বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু টানেল পাড়ি দিয়েছে ৫৪২৯ গাড়ি, একদিনে টোল ১২ লাখ টাকা

October 30, 2023 | 9:56 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: খুলে দেওয়ার পর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৫ হাজার গাড়ি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল পার হয়েছে। এসময়ে টোল আদায় হয়েছে ১২ লাখ টাকা। গতকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) ভোর ৬টায় টানেল সাধারণ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু টানেলের সহকারী প্রকৌশলী (টোল ও ট্রাফিক) তানভীর রিফা সারাবাংলাকে জানান, সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৪২৯টি গাড়ি টানেল পার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে মোট ১২ লাখ ১৩ হাজার ৩০০ টাকা।

দ্বিতীয় দিনের প্রথম দু’ঘণ্টায় অর্থাৎ সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৬০টি গাড়ি থেকে ৩৯ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। সকাল গড়াতেই যানবাহনের চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী রিফা।

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের মধ্যে টানেল খুলে দেওয়ার পর রোববার দিনভর মোটামুটি গাড়ির চাপ ছিল। তবে হরতাল শেষে সন্ধ্যা থেকে গাড়ির চাপ বাড়ে।

বিজ্ঞাপন

টানেলের কর্মকর্তাদের হিসেব অনুযায়ী, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় দুই হাজারেরও বেশি গাড়ি টানেল পার হয়েছে।

টানেল খোলার পর রোববার ভোর ৬টায় আনোয়ারা প্রান্ত দিয়ে প্রথম পাড়ি দেন মুন্সীগঞ্জের ব্যবসায়ী জুয়েল রানা। পতেঙ্গা প্রান্ত দিয়ে টানেল পাড়ি দেয় ‘বিডি বাস লাভার’ নামে একটি গ্রুপের সদস্যদের বহনকারী মারশা পরিবহনের একটি বাস।


শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১২টা ২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী গাড়িবহর নিয়ে নিজ হাতে টোল পরিশোধ করে টানেল পার হন। মাত্র তিন মিনিটে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেল পাড়ি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হন দক্ষিণ প্রান্তে কর্ণফুলী উপজেলার কোরিয়ান ইপিজেড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায়।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, এদিন প্রধানমন্ত্রীর বহরে ২১টি গাড়ি ছিল। প্রধানমন্ত্রী মোট ৪ হাজার ২০০ টাকা টোল পরিশোধ করেন।

বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য গত আগস্টে টোল হার চূড়ান্ত করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ। রোববার (২৯ অক্টোবর) টানেল খুলে দেওয়ার দিন থেকে সেটি কার্যকর হয়েছে।

টানেলের মধ্য দিয়ে যেতে হলে ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার), জিপ ও পিকআপকে দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা করে। আর মাইক্রোবাসের জন্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। ৩১ বা এর চেয়ে কম আসনের বাসের জন্য ৩০০ এবং ৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসনের জন্য ৪০০ টাকা টোল দিতে হচ্ছে। টানেলে দিয়ে যেতে হলে ৫ টন পর্যন্ত ট্রাককে ৪০০ টাকা, ৫ দশমিক ১ টন থেকে ৮ টনের ট্রাককে ৫০০, ৮ দশমিক ১ টন থেকে ১১ টনের ট্রাককে ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে। তিন এক্সেলবিশিষ্ট ট্রাক-ট্রেইলরের টোল চূড়ান্ত করা হয়েছে ৮০০ টাকা। চার এক্সেলের ট্রাক-ট্রেইলরকে দিতে হচ্ছে ১০০০ টাকা। এর বেশি ওজনের ট্রাক-ট্রেইলরকে প্রতি এক্সেলের জন্য ২০০ টাকা করে অতিরিক্ত দিতে হবে।

উল্লেখ্য, কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে চীনের সাংহাই সিটির আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ টানেল নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধানে টানেলের নির্মাণ কাজ করেছে চীনা কোম্পানি ‘চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’।

বিজ্ঞাপন

৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দুই সুড়ঙ্গপথের এই টানেলে প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার, ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতা। টানেলে দু’টি টিউব দিয়েই যানবাহন চলাচল করবে। একটির সঙ্গে অপর টিউবের দূরত্ব ১২ মিটারের মত। প্রতিটি টিউবে দু’টি করে মোট চারটি লেইন তৈরি করা হয়েছে। টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম ও প্রান্তে থাকছে ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক।

এছাড়া ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজ রয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে। এ প্রান্তেই রয়েছে টোলপ্লাজা। উভয়দিকে আছে ওজন স্কেল।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন