বিজ্ঞাপন

বড় পদের আশায় বিস্ফোরকদ্রব্য মজুত করতেন তারা, দাবি র‌্যাবের

November 22, 2023 | 4:43 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে নাশকতা সৃষ্টি করতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকদ্রব্য মজুত রেখে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে সরবরাহের অভিযোগে যুবদলের দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে, মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল কালভার্ট রোড এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মুগদা যুবদল নেতা মো. বাবুল মিয়া (৪০) ও মো. মাসুদ শেখ (৪৫) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ৬ কেজি ১০০ গ্রাম বিস্ফোরক পাউডার, ১৫৭ বোতল ফেনসিডিল, একটি ডিজিটাল পালা, ১০টি মোবাইল ফোন এবং ২২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল কালভার্ট রোড এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নাশকতাকারী মুগদা থানাধীন ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদল নেতা বাবুল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি মুগদা থানার যুবদলের পদ প্রত্যাশী। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকার চুক্তি ও রাজনৈতিক বড় পদের প্রলোভনে এই বিস্ফোরকদ্রব্য তারা মজুত করেছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরকদ্রব্য দিয়ে ককটেলসহ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অবরোধ ও হরতালে জনমনে আতঙ্ক, জানমালের ক্ষতি সাধন ও প্রাণনাশের কারণ সৃষ্টি করে আসছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির জন্যই এই উচ্চ ক্ষমতার বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল মিয়া স্বীকার করেছেন।’

এর আগে, ২০১৮ সালে সংঘটিত নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার সময় তাকে হাতে নাতে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘আসামি মাসুদ শেখ ১৯৯৮ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ২০০২ সালে ঢাকা আল আমিন বিস্কুট কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসাবে ৬ বছর চাকরি করে। চাকরির পাশাপাশি অধিক লাভের আশায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ নিজেকে বিএনপির সমর্থক বলে পরিচয় দেন।’

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার বাবুল রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এবং একই দলের সম্পৃক্ততার কারণে মাসুদ তার মাদক ব্যবসা বিস্তারের জন্য বিগত এক বছর ধরে তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। বাবুল মিয়া মুগদা এলাকায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার পর পালিয়ে গিয়ে ফকিরাপুলের কালভার্ট রোডে মাসুদের বাসায় আত্মগোপন করেন। মাসুদ, বাবুল মিয়াকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করে এবং বিস্ফোরকদ্রব্য নিজ বাসায় অতি গোপনীয়ভাবে রাখতে সহায়তা করেন।

মাসুদ দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মাদক সরবরাহ করে আসছে। ইতোপূর্বে সে মাদকসহ তার নিজ এলাকা খুলনাতে গ্রেফতার হয়। তার পরিবার বিগত ১৫ বছর ধরে বাসাবো এলাকায় বসবাস করে কিন্তু মাসুদ ফকিরাপুলের কালভার্ট রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে মাদকদ্রব্য এবং বিস্ফোরকদ্রব্য মজুত করেন। অবরোধকে কেন্দ্র করে তার বাসায় ককটেলসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি করা হতো এবং তার বাসায় বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতা-কর্মীর যাতায়াত ছিল।

পুরান ঢাকায় আদালতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। একজন বোরকা পরিহিত নারীর ব্যাগে করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।’

পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল মার্কেটে নজরদারির বিষয়ে জানতে চাইলে অধিনায়ক মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলছি না। এই বিস্ফোরকের উৎস নিয়ে কাজ করছি। আমাদের গোয়েন্দারা নজরদারি করছেন।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসআর/ইআ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন