বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজার ও ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ

December 14, 2023 | 4:43 pm

রজত রায়

বাংলাদেশের বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি, গার্মেন্টস, ঔষধ কোম্পানি কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কাজ করছেন অনেক বিদেশী নাগরিক। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে তাদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে দেশের ২৪ শতাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় বিদেশী কর্মীরা কর্মরত আছেন।

বিজ্ঞাপন

সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চ (সিডার) নামের একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান ও শ্রমবাজার পর্যালোচনা করে থাকে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত তাদের এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশে বেকারত্বের হার উচ্চ শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ যার শিক্ষাগত যোগ্যতা যত বেশি তার চাকরি পাওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা তত কম। যারা দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে, তাদের মধ্যে বেকারত্বের হার কম। কিন্তু যারা স্নাতক, অনার্স, মাস্টার্স পাশ করেছে, তাদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি। অর্থাৎ, উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্রুতগতিতে বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যুরো (বিবিএস) ২০২২ সালে শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারের হার এখন ১২ শতাংশ। আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী বিগত ৩০ দিনের মধ্যে কাজ প্রত্যাশী একজন মানুষ যদি সর্বশেষ ৭ দিনে মজুরির বিনিময়ে ১ ঘণ্টাও কাজ করার সুযোগ না পান, তাহলে তাকে বেকার হিসেবে ধরা হবে।

আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি প্রীতকরভাবেই অব্যাহত আছে। আমরা এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এর সময়ে আছি। মোট জনসংখ্যার এই সু-সময়কে আমাদের ব্যবহার করতে হবে। কারণ একটি জাতির জীবনে তা একবারই আসে, ৩০-৩৫ বছর স্থায়ী হয়। এই সময়ে দেশকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হয়। এরপর নির্ভরশীল জনসংখ্যা বাড়তে থাকে। এর মধ্যে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হলে তখন আর কোন সমস্যা হয় না। তাই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে আমাদের কাজের উপযুক্ত করে যোগ্য জায়গায় স্থান দিতে হবে।

বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী নাগরিকেরা বৈধ পথে বছরে কত টাকা আমাদের দেশ থেকে নিয়ে যায়? বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশ থেকে বিদেশী কর্মীরা বেতন-ভাতা হিসেবে ৯৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন বা ৯ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ নিজ দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৯৩ টাকা হারে) যার পরিমাণ ৮৭১ কোটি টাকা। বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর এমন চিত্র পেলেও ‘বাস্তব চিত্র কিন্তু ভিন্ন’-বলছে। বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা ও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে, তা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার উপরে। যারা পর্যটন ভিসায় এসে বিভিন্ন গার্মেন্টস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। অর্থাৎ তারা কাজ করার অনুমতি না নিয়েই বাংলাদেশে কাজ শুরু করেন। রপ্তানিমূখী তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে এসব বিদেশী নাগরিক কাজ করেন। বাংলাদেশে কত বিদেশী নাগরিক কাজ করেন, তার একটি হিসাব বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে জুন ২০২৩ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় উপস্থাপন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশে^র প্রায় ১১৫ টি দেশের ২০ হাজার ৯৮৮ জন নাগরিক ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করছেন। তার মধ্যে চীনের ৬ হাজার ৭৫ জন, ভারতের ৫ হাজার ৮৭৬ জন, রাশিয়ার ২ হাজার ৪৬৮ জন, শ্রীলঙ্কার ১ হাজার ২৪৬ জন, দক্ষিণ কোরিয়ার ৯২৪ জন, জাপানের ৫৫৭ জন, পাকিস্তানের ৪১৬ জন, ফিলিপাইনের ৪৬০ জন, থাইল্যান্ডের ৩৯৯ জন, বেলারুশের ৩৭৮ জন, কাজাখাস্তানের ২৬৯ জন, আমেরিকার ১৬৮ জন, দক্ষিণ কোরিয়ার ১৩৯ জন, মালয়েশিয়ার ১২৩ জন ও ইন্দোনেশিয়ার ১০৮ জন নাগরিক রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

অবশ্য অভিযোগ আছে, প্রচুর সংখ্যক বিদেশী নাগরিক পর্যটক ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাজ করেন। তারা কখনো আনুষ্ঠানিক হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হন না। বাংলাদেশ পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে, জানা যায় ২০১৪ সালে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৮ জন, ২০১৫ সালে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯১৭ জন, ২০১৬ সালে ২ লাখ ৯৯৫ জন, ২০১৭ সালে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯১ জন, ২০১৮ সালে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৭০৭ জন এবং ২০১৯ সালে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ১ লাখ ৮৯ হাজার ৮৮৭ জন বিদেশী পর্যটন ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্য মোতাবেক, করোনা মহামারীর সময় ২০২০ সাল নাগাদ বিদেশী এসেছেন ১ লক্ষ ৮১ হাজার ৫১৮ জন এবং ২০২১ সালে বিদেশী নাগরিক এসেছেন ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ১৮৬ জন। মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির কম্পিহেনসিভ প্রাইভেট সেক্টর অ্যাসেসমেন্ট (সিপিএসএ) শীর্ষক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশে পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণের উদ্দেশ্য নিয়ে আসে বিদেশীদের মাত্র ৫ শতাংশ। প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে ভ্রমণে আসা বিদেশী নাগরিকদের সবচেয়ে বড় অংশই আসে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি হিসেবে। যা মোট বিদেশীর ৪০ শতাংশ। এরপরই রয়েছে উন্নয়ন খাতের বিভিন্ন কাজে আসা বিদেশীরা। মোট বিদেশীর মধ্যে এদের হার ২৫ শতাংশ। এছাড়া বেসরকারি খাতে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট ও বিভিন্ন দূতাবাস সংশ্লিষ্টরা রয়েছে ১৫ শতাংশ করে। বিদেশীদের মধ্যে বাকি ৫ শতাংশ বাংলাদেশের আসছে প্রকৃত পর্যটক হিসেবে।

বিদেশী নাগরিকরা সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসা বা অন অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং পরবর্র্তীতে কাজ করার অনুমতি না নিয়ে চাকরিতে যোগ দেন এবং কাজ করতে থাকেন। বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কায় উল্লেখযোগ্য প্রবাসী আয় যায় না, কিন্তু এ দেশে পোশাক খাতে শ্রীলঙ্কার অনেক নাগরিক কাজ করেন। দেশে বিদেশী নাগরিকদের কাজের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) ও এনজিও বিষয়ক ব্যুরো। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১২৮ বিদেশী ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন দেয়। এটি আগের বছরের তুলনায় ৮৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশে বিদেশীরা সাধারণত কাজ করেন, কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, যন্ত্রপাতি পরিচালনা, মাননিয়ন্ত্রণ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনায়, পোশাক খাতের মার্চেন্ডাইজিং ও বায়িং হাউসেও অনেক বিদেশী কাজ করেন। বেপজার তথ্য মতে, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোর কারিগরী ও পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার উচ্চপদগুলোতে বিদেশীরা কাজ করেন। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক পদেও বিদেশী নাগরিকদের নিয়োগ দেয়া হয়।

প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষিতরা কেন আমাদের দেশের শূন্য জায়গাগুলোতে আসছে না? দেশের শিল্পগোষ্ঠীসমূহের তথ্য মোতাবেক, দেশের উচ্চ শিক্ষিতদের ইংরেজি জ্ঞানের অভাব রয়েছে। তারা হাতে কলমে কিছু শেখেন না। সেখানে সাধারণ শিক্ষার পদ ও কারিগরি পদগুলোতে প্রার্থী সংখ্যায় অনেক বেশি পার্থক্য হয়।

বিজ্ঞাপন

আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের সংখ্যা বেশি। কারিগরি বিষয়ে তাদের আগ্রহ কম। কারিগরির মধ্যে আবার উচ্চ শিক্ষায় মেধাবীদের আগ্রহ বেশি। কিন্তু শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, বাংলাদেশে দক্ষ লোক দরকার মধ্যম পর্যায়ের। সেখানে মেধাবীদের যাওয়ার হার কম। উদ্যোক্তারা মনে করেন, দেশে এখন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর সাধারণ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা সীমিত করা দরকার বিপরীতে কারিগরী শিক্ষার দিকে ঝোঁক তৈরি করতে হবে। বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীভুক্ত প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এক সমীক্ষায় দেখা যায়, কোভিড-১৯ এর কারণে দেশের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত ৩৭ শতাংশ মানুষ বেকার হয়েছেন। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ২০ শতাংশ আসে এই অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রায় দুই কোটি নারী পুরুষ এই খাতে কাজ করেন।

পুথিঁগত বিদ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে সিলেবাস থেকে ট্রেনিং সবকিছু। একাডেমিক লেভেলে এবং সিলেবাস মডারেট করা দরকার। দেশে মিড লেভেল ও টপ লেভেলের প্রফেশনালদের বড় ধরণের ঘাটতি রয়েছে। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষিত হয়ে আসা কর্মীরা চাহিদা মেটাতে পারছে না। অনেকে মনে করেন বাংলাদেশের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী সরকারি চাকরি ও বিসিএস এর স্বপ্ন দেখে, অন্যদেশের মানুষেরা সিইও এবং উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নে লেখাপড়া করে, পার্থক্য এই জায়গায়। তাছাড়া দক্ষতার অভাব নয়, অভাব মানসিকতার। ভালো লোকজন প্রাইভেট সেক্টরে আসতে চায় না। কারণ সামাজিক অবস্থা। বিয়ের বাজারে ১ লক্ষ টাকা বেতন পাওয়া ছেলের চেয়ে সরকারি একজন ২০ তম গ্রেডের মূল্য বেশি।

বিশেষ বিশেষ বৃত্তির উপর নির্ভর করে যে, সমাজ অতীতে গড়ে উঠেছিল তার অস্তিত্ব আজকে নেই। সেই জন্য দরকার বৈপ্লবিক পরিবর্তন। কর্মমূখী শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করে নিজে উদ্যোক্তা হতে হবে। বিশ্বের উন্নত দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে তাকালে দেখা যায় যে, তাদের পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে তারা অনেক বেশি কর্মমূখী ও স্বনির্ভর। স্বল্প সময়ে চীন, জাপান, কোরিয়া ও মালয়েশিয়া সহ যে সকল দেশ আজ প্রযুক্তির চরম শীর্ষে তাদের, কারিগরি শিক্ষার গড় মোট শিক্ষিতের হারের শতকরা ৬০ ভাগের ওপরে। যা আমাদের দেশে মাত্র শতকরা ১০ ভাগ। শিল্প বাণিজ্যের প্রসারের ফলে বাংলাদেশের বিদেশী কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশ গত ১ দশকে ৬ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। মোট জিডিপিতে শিল্প খাত, বিশেষ করে উৎপাদন খাতে অবদান বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ধীরে ধীরে কৃষি অর্থনীতি থেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।

আমাদের অর্থনীতি এখন কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। যার ফলে আমাদের কর্মমূখী শিক্ষার গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক হারে বাড়াতে হবে। বর্তমানে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য সরকার ভর্তির বয়সসীমা তুলে দিয়েছে, যা ইতিবাচক। এখন যে কোন বয়সীরা চাইলে কারিগরিতে ডিপ্লোমায় ভর্তি হতে পারবে এবং নতুন করে দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জনশুমারী ও গৃহ গণনা ২০২২ এর ন্যাশনাল রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৩ জন এবং নারী ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন। তবে মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশই তরুণ ও কর্মক্ষম থাকার বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। আরও আশার কথা তা হলো দিনে দিনে বাড়ছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা পৌছাবে ৭০ শতাংশে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার এই অগ্রগতির খবর প্রকাশিত হয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি) প্রতিবেদনে । এতে জনসংখ্যার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, কর্মক্ষম জনশক্তিকে কাজে লাগানোর মতো উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভিন্নধর্মী কাজ কারিগরি দক্ষতা, সৃজনশীল জ্ঞান ও প্রশিক্ষণে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

আমরা চাই, আরও শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হোক আমাদের কারিগরি স্নাতকরা। কলোনিয়াল সময় শুধু আমাদের দাপ্তরিক কাজ করার মানসিকতা তৈরি করে দিয়ে গেছে। আমরা এই মানসিকতা থেকে মুক্ত হতে চাই। নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থেকে ২০২৪ সাল নাগাদ মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে ধাবমান বাংলাদেশ যা, বাস্তবায়ন হবে ২০২৬ সাল নাগাদ।

কোভিড-১৯ পরবর্তী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ পরিস্থিতিতে নতুন বিশ্বের জন্য আমাদের তৈরি হতে হবে। যার ফলে, মানসিকতার বদল, মানসিক সক্ষমতা, দক্ষতামূলক শিক্ষা ও কারিগরি দক্ষতা যে গুলো নতুন অর্থনৈতিক অবস্থার জন্য দরকার বলে আমি মনে করি।

লেখক, অর্থনীতি বিশ্লেষক

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন