বিজ্ঞাপন

অবরোধে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ছাড়েনি দূরপাল্লার বাস

November 9, 2023 | 4:46 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সারা দেশে চলছে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তৃতীয় দফার অবরোধ। রাজধানীতে প্রায় প্রতিটি সড়কেই সবধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিলো চোখে পড়ার মতো তবে ব্যক্তিগত গাড়ি খুব কম চলাচল করেছে।

সরেজমিনে সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায় কোন বাস ছাড়েনি। সেন্টমার্টিন পরিবহনের ফকিরাপুল কাউন্টারের ম্যানেজার জানান, অবরোধের দুইদিন গতকাল ও আজ কোন বাস ছাড়া হয়নি। আজ রাত থেকে বাস ছাড়া হবে। যদি অবরোধ না থাকে তাহলে আগামীকাল থেকে দিনের বেলা বাস ছাড়বে।

বিজ্ঞাপন

সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পথে চলাচলকারী বাসগুলোও তেমন ছাড়েনি। টার্মিনাল ও এর আশেপাশে অলস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বাসগুলো। যাত্রীও ছিল কম।

সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনও পরিবহন। টার্মিনালে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের উপস্থিতি দেখা গেলেও তাদের সংখ্যা ছিল কম।

বিজ্ঞাপন

সেন্টমার্টিন পরিবহনের ফকিরাপুল কাউন্টারের ম্যানেজার রফিকুল আলম জানান, কালকেও কোনো বাস ছেড়ে যায়নি আজও ছাড়া হয়নি। দুই দিনের অবরোধ আজ শেষ হচ্ছে তাই রাত থেকে বাস ছাড়া হবে। যদি অবরোধ না থাকে তাহলে আগামীকাল থেকে দিনের বেলাও বাস চলবে।

মহাখালী টার্মিনালেরও প্রায় একই অবস্থা। বাসগুলোকে টার্মিনালের আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রতিদিনের মত ছিল না যাত্রীর চাপ। সকাল থেকে দুই থেকে তিনটি বাস ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন টার্মিনালে থাকা পরিবহন কর্মীরা।

কথা হয় বাসের হেলপার কামরুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, অবরোধে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়, আগুন দেওয়া হয়। আবার যাত্রীও পাওয়া যায় না। তাই গাবতলীর এই টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। কোনো কোনো ড্রাইভার অবরোধের দুই দিনে টার্মিনালেই আসে নাই।

বিজ্ঞাপন

তবে অবরোধের এই সময়টাতে ট্রেনে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। সরেজমিনে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ট্রেন থেকেই বহু যাত্রী প্লাটফর্মে নামছেন। আবার অনেকে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছেন। টিকিট কাউন্টারেও ছিল যাত্রীদের ভিড়।

যাত্রীরা জানান, সড়কে দূরপাল্লার বাস নেই বললেই চলে। তাছাড়া ভাংচুর, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা। তাই নিরাপদ বাহন হিসেবে সবাই ট্রেনকে বেছে নিয়েছেন।

কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে নরসিংদীর যাত্রী মোস্তাফা কামাল সারাবাংলাকে বলেন, অবরোধের কারণে গত কয়েক দিন বাসা থেকেই বের হয়নি। কিন্তু আজকে জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি যেতে হচ্ছে। কিন্তু দূরপাল্লার কোনো বাসই ছাড়েনি। তাই ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তবে এ অবরোধে ‘স্বস্তির বাহন’ মেট্রোরেলে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। মেট্রোতে চড়ে নিরাপদবোধ করার পাশাপাশি কম সময়ের যাত্রাকে স্বস্তিদায়ক বলছেন যাত্রীরা। তেমনি একজন মাসুদ কায়সার। তিনি মিরপুর থেকে মেট্রোতে উঠেছেন তার গন্তব্য মতিঝিল।

মাসুদ কায়সার সারাবাংলাকে বলেন, বাসে যাচ্ছি না কারণ কখন যে আগুন দিয়ে দেয় তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ভয়ই লাগে। মেট্রোতে আগুন দেয়ার ভয় নেই। আবার সময়ও কম লাগে।

এদিকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেগুলো পাহারায় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও অবরোধবিরোধী মিছিল করেছেন।

এদিন রাজধানীর গুলিস্তান, ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরা, বাড্ডা, যাত্রাবাড়িতে অবরোধবিরোধী মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থান নিতে দেখা যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। সকাল থেকেই সেখানে খণ্ড-খণ্ড মিছিল নিয়ে থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা জড়ো হন।

মিরপুরে অবরোধ বিরোধী মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়।

উত্তরার আজমপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিব হাসানের নেতৃত্বে অবরোধ বিরোধী মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।উত্তরার জসিম উদ্দিন মোড়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খসরু চৌধুরীর নেতৃত্বে অবরোধ বিরোধী মিছিল হয়েছে।

অন্যদিকে, টানা দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচির শেষ দিনে রাজধানীর দুই-একটি জায়াগায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবরোধ সমর্থনে মিছিল করেছে।

সারাবাংলা/আরএফ/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন