বিজ্ঞাপন

পুলিশ হত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রদল নেতা আমান: সিটিটিসি

November 7, 2023 | 5:26 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ছিল পুলিশের ওপর হামলার মাধ্যমে তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়া। প্রয়োজনে এক বা একাধিক পুলিশ সদস্যকে হত্যার মাধ্যমে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা, যাতে করে একটি নতুন ইস্যুর সৃষ্টি হয়। এরই ভিত্তিতে নয়াপল্টনে সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে হত্যা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

এর আগে, সোমবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আমান উল্লাহ আমানকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি। আমান বিএনপির সমাবেশে পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় প্রধান নেতৃত্বদানকারী। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় আমান উল্লাহ আমান পুলিশ সদস্য আমিরুল হক পারভেজকে হত্যা করে। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ সদস্যরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করে। তবে পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে এবং সর্বোচ্চ সহনশীলতার পরিচয় দেয়। বিক্ষোভকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কনস্টেবল পারভেজের নিথর দেহের ওপরে বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘গত ২৮ নভেম্বর বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সমাবেশের দিন আমান তার অনুসারীদের নিয়ে নয়াপল্টনকেন্দ্রিক মঞ্চের পাশে অবস্থান নেয়। মঞ্চে অবস্থিত বিএনপির ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ছিল পুলিশের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস হামলার মাধ্যমে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়া। প্রয়োজনে এক বা একাধিক পুলিশ সদস্যকে হত্যার মাধ্যমে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা, যাতে করে একটি নতুন ইস্যুর সৃষ্টি হয়।’

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘কাকরাইলে সমাবেশে উপস্থিত বিএনপি কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করলে পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কাকরাইলে সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের হাইকমান্ড নেতাদের নির্দেশে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি পার্টি অফিসের পাশে ভিক্টরি হোটেলের পাশের গলি দিয়ে গ্রেফতার আমান ছাত্রদলের একটি বড় অংশ নিয়ে পুলিশের ওপরে হামলা করার জন্য অগ্রসর হয়। সমাবেশকেন্দ্রিক দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে আগে থেকেই তাদের জানা ছিল। সে তার দলবল নিয়ে অগ্রসর হতে থাকে।’

তিনি জানান, পল্টন টাওয়ারের সম্মুখে এসে অগ্রসরমান দলের একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয় নগর পানির ট্যাংকের পাশ দিকে যায় এবং অপর অংশটি তার নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের আগের প্রান্তের দিকে অগ্রসর হয়। বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পরে ছাত্রদলের কর্মীরা সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপরে অতর্কিত হামলা করে। এ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বক্স কালভার্টের পশ্চিম প্রান্তে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য করার জন্য আগের প্রান্তের পুলিশ সদস্যরা বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়। পশ্চিম দিকে অগ্রসরমান পুলিশ দলটির ওপর আমানের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় হামলা শুরু করে বিএনপি কর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘ছাত্রদলের এই অংশটি আমানের নেতৃত্বে পুলিশদের ওপরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ সদস্যরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ছাত্রদলের আক্রমণ প্রতিহতের চেষ্টা করে। জানমাল রক্ষা ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে এবং সর্বোচ্চ সহনশীলতার পরিচয় দেয়।’

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের একটি বড় অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পূর্বদিকে অবস্থিত ডিআর টাওয়ার ও আশেপাশের স্থাপনায় অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় আমানের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা পুলিশ সদস্যদের হামলা করার জন্য ক্রমাগত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। বিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। তখন তাকে নৃশংসভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে তাকে।’

তিনি বলেন, ‘এ সময় কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকে। পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের মাথা থেকে পা পর্যন্ত সারা শরীর গুরুতর জখম হয়। বিক্ষোভকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কনস্টেবল পারভেজের নিথর দেহের ওপরে বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকে।এর পর আমান তার অনুসারীদের নিয়ে বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম দিক দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন