বিজ্ঞাপন

হজ প্যাকেজ ৪ লাখ টাকা চেয়ে আইনি নোটিশ

November 28, 2023 | 6:29 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলতি বছরের হজ প্যাকেজের খরচ কমিয়ে চার লাখ টাকা নির্ধারণ করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান বলেন, হজের মোট খরচ চার লাখ টাকায় সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সেখানে সরকার সাধারণ হজ প্যাকেজ পাঁচ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। আর বিশেষ প্যাকেজ ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। হজের মতো একটি ফরজ ইবাদতের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করা প্রতিবন্ধকতার নামান্তর।

নোটিশ পাওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। তা না করলে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে জানান আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান।

এর আগে গত ৮ নভেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ থেকে হজ প্যাকেজ (হিজরি-১৪৪৫/ খ্রিস্টাব্দ ২০২৪/০) গেজেট আকারে জারি করা করা হয়। আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের হজ প্যাকেজের হজযাত্রী প্রতি খরচ অত্যন্ত অযৌক্তিক, যা মানুষের নাগালের বাইরে।

বিজ্ঞাপন

এতে বলা হয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেটে মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৬৯ হাজার ৪১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অনেক বেশি। এতে বোঝা যায়, সরকার হজযাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করে বাড়ির মালিকদের অনুকূলে বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করেছে।

গেজেটে বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৩৪ টাকা। এ বিষয়ে নোটিশে বলা হয়েছে, এই ভাড়া অত্যন্ত অতিরিক্ত। এটি হজযাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা। আর জমজমের পানির বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা খুবই আপত্তিকর। এই বরকতময় পানি বিক্রি করে কোনো সরকার আর্থিক সুবিধা নিতে পারে না।

সৌদির মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা এবং আবার ‘ডি’ ক্যাটাগরির অধীনে মিনায় পাঁচ দিন থাকার জন্য সার্ভিস চার্জ বাংলাদেশি টাকায় ৬২ হাজার ২৭১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে হজ প্যাকেজে। এই খরচকে অতিরিক্ত অভিহিত করে নোটিশে বলা হয়, হজযাত্রীদের ওপর এ ধরনের অর্থ আরোপ প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ বা সৌদি সরকার মহান আল্লাহর মেহমানদের কাছ থেকে অর্থ উপার্জনে খুবই আগ্রহী।

বিজ্ঞাপন

এ বছরের হজ প্যাকেজে বাংলাদেশি টাকায় ৯ হাজার টাকা ভিসা ফি, ইলেকট্রনিক সার্ভিস, গ্রাউন্ড সার্ভিস ফি, ক্যাম্প ফি হিসেবে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে। এসব ফি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন উল্লেখ করে আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, সৌদি আরব সরকার এই ভিসা ফি আরোপ করতে পারে না। কারণ হজযাত্রীরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি তাদের পবিত্র দায়িত্ব পালনের জন্য পবিত্র মক্কা ও মদিনায় যাচ্ছেন।

নোটিশে বিমান ভাড়া নিয়েও আপত্তির কথা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, বিমান ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা, যেখানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে বর্তমান বিমান ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় ৭৬ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। প্রতি বছর সরকার হজযাত্রীদের বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন্স থেকে বিমানের টিকিট কিনতে বাধ্য করে, যেন ওই এয়ারলাইন কোম্পানিগুলোকে অবৈধ সুবিধা দেওয়া যায় এবং হজযাত্রীদের স্বাধীনতা ও পছন্দের ক্ষতি হয়। এ ছাড়াও প্রতি হজ গাইডের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকায় ১৩ হাজার ৫৩ টাকা ফির নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অপ্রাসঙ্গিক। সরকার হজযাত্রীদের এই টাকা অযৌক্তিকভাবে পরিশোধ করতে বাধ্য করে।

এতে আরও বলা হয়, বাড়ি ভাড়া, পরিবহন খরচ, স্বাস্থ্য বিমা সার্ভিস চার্জ এবং জমজমের পানিতে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করাও বেআইনি ও অনৈতিক। উভয় সরকারই হজযাত্রীদের ওপর এই ধরনের ভ্যাট আরোপ করতে পারে না। কারণ হজযাত্রীরা ভ্রমণকারী নয়, তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর মেহমান।

নোটিশে বলা হয়, আমরা হজযাত্রীদের সাধারণ ও বিশেষ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। এটি স্পষ্ট যে এই হজ প্যাকেজ প্রকৃত তথ্য ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়নি এবং হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য তৈরি করা হয়নি। বরং এটি মুনাফা অর্জনের নগ্ন স্বার্থে হজযাত্রীদের শোষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই প্যাকেজের এসব কর্মকাণ্ড থেকে জানা যায় যে বাংলাদেশ ও সৌদি সরকার ইসলামি চেতনা ও নৈতিকতা বজায় না রেখে হজযাত্রীদের উসকানি দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন