বিজ্ঞাপন

নৌকা ঠেকাতে ভোটের মাঠে জামাই-শ্বশুর!

December 3, 2023 | 7:42 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ-৫ (চৌহালী-বেলকুচি) আসনে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে অন্যান্য প্রার্থীদের পাশাপাশি নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। কিন্তু এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল। তাই এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে লড়াই নেমেছেন লতিফ বিশ্বাস। তার পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের মেয়ের জামাই নুরুল ইসলাম সাজেদুলও মনোনয়ন তুলে জমা দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করেছেন লতিফ বিশ্বাসের মেয়ের জামাই নুরুল ইসলাম সাজেদুল। ইতোমধ্যে তারা দুজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

সাবেকমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাইনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, কেউ চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারে। সে অনুযায়ী এবং আমার সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের চাওয়ার ভিত্তিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু নেত্রী (শেখ হাসিনা) বলে দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা যাবে, নির্বাচন করলে দলের কোনো বাধা নেই, তাই আমি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর এ জন্য আমি মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে জেলা পরিষদের সচিবের (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) কাছে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাজেদুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘সংসদ সদস্য নির্বাচন করার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এরপর জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলে জমাও দিয়েছি।’

আপনারা জামাই-শ্বশুর একই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, সেক্ষেত্রে কি কারও নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কেবল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হলো। এর পর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনেক প্রতিবন্ধকতাও থাকে। তাই এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আমি নির্বাচন করতে করতে যাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ১৯৯৬-২০০১ সাল ও ২০০৮-২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি মহাজোট সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও।

বিজ্ঞাপন

নূরুল ইসলাম সাজেদুল ২০১৯ সালের ১০ মার্চ দেশের প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর সিরাজুল ইসলাম। এরপর গত ২৩ নভেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। যা ২৬ নভেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গ্রহণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ৩৮১ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৮০ জন। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মোট চার জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে জয়ী হন নৌকার প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ৯২ হাজার ৭৩৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন শিল্প উদ্যোক্তা আব্দুল মজিদ মন্ডল। ওই সময় তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আতাউর রহমান পেয়েছিলেন ৪ হাজার ২৪৮ ভোট। এরপর ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে মোট ছয় জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল মমিন মন্ডল। নির্বাচনে মমিন মন্ডল (নৌকা) পেয়েছিলেন ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬১ ভোট ও মো. আমিরুল ইসলাম খান (ধানের শীষ) পান ২৮ হাজার ৩১৭ ভোট।

সারাবাংলা/পিটিএম

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন