বিজ্ঞাপন

দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু: বেঞ্চ সহকারি বদলি, তদন্ত কমিটি

October 9, 2023 | 10:15 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তাকে আদালতে হাজিরের জন্য জারি করা সমন আটকে রেখে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিকভাবে এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়ে তদন্তের জন্য এক সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম)।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া অভিযুক্ত চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম-৬ আদালতের বেঞ্চ সহকারি হারুন উর রশিদকে বদলির আদেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সিএমএম ‍জুয়েল দেব।

সিএমএম আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুদকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় তাকে হাজিরের জন্য সমন জারির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু সেই আদেশ কার্যকর না করে আদালতকে বিভ্রান্ত করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করানোর অভিযোগ উঠেছে। এজন্য ভারপ্রাপ্ত সিএমএম স্যার এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’

চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. অলিউল্লাহকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে নাজির বলেন, ‘তদন্তে দায়ীদের শনাক্ত করার জন্য বলা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম-৬ আদালতের বেঞ্চ সহকারি হারুন উর রশিদকে বিচার সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম থেকে সরিয়ে ‘ক্যাশিয়ার’ পদে বদলি করা হয়েছে।

নাজির আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সমন যদি ইস্যু করা না হয়, সেটা অবশ্যই মামলার নথিতে থাকবে। এটা জানার দায়িত্ব বেঞ্চ সহকারির। সেটা ইস্যু না করা মানে আটকে রাখা। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা দরকার ছিল। তাহলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হতো না। বেঞ্চ সহকারি অবশ্যই দায় এড়াতে পারেন না। এজন্য আপাতত তাকে বিচার সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম থেকে বদলি করা হয়েছে।’

গত ২৯ আগস্ট শহীদুল্লাহসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের হওয়া একটি মামলায় ৩ অক্টোবর রাতে নগরীর চান্দগাঁও থানা পুলিশ দুদকের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে (৬৪) গ্রেফতার করে। তার বাসা নগরীর চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায়। মামলাটি দায়ের করেছিলেন রণি আক্তার তানিয়া নামে এক গৃহিণী।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, হুমকিধমকি ও মানহানির অভিযোগে আদালতে দায়ের হওয়া একটি মামলায় পরোয়ানামূলে পুলিশ শহীদুল্লাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়েছিল। তাকে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে বসানোর পর তিনি অসুস্থবোধ করতে থাকেন। হৃদরোগে আক্রান্ত শহীদুল্লাহ’র মুখে এসময় ইনহেলার স্প্রে করেন তার সঙ্গে যাওয়া ছোট ভাই। কিন্তু অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করলে ছোট ভাইয়ের চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ শহীদুল্লাহকে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অভিযোগ উঠেছে, আদালত মামলা গ্রহণ করে বিবাদিকে হাজিরের সমন জারি করলেও সেটা গোপন রেখে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পুলিশ পরোয়ানামূলে তাকে গ্রেফতার করেছিল এবং পরবর্তীতে তিনি মারা যান।

এদিকে শহীদুল্লাহ’র পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, গ্রেফতারের সময় তার সঙ্গে নির্দয় আচরণ করা হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগমতে শহীদুল্লাহকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে বিধিবর্হিভূত কোনো কাজ করা হয়েছে কি না এবং থানায় নিয়ে যাবার পর তার সঙ্গে নিয়ম বর্হিভূত কোনো আচরণ করা হয়েছে কি না সেটা নির্ণয়ের জন্য সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

বিজ্ঞাপন

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের উপ কমিশনারকে প্রধান করে কমিটিতে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) এবং বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনারকে সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছিল।

জানতে চাইলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) নিহাদ আদনান তাইয়ান সারাবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের জন্য আমরা আরও তিন কার্যদিবস সময় নিয়েছি। আগামী বুধবার সময় শেষ হবে। এর মধ্যেই আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবো বলে আশা করি।’

সারাবাংলা/আরডি/এনইউ

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন