বিজ্ঞাপন

ঢাকায় নেপিডোর সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে যা থাকছে

May 16, 2018 | 7:54 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।। 

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠকে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে তাগাদা দেওয়া হবে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (মে ১৭) সকালে বৈঠকটি ঢাকার রাষ্ট্রীয় এক অতিথি ভবনে অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠকটি গত ১৫ জানুয়ারি নেপিডোতে অনুষ্ঠিত হয়।

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠকে ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক নেতৃত্ব দেবেন। অন্যদিকে, মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে নেপিডোর পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যাবাসনের জন্য আরও একটি তালিকা বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে নেপিডোকে দেওয়া হবে। পাশাপাশি দুই দেশের শূন্য রেখায় অবস্থানকারী প্রায় সাত হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে যেন মিয়ানমার সরাসরি ফিরিয়ে নিয়ে যায় সে বিষয়ে আবারও বিশেষ গুরুত্ব দেবে ঢাকা।

এ ছাড়া এই বৈঠকে যেসব বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রতিদিন কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। মিয়ানমার যেন এই বিষয়টি সম্পূর্ণ বন্ধ করে।

এ দিকে, ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ৮ হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা ঢাকার পক্ষ থেকে নেপিডোকে দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত মিয়ানমার প্রত্যাবাসন বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে গত ২৩ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, দুদেশের মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়।

রোহিঙ্গ সংকট সমাধানে গত ডিসেম্বর নেপিডোর সঙ্গে স্বাক্ষর করা চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, ‘৯ অক্টোবর ২০১৬ এবং ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালের পর যে সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদেরকে ফেরত নিবে মিয়ানমার। চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত ২২ জানুয়ারি চুক্তি স্বাক্ষরের দুইমাস পূর্ণ হলেও প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো একাধিক অজুহাতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে নেপিডো।

জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছে যে প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক জানান, যে কোনো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল এবং ঝামেলাপূর্ণ। এই জটিল এবং ঝামেলাপূর্ণ কাজটিকে আমরা সহজ ও সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। যাতে নির্যাতিত ও নিপীরিত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় তাদের বসত-ভিটায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ পায়।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে মিয়ানমারের নাগরিক প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কুয়েত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পুরো বিশ্ব।

সারাবাংলা/জেআইএল/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন