বিজ্ঞাপন

আগামী নির্বাচনেও জিতবে নৌকা— আশা শেখ হাসিনার

November 4, 2023 | 11:42 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কা জিতবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে আরামবাগে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আশাবাদ করেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেল চড়ে মতিঝিলে থেকে আরামবাগের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে যান। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ আয়োজনে এই সমাবেশ হয়। তার আগে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বহু প্রতিক্ষীত মেট্রোরেল সার্ভিসের দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন ও পূর্ব-পশ্চিম এমআরটি লাইন-৫: নর্দার্ন রুটের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।

সমাবেশে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের তফসিল যেকোনো সময় ঘোষণা হবে। নির্বাচনে যাকেই প্রার্থী দিই সেটা কানা-খোড়া যেই হোক; নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। বিজয়ী করবেন কি না হাত তুলে ওয়াদা করেন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘মেট্রোরেল চড়ে এই সভায় যোগদান করেছি। ঢাকার জন্য, ঢাকাবাসীর জন্য এই মেট্রোরেল হচ্ছে উপহার। সেই উপহার আপনাদের জন্য দিয়ে গেলাম। যারা উত্তরায় বসবাস করেন মাত্র ৩৮ মিনিট বা ৪০ মিনিটের মধ্যে মতিঝিল পৌঁছে যাবেন। যানজটে কষ্ট পেতে হবে না। রাস্তায় আটকে থাকতে হবে না। এই ঢাকায় যারা কর্মজীবী, যারা চাকরিজীবী, ছাত্র-শিক্ষক সকলেই, বিশেষ করে নারীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবেন মেট্রোরেলের মাধ্যমে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষের উন্নত জীবন। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি যত বেশি ধ্বংসাত্মক কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশকে টেনে তুলেছে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে মর্যাদা পেয়েছে। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারাবিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। ওরা মর্যাদা নষ্ট করেছিল। আমরা মর্যাদা আরও উন্নত করেছি। কাজেই বাংলাদেশের মানুষকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’

আওয়ামী লীগ সরকারের টানা মেয়াদে শিক্ষার হার বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজে তো ফেইল। দিয়েছিল মেট্রিক পরীক্ষা। পাস করেছিল কিসে? উর্দু আর অংকে। উর্দু তো তার প্রাণের কথা। কারণ, তার হৃদয়ে আছে পাকিস্তান, পেয়ারে পাকিস্তান। কাজেই উর্দুতে পাস আর টাকার অংকটা বেশি চেনে। টাকা গুনতে পারে ওই দুইটা সাবজেক্টেই পাস। সেই জন্যই বাংলাদেশের মানুষকে শিক্ষায়-দীক্ষায় তারা উন্নত করতে চায় না।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধিসহ নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে দেশের উন্নয়ন হয়। আর ওরা আসে ধ্বংস করতে। কাজেই এই ধ্বংস যারা করবে তারা যেন আর এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

বিএনপি বিদেশ প্রীতির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথায় কথায় বিদেশে নালিশ করে। কারণ, দেশের মানুষের কাছে ঠাঁই নাই। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশে যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছি। আজকে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ ব্যহত করতে পারবে না। বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।’

তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ করাসহ আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন সমস্ত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ; ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। শিক্ষায়-দীক্ষায়, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে আমার দেশের মানুষ উন্নত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি, এখন মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংশন তার কারণে সারাবিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। এই মুদ্রাস্ফীতিতে বাংলাদেশের মানুষ যেন কষ্ট না পায় তার জন্য আমরা পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। যাতে স্বল্প মূল্যে চাল-ডাল-তেল কিনতে পারেন- সেই ব্যবস্থা করেছি।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি জানি, বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এই জন্য আমি ভীত নই। আমি বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি। বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। আমার তো হারাবার কিছু নাই। আমার পাবারও কিছু নেই। একটাই লক্ষ্য এই বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে।’

শেষে নিজে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ উচ্চারণ করে এবার জিতবে নৌকা, এবার জিতবে নৌকা স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন শেখ হাসিনা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন- দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের এমপি রাশেদ খান মেনন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খোকন, আনোয়ার হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রমুখ। যৌথভাবে সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন