বিজ্ঞাপন

উপাচার্যের ‘বিশেষ আগ্রহে’ নিয়োগ, ঠেকাতে মরিয়া শিক্ষক সমিতি

December 17, 2023 | 6:25 pm

চবি করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুই বিভাগে ‘একতরফা’ সিদ্ধান্তে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার। পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে উপাচার্য শিক্ষক নিয়োগে অনড় থাকায় বিরোধের সূত্রপাত হয়। এ অবস্থায় নিয়োগ ঠেকাতে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) আইন বিভাগ এবং পরদিন সোমবার বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনি বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনি বোর্ড বাতিলের দাবিতে উপাচার্যকে চিঠি দেয় শিক্ষক সমিতি। অন্যদিকে বোর্ডে না বসার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা খাতুন ও পরিকল্পনা কমিটির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ।

সম্প্রতি বাংলা বিভাগে ৭ জন ও আইন বিভাগে ২ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই মর্মে দুই বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি থেকে দেওয়া সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আপত্তির মুখে উপাচার্যের একক ক্ষমতাবলে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এ প্রক্রিয়াকে ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ এর লঙ্ঘন বলছে চবি শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা।

জানা গেছে, বাংলা বিভাগের নির্বাচনি বোর্ডে আছে চারজন। এরা হলেন- উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার সাঈদ, বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা খাতুন এবং পরিকল্পনা কমিটির অধ্যাপক ড. মহিবুল আজিজ। নিয়ম অনুযায়ী, বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হতে কমপক্ষে তিনজন সদস্যের উপস্থিতি লাগবে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু তাসলিমা খাতুন ও মহীবুল আজিজ উপাচার্য বরাবরে চিঠি দিয়ে সভায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত জানান। দুই শিক্ষকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘১৮ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে আমাদের দুজনের অংশগ্রহণ করার কথা। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় এরইমধ্যে সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বিতর্কিত নিয়োগ বোর্ডে অংশগ্রহণ করা আমরা সুবিবেচনা প্রসূত হবে বলে মনে করছি না।’

চারজনের সভায় দুজন শিক্ষক না বসার সিদ্ধান্ত জানানোর পর বোর্ড সভা নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

অধ্যাপক ড. মহিবুল আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ নিয়ম অনুযায়ী হচ্ছে না। এটি অধ্যাদেশ পরিপন্থী। এখানে পরিকল্পনা কমিটিকে কোনো প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না, তাই আমরা দুজন সদস্য এই নির্বাচনি বোর্ড সভায় যাচ্ছি না।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে আইন বিভাগের নিয়োগ সংক্রান্ত নির্বাচনী বোর্ড সভাও রোববার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শুরু হয়নি। নির্বাচনি বোর্ড বাতিলের দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছে চবি শিক্ষক সমিতি।

জানা গেছে, রোববার বেলা ১২টায় উপাচার্যের কাছে গিয়ে আইন ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনি বোর্ড (নিয়োগ বোর্ড) বাতিলের দাবিতে উপাচার্যকে চিঠি দেয় চবি শিক্ষক সমিতির নেতারা। এসময় উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির নেতাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উপাচার্য কক্ষ ছেড়ে কনফারেন্স রুমে চলে যান।

উপাচার্যের সঙ্গে কোনো আলোচনা না হওয়ায় বেলা ২টায় নির্বাচন বোর্ড বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষক সমিতি।

জানতে চাইলে চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের দাবি দুটো। একটি হচ্ছে আজ (রোববার) আইন বিভাগের নিয়োগ বোর্ড ও আগামীকালের (সোমবার) বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড বাতিল করতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান করব। আমরা উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। আমি উপাচার্যকে আমাদের দাবি পড়ে শোনালে তিনি প্রতিক্রিয়া দেখান। একপর্যায়ে তিনি উঠে চলে যান। আমরা পরে তার সঙ্গে পরে কথা বলতে চাইলে তিনি আর আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান করব।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন