November 12, 2023 | 7:06 pm
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম দশ দিনে ৭৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গড়ে প্রতিদিন দেশে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ৮ কোটি ডলার। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ২৩০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।রোববার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদননে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম ১০ দিনে আসা ৭৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
জানা গেছে, তীব্র ডলার সংকটের মধ্যে প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে আশা জাগাচ্ছে। ডলার সংকট কাটানো প্রবাসীদের আগে থেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে সরকার। সম্প্রতি ব্যাংকগুলো ডলার পেতে প্রণোদনার পরিমাণ অঅরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর এবিবি ও বাফেদা গত প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা বাড়িয়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে। এর সঙ্গে রেমিট্যান্সে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে প্রণোদনা দিতে পারবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারে ১১৫ টাকার বেশি নয়: এদিকে ডলার সংকটের কারণে গত বৃহস্পতিবার খোলা বাজারে প্রতি ডলার ১২৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়াও এর আগের কয়েকদিন প্রতি ডলার ১২০ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে উঠানামা করেছে। এই রেমিট্যান্সের এই সংকটের মধ্যে ব্যাংকগুলো ইচ্ছামতো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দিতে শুরু করে। কোন কোন ব্যাংক রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১২২ টাকার বেশি দিচ্ছে এমন খবর গণমাধ্যমে আসার পর পরই জরুরি বৈঠকে বসে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা। গত বুধবার (৮ নভেম্বর) যৌথ বৈঠকে নতুন সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠন দুটি। সিদ্ধান্ত মোতাবেক, এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দাম কোনোভাবেই ১১৫ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
বিভিন্ন অর্থবছরভিত্তিক রেমিট্যান্স: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান। এ ছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক হাজার ৬৩১ কোটি ডলার ,২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
পঞ্জিকাবর্ষ হিসাবে রেমিট্যান্স : ২০২২ সালে প্রবাসীরা দুই হাজার ১২৭ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে ২০২১ সালে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ দুই হাজার ২০৭ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে ২০২০ সালে দুই হাজার ১৭৪ কোটি ১৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০১৯ সালে এক হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার,২০১৮ সালে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, ২০১৭ সালে এক হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে এক হাজার ৩৬১ কোটি ডলার এবং ২০১৫ সালে এক হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।
সারাবাংলা/জিএস/একে