বিজ্ঞাপন

নিষেধ মানছে না মৌসুমি জেলে, বিষখালী-সুগন্ধায় চলছে মা ইলিশ নিধন

October 18, 2023 | 8:21 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরিশাল: দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকার প্রতি বছরের মতো এবারও ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলাধীন সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে মাছ ধরছেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানের পরও কোনোভাবে থামছে না ইলিশ শিকার। নিষেধাজ্ঞার ৫ দিনে কিছু জাল জব্দ ছাড়া তেমন কোনো সাফল্য নেই উপজেলা মৎস্য অফিসের। তালিকাভুক্ত জেলেরা বলছেন, এখন যারা মাছ ধরছেন তাদের বেশিরভাগই মৌসুমি জেলে, শখের শিকারী!

সরেজমিনে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বিষখালী নদীর হদুয়া লঞ্চঘাট, পুরান হদুয়া বাজার, নলবুনিয়া, ভবানীপুর, ইসলামপুর, তেঁতুলবাড়িয়া লঞ্চঘাট ও সুগন্ধা নদীর অনুরাগ, দপদপিয়া, মাটিভাঙা এলাকায় চলছে অবাধে মা ইলিশ মাছ নিধন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ক্ষমতাসীন দলের নেতা, প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ী ছত্রছায়ায় মা ইলিশ নিধন করছে জেলেরা।

আগে নদীতে জাল ফেললে দু-চারটা ইলিশ ধরা পড়ত। কিন্তু এই সময়ে (নিষেধাজ্ঞা চলাকালে) নদীর নির্দিষ্ট পয়েন্টে জাল ফেলতে পারলেই ডিমওয়ালা ইলিশের সঙ্গে প্রচুর ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে। ধরার পরপরই প্রশাসনের নজর এড়াতে, জেলেরা নৌকা থেকে নামিয়ে নদীর তীরের ঝোপ-জঙ্গলে ও কচুরিপানার মধ্যে মাছ লুকিয়ে রাখাছে। সস্তায় ইলিশ কিনতে ক্রেতারা মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলে করে নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে এসব মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় কার্ডধারী কোনো জেলে মা ইলিশ শিকার করতে গিয়ে ধরা পড়লে ‘জেলে কার্ড’ বাতিলসহ তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে; প্রশাসনের এমন সর্তকতা কারণে কার্ডধারী অনেক জেলে নিজে নদীতে না নেমে নৌকা ও জাল দিয়ে মৌসুমি জেলেদের সহযোগিতা করছেন। এজন্য মাছের একটা ভাগ নিচ্ছেন তারা। এলাকার কিছু লোকও মৌসুমি জেলেদের কাছে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকায় নৌকা ভাড়া দিচ্ছেন। এসব মৌসুমি ইলিশ নিধনকারীরা স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে নৌকাপ্রতি ২০/২৫ হাজার টাকার চুক্তি করে নদীতে নৌকা ভাসায় ইলিশ নিধনের জন্য।

এছাড়া প্রশাসন নদীতে অভিযানে এলে সঙ্গে সঙ্গে জেলেদের মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়োগ করা হয় বেশ কিছু তথ্য সরবরাহকারীকেও। বিনিময়ে তাদের প্রত্যেককে ৫০০-৬০০ টাকা করে দেওয়া হয়। তাদের কাজ হলো নদী পাড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং নদীতে প্রশাসন অভিযানে এলেই মা ইলিশ নিধনকারী মৌসুমি জেলেদের সাবধান করে দেওয়া।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মৌসুমি জেলে বলেন, ‘বর্তমানে প্রচুর ইলিশ জালে উঠছে। দিনের চেয়ে রাতেই বেশি নিরাপদ। তাই তারা রাতেই বেশি জাল ফেলছেন। বিক্রির জন্য তাদের কোনো চিন্তা করতে হয় না। সাধারণ ক্রেতারা নদীর তীরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন মাছ কেনার জন্য। কিছু ক্রেতা মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেন। ফোন দিলেই তারা এসে মাছ নিয়ে যান।’

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রমণ কুমার মিস্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ার আগ থেকেই জেলেদের সরকারি নিয়ম মানতে উদ্বুদ্ধ করেছি। আমরা যখনই সংবাদ পাচ্ছি, তখনই সে এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৪ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে৷ তবে কাউকে আটক বা জেল-জরিমানা করা যায়নি।’

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন