বিজ্ঞাপন

ভোটে যেতে প্রস্তুত জাপা, সরকারের ডাকের অপেক্ষায় জি এম কাদের

November 18, 2023 | 2:25 pm

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতীয় পার্টি (জাপা) দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আসন সমঝোতার জন্য আজ শনিবার বা কাল, অর্থাৎ যে কোনো সময় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। দলটির দায়িত্বশীল সূত্র সারাবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

সরকারি দলের সঙ্গে জি এম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এবং সিনিয়র কো-চেয়ারম্যানরা বৈঠকে বসবেন। তবে সরকারি দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠকে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদকে নিতে চাচ্ছেন না তারা। তিনি দলের সাংগঠনিক কোনো পদে না থাকার কারণে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দরকষাকষিতে রাখতে চাচ্ছেন না তারা। তবে নির্বাচনী প্রসঙ্গ নিয়ে দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের সঙ্গে রওশন এরশাদ বৈঠক করতে পারেন।

জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, জি এম কাদের সরকারি দলের কাছে ৬০টি আসন চাইবেন। সমঝোতার ভিত্তিতে আসনের সংখ্যা কমিয়ে ৫০টি পর্যন্ত অনড় থাকবেন জি এম কাদের।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। দলটির মহাসচিবকেও ফোনে পাওয়া যায়নি। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারনী ফোরাম প্রেসিডিয়াম কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সিনিয়র নেতারাও এই মুহূর্তে তাদের নাম প্রকাশ করে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না। এতে তারা মনোনয়ন পেতে সমস্যায় পড়তে পারেন বলে মনে করেন। ফলে দলটির নীতিনির্ধারকদের একজন নাম গোপন রাখার শর্তে কথা বলেছেন সারাবাংলার সঙ্গে। তিনি জানান, জি এম কাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তিনি এখন সরকারি দলের সঙ্গে সমঝোতার বৈঠকে বসতে অপেক্ষা করছেন। তবে জি এম কাদের সরকারি দল থেকে ডাক আশা করছে। তার নিজ উদ্যোগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাচ্ছেন না জি এম কাদের।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় পার্টির ওই সিনিয়র নেতা আরও জানান, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে জিএম কাদের ও দলটি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, দলের ভিতরেই নানা ধরনের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি চলছে। সম্প্রতি দলের ১৭ জন সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। দলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে চার থেকে পাঁচ জন কেবল জি এম কাদেরের সঙ্গে আছেন। আবার তৃণমূল জা পা অর্থাৎ, জেলা পর্যায়ের নেতারা জি এম কাদেরের সঙ্গে রয়েছেন। জাতীয় পার্টির ওই নেতার মতে, ঘুড়ির নাটাই যখন রওশন এরশাদের হাতে চলে যাবে, তখন জি এম কাদের একা হয়ে পড়বেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য তারা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। মনোনয়নের ফরমও দুই একদিনের মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছে বিক্রি শুরু হবে। আটটি বিভাগে প্রায় সাত-আট শ সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন চাইবেন বলে দলটির হাইকমান্ডের ধারণা করছে। সে ক্ষেত্রে মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই এবং সাক্ষাৎকার নিতে প্রায় ১০ দিন সময় লাগবে। এজন্য জাতীয় পার্টি সময় নষ্ট করতে চাচ্ছে না।

এদিকে দলটি ইতোমধ্যে নির্বাচনি ইশতেহার চূড়ান্ত করেছে। ইশতেহারে প্রশাসন বিকেন্দ্রিকরণের জন্য আটটি প্রদেশ গঠনের কথা বলা হয়েছে। জাতীয় পার্টির ইশতেহারে আটটি প্রদেশের নামও থাকবে। এগুলো হলো- উত্তর বঙ্গ প্রদেশ, বরেণ্য প্রদেশ, জাহাঙ্গীরনগর প্রদেশ, জালালাবাদ প্রদেশ, জাহানাবাদ প্রদেশ, চন্দ্রদীপ প্রদেশ, ময়নামতি প্রদেশ এবং চট্টলা প্রদেশ।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় পার্টির ইশতেহারে শিক্ষাব্যবস্থার সংশোধন বা পরিবর্তন করারও প্রতিশ্রুতি থাকবে। ইশতিহারে থাকা অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রতিশ্রুতিগুলো হবে, পঞ্চম শ্রেনী এবং ৮ম শ্রেনীর পরীক্ষা বাদ দেওয়া, স্নাতক শ্রেনী পর্যন্ত নারী শিক্ষা অবৈতনিক করা, প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করা, গুচ্ছগ্রাম পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। এছাড়া, পল্লী রেশনিং ব্যবস্থা করা, সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় সংসদে ৩০টি আসন সংরক্ষিত করা, হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা, সারাদেশে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং জ্বালানির মূল্য স্থিতিশীল রাখার প্রতিশ্রুতি থাকবে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে।

অপরদিকে, শনিবার (১৮ নভেম্বর) দলটির মহাসচিব একটি ভিডিওবার্তায় বলেছেন, সংলাপের জন্য সরকারি দল উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/আইই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন