে ঢিমেতালে। তবে যখন প্রথম ইউনিটটি চালু করা হয় তখন দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ রাখতে হচ্ছে। অর্থাৎ একইসাথে ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে দুইটি কেন্দ্র চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

গত সপ্তাহে এ নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় জ্বালানি সংকটের পরিস্থিতি তুলে ধরে কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপক জানান, দুইটি ইউনিট পুরোদমে চালু রাখার জন্য প্রতিদিন ২২ লাখ লিটার এবং একটি ইউনিটের জন্য ১১ লাখ লিটার ডিজেল দরকার হয়। কিন্তু তার সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। যদি রেলের শুধু একটি র‌্যাকের (৩০টি ওয়াগন সম্পন্ন গাড়ি) মাধ্যমে ডিজেল সরবরাহ করা হয় তাহলে প্রতিদিন গড়ে পৌনে চার লাখ লিটার ডিজেল পাওয়া যায়। আর দুইটি র‌্যাক হলে ৬ লাখ লিটার পাওয়া যায়। গত দুই মাসে বাঘাবাড়ী এবং দৌলতপুর ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে ৯ দশমিক ৩ লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ পাওয়া যায়। এই পরিমাণ তেল দিয়ে একটি কেন্দ্রও পুরোদমে চালু রাখা সম্ভব নয়।

সভায় কীভাবে পরিস্থিতির উন্নয়ন করা যায় তা সম্পর্কে বলা হয়, দুটি কেন্দ্রের জন্য রেলের র‌্যাকের বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। ৩টি র‌্যাকের বরাদ্দ বাড়ানো হলে দৌলতপুর ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে ১১ লাখ লিটার এবং বাঘাবাড়ি ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০টি ট্যাংক লরীর মাধ্যমে দৈনিক ৮ লাখ লিটার ডিজেল পাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ এই পদক্ষেপ নেওয়া হলে সব মিলিয়ে প্রতিদিন মোট ১৯ লাখ ডলার ডিজেল পাওয়া যাবে। এই পরিমাণ তেল দিয়ে দুইটি ইউনিটের অন্তত ৭৫ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহৃত হবে।

এদিকে বিপিসির এক কর্মকর্তা জানান, পার্বতীপুর ডিপোতে ডিজেলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় মাঝে কিছুদিন দৌলতপুর ডিপোতে তেল সরবরাহ স্থগিত ছিল। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তেলের সরবরাহও বাড়ানো হচ্ছে। ধীরে ধীরে বিদ্যুৎকেন্দ্রও প্রয়োজন মত তেল পাবে। রেলসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/এইচএ/এমআই

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন