বিজ্ঞাপন

নারী-শিশুর প্রতি নির্যাতন বেড়েছে অক্টোবরে

November 1, 2023 | 11:13 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে এর আগের সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল ৩৩৯টি। অন্যদিকে অক্টোবর মাসে এমন ঘটনা ঘটেছে ৩৫৮টি।

বিজ্ঞাপন

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) অক্টোবর মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ১৮টি জাতীয় দৈনিক ও অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নিজস্ব মানবাধিকার কর্মীদের মাধ্যমে যাচাই করা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ জরিপ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জরিপ বলছে, অক্টোবর মাসে ২১১ জন নারী ও কন্যাশিশু নানামুখী নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। ১৩টি জাতীয় দৈনিকের খবর থেকে মহিলা পরিষদ এই তথ্য সংগ্রহ করেছে।

এমএসএসের তথ্য অনুযায়ী অক্টোবর মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ছিল ৫৯টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ১২টি এবং ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ছিল একটি। এসব ঘটনার শিকার নারী-শিশুর মধ্যে সাতজন প্রতিবন্ধী। ধর্ষণের শিকার ৫৯ জনের মধ্যে ১৩টি শিশু, ৩৪টি কিশোরী। অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে চার কিশোরী। এর বাইরেও ১৩টি ধর্ষণচেষ্টা, ৩৩টি যৌন হয়রানি ও ৮২টি শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে অক্টোবরে।

বিজ্ঞাপন

সদ্য সমাপ্ত এই মাসে একটি শিশু, ১৪ জন কিশোরী ও ৪৪ জন নারীসহ মোট ৫৯ জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের শিকার তিন কিশোরী ও এক নারী। এক শিশু, পাঁচ কিশোরী ও এক নারী নিখোঁজ রয়েছেন। এ ছাড়াও অক্টোবর মাসে ১১ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ মোট হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৫ জন। এর মধ্যে শিশু-কিশোরীর সংখ্যা ২৩। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন ৭৭ জন।

এমএসএফের প্রতিবেদন বলছে, প্রতিশোধ, পারিবারিক বিরোধ, যৌতুক, প্রেমঘটিত, অভিমান, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া ইত্যাদি কারণে হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে। এ মাসে শারীরিক নির্যাতন ও পারিবারিক কলহের ছয়টি ঘটনা সালিশে মীমাংসা করা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণচেষ্টার তিনটি ঘটনা সমাজপতিরা আপস করেছেন। তারা প্রচলিত আইনকে অবজ্ঞা করে বেআইনিভাবে সালিশে মীমাংসার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

অক্টোবরে সাতটি মৃত ও দুটি জীবিতসহ মোট ৯ নবজাতককে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। শিশু পরিত্যক্ত করার ঘটনাকে অমানবিক ও নিন্দনীয় হিসেবে ঘোষণা করে এমএসএফ বলছে, এসব শিশুদের কী কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা নিরুপণের চেষ্টা করছে না।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হিসাব অনুযায়ী নির্যাতনের শিকার ২১১ জন নারী ও কন্যার মধ্যে ধর্ষণের শিকার ২৭টি শিশুসহ ৪০ নারী। এর মধ্যে আটটি শিশুসহ ১০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার। এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে সাত কন্যাশিশুসহ ১১ জনকে।

মহিলা পরিষদের প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, অক্টোবর মাসে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ১২ কন্যাশিশুসহ ১৬ জন। উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছে দুই শিশু। অগ্নিদগ্ধের কারণে মৃত্যু হয়েছে একজনের। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে এক কন্যাশিশুসহ সাতজনকে।

এর বাইরেও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে দুই শিশুকন্যাসহ ৯ জন। পারিবারিক সহিংসতার ঘটনায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে তিনজন। দুই গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে একজন হত্যার শিকার হয়েছে।

এ ছাড়া অক্টোবরে বিভিন্ন কারণে ১০ কন্যাশিশুসহ ৪৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তিনজনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ছয় কন্যাসহ ২৪ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ১১ কন্যাসহ ২৫ জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে এক কন্যাশিশুসহ চারজন আত্মহত্যার প্ররোচনার শিকার হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

মহিলা পরিষদের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তিন কন্যাসহ চারজন অপহরণের ঘটনার শিকার হয়েছে অক্টোবরে। এ ছাড়াও এক শিশুকন্যাকে অপহরণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ মাসে সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন দুজন। বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটেছে একটি, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে দুটি। এ ছাড়া চার শিশুকন্যাসহ ১২ জন বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন