বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ১১৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ, বাতিল ৩০

December 4, 2023 | 7:45 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাইয়ের দ্বিতীয় দিনে ১২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা। বাতিল হওয়া ১২ জনের মধ্যে সাতজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

বিজ্ঞাপন

এ নিয়ে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ২৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৩০ জনের মনোনোয়ন অবৈধ ও ১১৮ জনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বাতিল হওয়া প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন বৈধতার জন্য আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশন কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়।

মনোনোয়ন অবৈধ ঘোষণা করার মধ্যে চট্টগ্রাম মীরসরাই সংসদীয় আসনে একজন, ফটিকছড়িতে তিনজন, সন্দ্বীপে দুইজন, সীতাকুন্ডে চারজন, হাটহাজারীতে দুইজন, রাউজানে একজন, বোয়ালখালীতে পাঁচজন, ডবলমুরিংয়ে চারজন এবং বন্দর-পতেঙ্গায় একজন, পটিয়ায় তিনজন, সাতকানিয়াতে দুইজন এবং বাঁশখালীতে দুইজন আছেন।

বিজ্ঞাপন

সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম ৭, ১২, ১৪, ১৫ ও ১৬ আসনের মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের সাত জনের সকলের প্রার্থীতা বৈধ হয়।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে এক শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিলের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াস মিয়া ও গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী এম এ মতিনের বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় মনোনয়ন বাতিল হয়।

এদিকে, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৯ ও ১০ আসনের মনোনয়ন বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে নয়জনের সকলের প্রার্থীতা বৈধতা পেয়েছে। তবে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে চট্টগ্রাম-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এক শতাংশ ভোটারের নাম ও স্বাক্ষর জমা দিতে হয় মনোনয়নপত্রের সঙ্গে। এর মধ্যে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০ জন ভোটার যাচাই করা হয়। সেখানে তিনজনকে শনাক্ত করা যায়নি বলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ওসমান গনি ও ফয়সাল আমীন এবং বিএনএফের মঞ্জুরুল ইসলামের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়।

দেড় ঘণ্টার বিরতি দিয়ে দুপুর আড়াইটায় আবারও শুরু হয় প্রার্থীদের মনোনোয়ন বাছাইয়ের কাজ। চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ভোটারের তালিকায় গড়মিল থাকায় দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব ও আ ম ম মিনহাজুর রহমানের মনোনোয়ন অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপীর অভিযোগ থাকায় তার মনোনোয়ন বাতিল করা হয়। একই অভিযোগে ন্যাপের (মোজাফফর) প্রার্থী আশীষ কুমার সেনের মনোনোয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত দুইদিনে চট্টগ্রামের ১৬ জেলার প্রার্থীদের মনোনোয়ন যাচাই বাছাই করা হয়েছে। ৮৮ জনের মনোনোয়ন বাছাই করা হয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। দুইদিনে ১৪ জনের মনোনোয়ন বাতিল বলে গণ্য হয়েছে। বাকি ৭৪ জনের মনোনোয়ন বৈধ হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে। যে ১৪টি মনোনোয়ন বাতিল বলে গণ্য করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যই স্বতন্ত্র প্রার্থী।’

বিজ্ঞাপন

‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটার সমর্থকদের তালিকায় গরমিল থাকায় মনোনয়নগুলো বাতিল করা হয়। এছাড়া রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের অনেকের ট্যাক্স রিটার্ন, বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন কাগজের ঘাটতি দেখা যায়। যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তারা চাইলে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ আপিল করা যাবে।’

চট্টগ্রামের মোট ১৬টি আসনে মোট মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল ১৪৮টি। এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ২ দিনে ৮৮টির মধ্যে বৈধ হয়েছে ৭৪টি এবং বাতিল হয়েছে ১৪টি।

অপরদিকে, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ৬০টির মধ্যে বৈধ হয়েছে ৪৪টি এবং বাতিল হয়েছে ১৬টি মনোনয়নপত্র।

হুইপ সামশুলের শিক্ষাগত সনদ নিয়ে প্রশ্ন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই কালে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল ইসলাম চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী মুজিবুল হক। সঙ্গে সঙ্গেই হুইপের ছেলে শাহরুন চৌধুরী তার বাবার প্রত্যয়ন পত্র উপস্থাপন করেন।

তখন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, ‘আপিল করলে তা যথাযথভাবে করতে হয়। এ মুহূর্তে যাচাই-বাছাই করে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হলো। তবে চাইলে আপনারা নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করতে পারেন।’

পরে অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘মনোনয়ন ফরমে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েছেন এইচএসসি পাস। যে সনদটি দাখিল করেছেন, সেখানে ক্রমিক নম্বর ও রোল নম্বর নেই। আবার বর্তমানে তিনি জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে তার শিক্ষাগত স্ট্যাটাস দেখিয়েছেন বি-কম পাস। সব মিলিয়ে তার শিক্ষাগত সনদ নিয়ে আপত্তি রয়েছে।’

বিষয়টি নিয়ে আপিল করবেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখানে যেহেতু আপত্তি তোলা হয়েছে তাই কোনোভাবে আপিল না করার সুযোগ নেই। তবে এ ব্যাপারে আমার প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

হুইপের ছেলে নাজমুল হাসান চৌধুরী শারুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মনোনোয়ন দেওয়ার সময় বাবার শিক্ষাগত সনদ জমা দেওয়া হয়েছিল। ওগুলো অনেক পুরোনো। এটা নিয়ে কেনো প্রশ্ন করা হলো বুঝতে পারছি না।’

সারাবাংলা/আইসি/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন