বিজ্ঞাপন

ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় প্রস্তুত চট্টগ্রাম

October 24, 2023 | 8:23 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম। জেলার ১৫টি উপজেলার ২০০টি ইউনিয়নের ২০০টি মেডিকেল টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচটি করে ৭৫টি, নয়টি আরবান ডিসপেনসারিতে নয়টি, স্কুল হেলথ ক্লিনিকে একটি, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঁচটি টিমসহ মোট ২৯০টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ কন্ট্রোল রুমও চালু করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের হামুনের কারণে জেলা উপজেলাতে ছুটিতে থাকা স্কল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কাজে যোগদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের সেবা গ্রহণের উদ্দেশ্যে বা তথ্য জানার জন্য আমাদের ২৪ ঘন্টা কন্ট্রোল রুল চালু আছে। আমাদের স্বাস্থ্যবিভাগও প্রস্তুত আছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জরুরি পরিস্থিতিতে উপজেলাসহ আমাদের মোট ২৯০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে।’

এদিকে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে চট্টগ্রামে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ কারণে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে অভিযান চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

এসময় নগরীর আকবরশাহ এলাকার বিজয় নগর ও ঝিল ১, ২, ৩, বেলতলীঘোনা, টাংকির পাহাড়, মতিঝর্ণা, ষোলশহর ও পোড়াকলোনীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ১০০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়।

কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার( ভূমি) উমর ফারুক সারাবাংলাকে জানান, সকাল থেকেই চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি হচ্ছে ছয় জন সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মানুষের জানমাল রক্ষায় কাজ করছে। মাইকিং থেকে শুরু করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দিচ্ছেন। আজ ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো থেকে ১০০ পরিবারকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য শুকনো থেকে শুরু করে প্রতিবেলার খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চট্টগ্রামের সব পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত পরিবারকে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

১১৪টি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহার করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক):

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১১৪টি স্কুলকে ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে চসিক। এছাড়া নগরীর দামপাড়ার চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগে চালু করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দামপাড়ার বিদ্যুৎ উপ-বিভাগের কার্যালয়ে এক জরুরি সভা থেকে ঘূর্ণিঝড় হামুনের বিপদ এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকা জনগণকে দ্রুত নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।কাউন্সিলরদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে তদারক করার নির্দেশ দেন মেয়র৷

দুপুর থেকে মেয়রের নির্দেশে রেডক্রিসেন্টের সহযোগিতায় চসিকের কর্মীরা উপকূলীয় ওয়ার্ডগুলোতে মাইকিং শুরু করে। এছাড়া দূর্গত ব্যক্তিদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ত্রাণের। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের নেতৃত্বে কাজ করছে রেসকিউ টিম। দুর্যোগের সময় কট্রোলরুমে ২৪ ঘণ্টা ০২৩৩৩৩৫৩৬৪৯ এ নম্বরে যোগাযোগ সেবা দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবেলায় চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নিজস্ব ‘অ্যালার্ট ৩’ জারিসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধসহ বন্দর জেটি থেকে সব জাহাজ সাগরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দুপুর একটায় আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী আগামীকাল (বুধবার) ভোর থেকে সকাল নাগাদ নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়া হামুন আরও শক্তি বৃদ্ধি করে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এসময় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন-চার ফুট বেশি জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় হামুন’র কারণে সন্ধ্যার পর চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ভোর ছয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদফতর নয় মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। ঘূর্ণিঝড় হামুন এখন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা বন্দর থেকে ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা বন্দর থেকে ২১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও কক্সবাজার থেকে ২৯৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছে।

সারাবাংলা/আইসি/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন