বিজ্ঞাপন

‘ফকিরকে পান্তা ভাত দিলে বলে আমার গ্যাস্ট্রিক’

October 9, 2023 | 6:25 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, এখন ফকিরকে পান্তা ভাত দিলে বলে- আমার গ্যাস্ট্রিক।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর কাজির দেউড়ির মোড়ে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের ডালপালায় বিভিন্ন সময় শকুন বাসা বেঁধেছে উল্লেখ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক পরিবার, একটি মহীরুহ। আওয়ামী লীগের ডালপালায় বিভিন্নসময় শকুনেরা বাসা বেঁধেছে, এই কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। যার জন্য আওয়ামী লীগকে অনেক মাশুল দিতে হয়েছে। কিন্তু আজ আমরা আস্থার সঙ্গে বলতে পারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ৭৫ পরবর্তী যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই ভিত্তি দিনদিন জনসেবা ও সঠিক রাজনীতির মাধ্যমে মজবুত হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে সংবিধানের প্রতিশ্রুতি অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান- আসুন আমরা একটি একটি করে হিসাব নেই। এই প্রতিশ্রুতিগুলোর অবস্থা কী। ভাতের কথা যদি বলেন, ফকিরকে পান্তা ভাত দিতে চাইলে খেতে চায় না- এটি বাস্তব সত্য। তাকে পান্তা ভাত দিতে গেলে বলে আমার গ্যাস্ট্রিক, আমি পান্তা ভাত খাই না। এটা শুনে অনেকেই রাগ করে নালিশ করেন। এই কথাগুলো শোনার জন্যই তো আমরা এতদিন রাজনীতি করেছি। ফকির যে পান্তা ভাত খাবে না এই দিনগুলো সৃষ্টির জন্যই তো আমরা রাজনীতি করেছি। শেখ হাসিনা পরিশ্রম করে গেছেন।’

বিজ্ঞাপন

বই উৎসব শেখ হাসিনার একান্ত মৌলিক উপহার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর কয়টি দেশে আমাদের মতো বছরের প্রথম দিনে বই উৎসব করে। এই বই উৎসব শেখ হাসিনার একান্ত মৌলিক উপহার। এই বই উৎসব পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে কেউ করেনি। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ২২ রকমের ওষুধ বিনা পয়সায় পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অন্য কোনো জায়গায় এরকম ঘন ও বিস্তৃত স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক দেশ আছে কিনা আমার জানা নেই। আজ লাল-সবুজের ঘরে আপন নিবাসে যখন একজন মা ও তার সন্তানেরা থাকতে পারে, তখন বোঝা যায় আল্লাহর নিয়ামত বেহেশত সেখানে এক টুকরো নেমে এসেছে।’

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ দুর্দমনীয়ভাবে এগিয়ে চলেছে। এখান থেকে পেছনে যাওয়ার কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত আমরা দেখিনি। যদিও অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চেষ্টা হচ্ছে। যাতে কীভাবে এই গতি রুদ্ধ করা যায়। কিন্তু শেখ হাসিনা ও আমাদের গতি কেউ রোধ করতে পারেনি। এমনই এক সময়ে কালনাগিনীরা বসে নেই। নানাভাবে তারা ষড়যন্ত্র করছে। যেমনটা পাঁচাত্তরে তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করেছিল। আজ তেমন একটি কালচক্র চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই চক্রান্ত নস্যাৎ করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

সংসদ উপনেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনাম আজ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীতে অনেক রাষ্ট্রপ্রধান আছেন, অনেক সরকারপ্রধান আছেন। কিন্তু বিভিন্ন কনফারেন্সে গেলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে সম্মানিত হন এটা কিন্তু খুব বিরল। কারও বেলায় এটা আমরা দেখতে পাই না। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে একটি অগ্রসরমান রাষ্ট্রে পরিণিত করতে প্রধানমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। উনার চিন্তা অগ্রসরমুখী।’

সভায় প্রয়াতের মেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াশিকা আয়েশা খানম বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র চলছে সেটা রুখে দাঁড়াবার জন্য বড় শক্তি তৃণমূলের কর্মী। আমাদের সবাইকে এক হয়ে সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। তা না হলে অগ্রগতি থেমে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা এই দেশকে পেছনে ও অন্ধকারে নিয়ে যেতে চায়, জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণিত করতে চায় আমরা তাদের পরিহার করব। আমার বাবা আতাউর রহমান খান কায়সারও তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করেছিলেন।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘শৈশব থেকেই আমি আতাউর রহমান খান কায়সার চাচাকে দেখে আসছি। অত্যন্ত ব্যক্তিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন তিনি। তিনি তার প্রজ্ঞা ও নেতৃত্বের গুণাবলী দিয়ে সবাইকে আগলে রাখতেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সন্তানদের খোঁজখবর নিতেন। যার উপকারভোগী আমি নিজেই। উনিই আমাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, নগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সহ সভাপতি এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও খাদিজাতুল আনোয়ার সনি।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন